বুধবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

৮ কিলোমিটারের ব্যবধানে সবজির দাম কেজিতে বাড়ে ২৫ টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীর পবা উপজেলার খড়খড়ি বাজারটি (হাট) কাঁচা সবজির জন্য বিখ্যাত। রাজশাহীর নয়টি উপজেলার মধ্যে পবায় সবচেয়ে বেশি সবজি উৎপাদন হয়। এর সিংহভাগ বিক্রি হয় এ বাজারে। এ বাজার থেকে রাজশাহী শহরের দূরত্ব মাত্র ৮ কিলোমিটার। এখান থেকে প্রতিদিন সকালে বিক্রেতারা সবজি নিয়ে রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন বাজারে গিয়ে খুচরা বিক্রি করেন। এ ছাড়া এ বাজারের সবজি ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে যায়। সেই সবজি রাজশাহী শহরে মাত্র এক হাত ঘুরেই কেজিতে দাম বাড়ছে ১০ থেকে ২৫ টাকা। পবার খড়খড়ি পাইকারি বাজার ঘুরে কৃষক ও পাইকারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি মণ পটোল এখানে পাইকারি বিক্রি হয় ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা। সেই পটোল রাজশাহী শহরে বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৬৫-৭০ টাকা দরে। অর্থাৎ কেজিতে ২০-২৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি হয়েছে। ১ মণ করলা বিক্রি হয়েছে ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকা মণ। সে হিসেবে ১ কেজি করলার দাম পড়ে ৭৫-৮০ টাকা। কিন্তু সেটিই রাজশাহী শহরে বিক্রি হয়েছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায়। আবার বরবটি বিক্রি হয়েছে প্রতি মণ ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা দরে। সে হিসেবে প্রতি কেজি বরবটিতে কৃষক পেয়েছেন সর্বোচ্চ ৬২ টাকা। কিন্তু সেটিই রাজশাহী শহরে বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা দরে। এদিকে রাজশাহী শহর থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরে পবার বিদিরপুর বাজারেও পাইকারি দরে মণে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেশিতে সবজি বিক্রি হয়েছে।

কিন্তু সেই সবজি কিনে রাজশাহীর বাজারে খুচরা ব্যবসায়ীরা বিক্রি করেছেন কেজিতে ১৫-২০ টাকা বেশিতে। এ হাটের কৃষক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা জমিতে ফসল ফলাই। দাম পাই আর না পাই হাটে আসি। সবজি বিক্রি করতেই হবে। এখন একটু দাম পাচ্ছি। পটোল বিক্রি করে কিছুটা লাভ হচ্ছে। তার পরে সার-বীজের যে দাম, সবজি চাষ করে এখন তেমন লাভ হয় না। যখন দাম পাব না, তখন ক্ষতি হবে। তাও ফসল তো আমাদের করতেই হবে।’

আরেকজন কৃষক নাজমুল হোসেন বলেন, ‘এবার শেষের দিকে এসে ভারী বৃষ্টিতে অনেক সবজি ডুবে গেছে। অনেক কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এ কারণে সবজি এবার শীতে অনেক কম হচ্ছে। ফলে দাম বেশি পেলেও কৃষক খুব একটা লাভবান হচ্ছে না। তার পরও আমার কাছ থেকে সবজি কিনে শহরে কেজিতে কমপক্ষে ২০ টাকা লাভ করে বিক্রি করা হয়।’

রাজশাহীর তেরোখাদিয়া বাজারের সবজি বিক্রেতা কেরামত আলী বলেন, ‘আমি প্রতিদিন প্রায় ২০০ কেজি সবজি বিক্রি করি। ভোরে উঠে বাজার থেকে সবজি কিনে নিয়ে এসে সারা দিনে বিক্রি করি। কখনো কখনো বিক্রি হয় না, থেকে যায়। পর দিন বিক্রি করতে গেলে দাম কম পাওয়া যায় বা কিছু নষ্ট হয়ে যায়। এর পরে আছে গাড়ি ভাড়া, দোকানের খাজনা। তাই প্রতি কেজি সবজি বিক্রি করে অন্তত ১০ টাকা লাভ না থাকলে আমার সংসার চলবে না। ২০০ কেজি সবজি বিক্রি করে গড়ে ১০ টাকা করে লাভ থাকলে দিন শেষে হাজার-বারো শ টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারি।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর