বুধবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ইতিহাস, ঐতিহ্য পর্যটন এক ফ্রেমে

একনজর ইন্ডিয়া গেট দেখতে আসেন হাজারো পর্যটক

কাজী শাহেদ, দিল্লি থেকে ফিরে

ইতিহাস, ঐতিহ্য পর্যটন এক ফ্রেমে

ভারতের রাজধানী দিল্লিতে এসে ইন্ডিয়া গেট না দেখলে অনেক কিছু যেন মিস হয়ে যায়। জনপথের চারপাশের সড়কগুলোর নামকরণে আছে ইতিহাসের ছোঁয়া। অরুণ জেটলি স্টেডিয়াম থেকে অটোরিকশায় মাওলানা আবুল কালাম আজাদ রোড হয়ে আকবর রোডে। এরপর হেঁটে হেঁটে ইন্ডিয়া গেটের কাছাকাছি। দিল্লি এসে একবার ইন্ডিয়া গেট না দেখলেই যেন নয়। তখন রাত, কিন্তু ইন্ডিয়া গেটের সামনে গেলে মনে হবে, কেবল সন্ধ্যা নেমেছে। দেশি-বিদেশি নানা বয়সী মানুষের পদচারণে মুখর রাতের ইন্ডিয়া গেট। কলকাতা থেকে স্ত্রী ও কন্যাকে নিয়ে দিল্লি এসেছেন সুদীপ চক্রবর্তী। ইন্ডিয়া গেটের সামনে ছবি তুলতে চান তারা। এ নিয়ে দরদাম চলছে ক্যামেরাম্যানদের সঙ্গে। সুদীপ চক্রবর্তী বললেন, প্রথমবার দিল্লি এসেছেন। সকালে জাদুঘর দেখেছেন। এখন এসেছেন ইন্ডিয়া গেট দেখতে। আগে টিভিতে দেখেছেন। এখন সামনাসামনি দেখছেন। প্রতি পিস ২০ রুপি করে নিলেও এই দম্পতি কয়েকটি ছবি তুললেন ইন্ডিয়া গেটের স্মৃতি ধরে রাখতে। ইন্ডিয়া গেট হচ্ছে ভারতের জাতীয় স্মৃতিসৌধ। এটি ভারতের রাজধানী নতুন দিল্লির কেন্দ্রস্থলে। প্যারিসের আর্ক দে ত্রিম্ফের আদলে ১৯৩১ সালে নির্মিত এই সৌধটির নকশা করেন স্যার এডউইন লুটিয়েনস। ইন্ডিয়া গেটের আগের নাম ছিল ‘অল ইন্ডিয়া ওয়ার মনুমেন্ট’। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ও তৃতীয় ইঙ্গ-আফগান যুদ্ধে নিহত ভারতীয় ৯০ হাজার সেনার স্মৃতি রক্ষার্থে স্মৃতিসৌধটি নির্মিত হয়। ইন্ডিয়া গেট লাল ও সাদা বেলে ও গ্র্যানাইট পাথরে তৈরি। এর চারপাশের রোডগুলোর নাম করা হয় অশোক রোড, আকবর রোড, শাহজাহান রোড, শের খান রোড, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ রোড, ড. জাকির হোসেন রোড। সন্ধ্যার পরে ভারতীয় জাতীয় পতাকার আদলে ইন্ডিয়া গেট রং ধারণ করে। প্রতিদিন কয়েক হাজার দেশি-বিদেশি মানুষের পদচারণে মুখর থাকে ইন্ডিয়া গেট। ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবন, ভারতের সংসদ ভবন, সুপ্রিম কোর্ট, কেন্দ্রীয় সচিবালয়, গান্ধী মিউজিয়াম, পুরান কিল্লা, তাজমহল হোটেলসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা আছে ইন্ডিয়া গেটের আশপাশেই।

 পঞ্চম জর্জের একটি ভাস্কর্য ইন্ডিয়া গেটের ছাউনির নিচে ছিল। ভাস্কর্যটি অন্যান্য ভাস্কর্যের সঙ্গে দিল্লির করোনেশন পার্কে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ইন্ডিয়া গেটে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ‘নাম না জানা সৈনিকদের সমাধি’ হিসেবে পরিচিত ‘অমর জওয়ান জ্যোতি’ স্থাপিত হয়েছে। অমর জওয়ান জ্যোতি (বাংলা-অমর সৈনিক শিখা বা আলো) একটি ভারতীয় স্মৃতিসৌধ। স্মৃতিস্তম্ভটি ১৯৭১ সালের পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধের পরে নির্মিত হয়েছে।

ইন্ডিয়া গেটের সামনে ভারতের নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়। গ্রানাইট পাথরে খোদাই করে এ ভাস্কর্য তৈরি করা হয়েছে। নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর ভাস্কর্যের উচ্চতা প্রায় ২৮ ফুট এবং ওজন প্রায় ৬৫ মেট্রিক টন। যে ছাতার নিচে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়, সেখানে ব্রিটেনের রাজা পঞ্চম জর্জের মার্বেল পাথরের ভাস্কর্য ছিল। মহীশূরের ভাস্কর অরুণ যোগীরাজ নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ভাস্কর্য খোদাইয়ের কাজ শেষ করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর