বৃহস্পতিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

চিড়িয়াখানায় প্রাণীকে উত্ত্যক্ত করলে জরিমানা

দুগ্ধজাত পণ্যের মান নিশ্চিত ও পুলিশ কল্যাণ তহবিল বিল সংসদে

নিজস্ব প্রতিবেদক

চিড়িয়াখানায় গিয়ে কোনো দর্শনার্থী প্রাণীদের উত্ত্যক্ত করলে জরিমানা হিসেবে তার কাছ থেকে ২ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ আদায় করার বিধান রেখে সংসদে চিড়িয়াখানা বিল ২০২৩ পাস হয়েছে। পাশাপাশি চিড়িয়াখানার কোনো প্রাণীকে জখম করলে বা অনুমতি ছাড়া খাবার দিলে এই আইনে ২ মাসের জেল ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। গতকাল জাতীয় সংসদের অধিবেশনে চিড়িয়াখানা বিল ২০২৩ পাসের জন্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম প্রস্তাব করলে বিলটি কণ্ঠ ভোটে পাস হয়। এর আগে বিলের ওপর আনা জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠানো ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি করা হয়। বিল পাসের আগে যাচাই-বাছাই প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, চিড়িয়াখানায় নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ আছে। প্রাণীর খাবারের জন্য যে বরাদ্দ দেওয়া হয় তা লুটপাট হয়ে যায়। চিড়িয়াখানায় নানা অব্যবস্থাপনা আছে। বিলটি আইনে পরিণত হওয়ার পর দেশের সরকারি সব চিড়িয়াখানা এ আইনে পরিচালিত হবে। বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা উপদেষ্টা কমিটির মাধ্যমে পরিচালিত হয়। প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, কোনো দর্শনার্থী ফি ছাড়া চিড়িয়াখানায় প্রবেশ করলে তার কাছ থেকে প্রবেশ ফির সমপরিমাণ মূল্য আদায় করা হবে। মাত্রা বিবেচনা করে ২ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ আদায় করা যাবে। কোনো দর্শনার্থী চিড়িয়াখানায় কোনো প্রাণীকে উত্ত্যক্ত করলে তার কাছ থেকে ২ হাজার টাকা প্রশাসনিক ক্ষতিপূরণ আদায় করা যাবে। এই আইনে আরও বলা হয়েছে কোনো দর্শনার্থী চিড়িয়াখানার কোনো প্রাণীকে কোনোভাবে আঘাত বা জখম করলে বা কিউরেটরের নির্দেশনা অমান্য করে বা অনুমতি ছাড়া খাবার দিলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে। এ জন্য ২ মাস বিনাশ্রম কারাদন্ড বা ৫ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ড দেওয়া হবে। এদিকে সুষম খাদ্য হিসেবে দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি, মান নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণে বোর্ড প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশ ডেইরি উন্নয়ন বোর্ড বিল ২০২৩ পাস হয়েছে। নিরাপদ খাদ্য হিসেবে দুধ বা দুগ্ধজাত পণ্যের মান নিশ্চিত করতে এ বিলটি পাস করা হয়। গতকাল জাতীয় সংসদে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বিলটি পাসের জন্য সংসদে প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে বিলের ওপর আনা জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে পাঠানো ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি করা হয়।

এ বিলে বলা হয়েছে, এই আইন পাস ও কার্যকর হওয়ার পর সরকার গেজেট প্রজ্ঞাপন জারি করে বাংলাদেশ ডেইরি উন্নয়ন বোর্ড নামে একটি বোর্ড গঠন করবে।

এদিকে বাংলাদেশ পুলিশ (অধস্তন কর্মচারী) কল্যাণ তহবিল বিল জাতীয় সংসদে তোলা হয়েছে। গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বিলটি তোলার পর তা পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। ১৯৮৬ সালে সামরিক আমলে করা দ্য পুলিশ (নন-গেজেটেড এমপ্লয়িজ) ওয়েলফেয়ার ফান্ড অর্ডিন্যান্স রহিত করে নতুন এই আইনটি করা হচ্ছে।

বিলে বলা হয়েছে, কর্মচারী বলতে সাব-ইন্সপেক্টরের নিচের পদমর্যাদার কোনো পুলিশ এবং পুলিশ অধিদফতরে কর্মরত পুলিশ নন এমন সব কর্মচারীকে বুঝাবে।

বিলে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ পুলিশ (অধস্তন কর্মচারী) কল্যাণ তহবিল ব্যবস্থাপনা বোর্ড নামে একটি বোর্ড থাকবে। পদাধিকার বলে পুলিশের মহাপরিদর্শক এই বোর্ডের চেয়ারম্যান হবেন। তহবিল থেকে কর্মচারী ও তাদের পরিবারকে কল্যাণ অনুদান মঞ্জুর করবে বোর্ড।

কর্মচারীদের দেওয়া চাঁদা, সরকারি অনুদান, তহবিলের অর্থ বিনিয়োগ থেকে পাওয়া মুনাফা এবং অন্য কোনো বৈধ উৎস থেকে পাওয়া টাকায় তহবিল গঠন করা হবে। প্রত্যেক কর্মচারীর বেতন থেকে মাসিক চাঁদা হিসেবে সরকার নির্ধারিত পরিমাণ টাকা কেটে তা তহবিলে জমা করবে।

সর্বশেষ খবর