মঙ্গলবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা
রাজশাহী শিশু হাসপাতাল

ভবনের দায়িত্ব বুঝে নিচ্ছে না কেউ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

ভবনের দায়িত্ব বুঝে নিচ্ছে না কেউ

চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি উদ্বোধন হলেও রাজশাহী শিশু হাসপাতাল ভবনের দায়িত্ব কেউই বুঝে নিচ্ছে না। ২০০ শয্যার এই বিশেষায়িত হাসপাতাল ভবনটি পড়ে থাকলেও স্থান সংকুলানের অভাবে শিশু রোগী সামলাতে হিমশিম রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল। সেখানে তিনটি ওয়ার্ডে চিকিৎসা চলছে শিশুদের। এক শয্যাতেই রাখা হচ্ছে তিন-চারজনকে। হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের মে মাসে রাজশাহী শিশু হাসপাতালের নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৮ সালের জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। পরে কয়েক দফা মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২২ সালের শেষের দিকে নির্মাণকাজ শেষ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি হাসপাতালটি উদ্বোধন করা হয়। এরপরও কেটে গেছে প্রায় নয় মাস। এখনো কেউই বুঝে নিচ্ছে না। এ বিষয়ে গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হাসপাতাল ভবনটি কোন দফতরের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হবে, সে নির্দেশনা পাচ্ছেন না তারা।

রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ বলেন, ‘আমাদের এখানে শিশু রোগীর অনেক চাপ। আমরা হিমশিম খাই। আলাদাভাবে নতুন পূর্ণাঙ্গ শিশু হাসপাতালটি চালু হলে আমাদের এখানে চাপ কমবে। তখন আমরা অন্য রোগীদের আরও ভালো সেবা দিতে পারব। তাই যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালটি চালু করা দরকার।’

রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগ-২ জানায়, নগরীর বহরমপুর টিবিপুকুর এলাকায় শিশু হাসপাতালের চার তলা ভবনের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে এক বছর আগে। গত ২৯ জানুয়ারি হাসপাতালটি উদ্বোধন করা হয়েছে। হাসপাতালের প্রথম তলায় আছে ১৪ শয্যার জেনারেল অবজারভেশন ইউনিট।

এক্সরে করানোর জন্য দুটি এবং সিটি স্ক্যান ও এমআরআই করানোর জন্য একটি করে কক্ষ আছে সেখানে। স্টোর হিসেবে আছে আটটি কক্ষ। নিচতলায় একসঙ্গে ২০টি গাড়ি পার্ক করারও ব্যবস্থা আছে। দ্বিতীয় তলায় আছে একটি মাইনর ওটি ও চারটি বিশেষায়িত ওটি। এ ছাড়া ১০ শয্যার প্রি ও পোস্ট ওটি এবং ৫৬ শয্যার নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ)। তৃতীয়তলায় চিকিৎসকের জন্য করা হয়েছে ১৮টি কক্ষ। চতুর্থ তলায় আছে ৯৬ শয্যার সাধারণ ওয়ার্ড এবং ১৮টি পেয়িং শয্যা।

হাসপাতাল নির্মাণকাজ তদারকির দায়িত্বে থাকা রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগ-২-এর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম খান বলেন, ‘প্রথম দফার করা রং উঠে যাওয়ায় এক মাস আগে আবার করালাম; কিন্তু হাসপাতাল কেউ বুঝে নিচ্ছেন না। রামেক হাসপাতাল, সিভিল সার্জনের কার্যালয়, নাকি বিভাগীয় স্বাস্থ্য দফতর কে এই হাসপাতাল বুঝে নেবে আমরা তাও জানি না।’

জানতে চাইলে হাসপাতাল বাস্তবায়ন কমিটির সদস্যসচিব রাজশাহীর সিভিল সার্জন আবু সাইদ মো. ফারুক বলেন, ‘হাসপাতাল নির্মাণ শেষ হলে তো আমাদের চিঠি দিয়ে গণপূর্ত জানাবে; কিন্তু এখনো জানায়নি।’ এ বিষয়ে উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম খান বলেন, ‘নির্মাণকাজ চলমান প্রক্রিয়া। হস্তান্তরের আগের দিন পর্যন্ত এটি আমাদের তত্ত্বাবধানে থাকে এবং টুকটাক কাজের প্রয়োজন হতে পারে। সে জন্য চিঠি দিই না। তবে কাজ যে শেষ হয়েছে, সেটা স্বাস্থ্য বিভাগের সংশ্লিষ্ট সবাইকে মৌখিকভাবে বলা হয়েছে।’

বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক আনোয়ারুল কবীর বলেন, ‘হাসপাতালের কাজ শেষ হওয়ার বিষয়টি আমরা জানি। এখন চালু করতে হলে জনবল প্রয়োজন। অন্যান্য মেডিকেল সামগ্রীও দরকার। বিষয়টি কয়েকবার স্বাস্থ্য অধিদফতরকে জানিয়েছি; কিন্তু সেখান থেকে কোনো ধরনের নির্দেশনা আসেনি।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর