শনিবার, ২১ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামের ফার্মেসিতে মিলছে না ডেঙ্গুর স্যালাইন

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে ডেঙ্গু চিকিৎসায় ব্যবহৃত ডেক্সাট্রোজ নরমাল স্যালাইন (ডিএনএস) ফার্মেসিগুলোতে মিলছে না। ফলে চিকিৎসকের পরামর্শে রোগীকে বাসায় স্যালাইনটি ব্যবহার করতে হলে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে রোগীর স্বজনদের। বাড়তি দামে সরকারি হাসপাতালের অভ্যন্তরে থাকা ফার্মেসিতে ডিএনএস পাওয়া যাচ্ছে। জানা যায়, ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধির পর ডিএনএসের চাহিদা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায়। এ সময় ফার্মেসিগুলো ১০০ টাকার ডিএনএস ৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করে। এ নিয়ে জেলা প্রশাসন অভিযানও পরিচালনা করে। পরে সরকারি নির্দেশনায় ডিএনএস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ফার্মেসিতে না দিয়ে সরাসরি হাসপাতাল এবং হাসপাতালের অভ্যন্তরে সরবরাহ করছে। দেশে বেসরকারি ছয়টি কোম্পানি ডিএনএস উৎপাদন করে। গতকাল হাজারী গলি ও জামাল খানের একাধিক ফার্মেসি ঘুরে অধিকাংশ ফার্মেসিতেই ডিএনএস নেই বলে জানিয়ে দেয়। কারণ হিসেবে ফার্মেসিগুলো বলছে, এটির গায়ের মূল্য ১০০ টাকা। উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোও আমাদের কাছে ১০০ টাকাই বিক্রি করছে। এখন আমরা ১১০ টাকা বিক্রি করতে গেলে ক্রেতার সঙ্গে ঝগড়া লেগে যায়।

তাই ক্রেতাদের আমরা সরাসরি স্যালাইনটি নেই বলে দিচ্ছি। পাঁচলাইশ ওষুধ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি নুরে আলম সিদ্দিকী বলেন, সরকারি নির্দেশনায় ফার্মেসিতে ডিএনএস সরবরাহ গত দুই মাস ধরে বন্ধ। এখন সরাসরি হাসপাতালের অভ্যন্তরের ফার্মেসিতে দেওয়া হচ্ছে।

যাদের বাসায়  ডিএনএস দরকার হয় তারা হাসপাতালের অভ্যন্তরে নির্দিষ্ট মূল্যে কিনতে পারবেন। ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক এস এম সুলতানুল আরেফীন বলেন, এখন ক্রমান্বয়ে ডেঙ্গুর প্রকোপ কমায় ডিএনএসের চাহিদাও কমছে। তাছাড়া, শীতকালে এ স্যালাইনের চাহিদাও কম। তাই ডিএনএস এখন পাওয়া যাচ্ছে। তবে ফার্মেসিতে এখনো সরবরাহ করা হচ্ছে না বলে সেখানে পাওয়া যাচ্ছে না। এটি হাসপাতালে ভর্তি রোগীকেই বেশি ব্যবহার করা হয়। জানা যায়, ১০০০ মিলিগ্রামের একটি ডিএনএসের খুচরা মূল্য ১০০ টাকা এবং ৫০০ মিলিগ্রামের মূল্য ৬৫ টাকা। কিন্তু এখন অনেক ফার্মেসি একটি ডিএনএস ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করে। ফার্মেসিতে ডিএনএস থাকার পরও বেশি দামে বিক্রির জন্য ক্রেতাকে নেই বলে ফিরিয়ে দিচ্ছে। ফলে বাজারে স্যালাইনটির কৃত্রিম সংকট তৈরি হয়। গত ৩০ সেপ্টেম্বর চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের গেটের সামনের ফার্মেসিগুলোতে জেলা প্রশাসনের কর্মচারীরা ডিএনএস স্যালাইন কিনতে গেলে নেই বলে ফিরে দেয়। কিন্তু একটু পরই জেলা প্রশাসনের অভিযান দল সেখানে গেলে পর্যাপ্ত পরিমাণ ডিএনএস স্যালাইন উদ্ধার করে। এ সময় ডিএনএস স্যালাইনের কৃত্রিম সংকট ও ওষুধের বাজারে নৈরাজ্য সৃষ্টির অপরাধে চারটি ফার্মেসিকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এর আগে গত ২৫ জুলাই নগরের হাজারী গলিতে অভিযান চালিয়ে ১৫০ লিটার ডিএনএস জব্দ করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে নতুন করে আক্রান্ত হয় ৭১ জন। গতকাল পর্যন্ত চলতি বছর মোট আক্রান্ত হয় ১১ হাজার ৬৩৪ জন। এর মধ্যে মহানগরে ৮ হাজার ১১৫ জন এবং উপজেলায় ৩ হাজার ৫১৯ জন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর