সোমবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ইসলামী দলগুলোর বড় পরিকল্পনা

সংসদ নির্বাচনে ১০০ থেকে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি দলগুলোর

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বড় পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে ইসলামভিত্তিক ছোট দলগুলো। কোনো কোনো দল সর্বনিম্ন ১০০ আসন থেকে শুরু করে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে। এরই মধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থীরা এলাকায় গণসংযোগও শুরু করেছেন। ইসলামী দলগুলোর এ পরিকল্পনাকে ‘ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের’ প্রচেষ্টা বলে দাবি করেছে সুশীল সমাজ। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চট্টগ্রামের সম্পাদক আকতার কবির চৌধুরী বলেন, দেশের বর্তমান যে পরিস্থিতি, তাতে মনে হচ্ছে জনসমর্থন থাকা বড় কয়েকটি দল হয়তো নির্বাচনে অংশ না-ও নিতে পারে। তাই এ সুযোগে ছোট দলগুলো নির্বাচন নিয়ে বড় পরিকল্পনা করছে। তাদের এ প্রচেষ্টাকে বলা হচ্ছে, ‘ঘোলা পানিতে মাছ শিকার।’ বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের জাতীয় কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মাওলানা এম এ মতিন বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে। কিছু কিছু এলাকার প্রার্থী চূড়ান্তও করা হয়েছে। এরই মধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থীরা এলাকায় গণসংযোগও করছেন।  ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আমাদের প্রস্তুতি চলছে। শুরা বৈঠকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মিডিয়া সমন্বয়ক মাওলানা শহীদুল ইসলাম কবীর বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে আমাদের। এরই মধ্যে প্রতি আসনে তিনজন করে সারা দেশের প্রায় ১ হাজার জনের একটি খসড়া তালিকা তৈরি করা হয়েছে। আসনভিত্তিক প্রার্থীদের সাক্ষাৎকারও নেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। জানা যায়, বাংলাদেশের রাজনীতির ফ্যাক্টর হয়ে ওঠা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৯ আসনে প্রার্থী দিয়েছিল। এবারও একই প্রস্তুতি রয়েছে কওমি মতাদর্শী অন্যতম বৃহৎ ইসলামিক দলটির। এরই মধ্যে দুই শতাধিক প্রার্থীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নেওয়ার সবুজ সংকেত দিয়েছে। এবার ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে দলটির। একইভাবে কওমি মতাদর্শী আরেক দল ইসলামী ঐক্যজোট দেড় শতাধিক আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ১০০ থেকে ১৫০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে কওমি মতাদর্শী ইসলামিক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, খেলাফত মজলিশ, খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মতো দলগুলো। কওমি মতাদর্শী দলগুলোর মতোই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে সুন্নি মতাদর্শী পীরভিত্তিক ইসলামী দল- বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি। তারাও এক থেকে দেড়শ আসনে প্রার্থী দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে। মহাজোটের শরিক দল তরীকত ফেডারেশন প্রার্থী (সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন) এবং দলটির প্রেসিডেন্ট সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর সঙ্গে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাদের দূরত্ব বাড়লেও আওয়ামী লীগের ব্যানারেই ফের নির্বাচন করবেন এমন দাবি নজিবুল বশরের। এরই মধ্যে কিছু আসনের প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে দলটি। আলোচিত-সমালোচিত হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নেতারা নিজেদের অরাজনৈতিক দাবি করলেও সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির কমপক্ষে দেড় শতাধিক নেতা বিভিন্ন দলের ব্যানারে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এরই মধ্যে তারা এলাকায় গণসংযোগ করছেন। অংশগ্রহণ করছেন সামাজিক এবং দলীয় ব্যানারে নানান অনুষ্ঠানে।

তরীকত ফেডারেশনের এক সিনিয়র নেতা বলেন, তফসিল ঘোষণার পর আমাদের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হবে। কমপক্ষে ৫০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হলেও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন দুই থেকে তিনজন প্রার্থী।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর