শুক্রবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শৃঙ্খলা ভঙ্গ

স্থায়ী বহিষ্কার তিন, ছাত্রলীগ নেতাসহ ১৬ শিক্ষার্থীর শাস্তি

রাবি প্রতিনিধি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধে তিনজনকে স্থায়ী বহিষ্কারসহ ১৬ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫২৫তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। গতকাল তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডে। তিনি বলেন, শৃঙ্খলা কমিটির সুপারিশে সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। সভার তথ্যমতে, শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার অপরাধে আইন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী আশিকুল্লাহ, একই বিভাগের সান্ধ্যকোর্সের শিক্ষার্থী আরিফ হোসেন এবং ভর্তি জালিয়াতি করে ভর্তির অপরাধে পপুলেশন সায়েন্সের আহসান হাবীবকে স্থায়ী বহিষ্কার এবং আন্তবিভাগ টুর্নামেন্ট চলাকালে শিক্ষক ও আম্পায়ারকে লাঞ্ছিত করার অপরাধে গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী সানজিদ হাসান আরিফ ও হাফিজুর রহমান এবং ব্যবসায় ইনস্টিটিউটের আবু সিনহাকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। সিনহা ব্যবসায় ইনস্টিটিউট শাখা ছাত্রলীগের নেতা। ভর্তি জালিয়াতি ও সহায়তার অভিযোগে শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহসম্পাদক হাসিবুল ইসলাম শান্ত, শেরেবাংলা হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ ও ছাত্রলীগ কর্মী শারীরিক শিক্ষা ও খেলাধুলা বিজ্ঞান বিভাগের শাখাওয়ান হোসেন ও লোক প্রশাসনের মাহিবুল মবিন সনেটসহ ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী ইয়াছির আরাফাত, ফোকলোর বিভাগের নজরুল ইসলাম, ফিশারিজ বিভাগের আলিফ হোসেন সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

তাদের বিরুদ্ধে মামলা চলমান। রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া শিক্ষার্থী মারধরের অপরাধে ফাইন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী মাহফুজুর রহমান রিফাতের আবাসিকতা বাতিল এবং র‌্যাগিংয়ের অপরাধে ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের পাঁচ শিক্ষার্থী এবং অন্যান্য অপরাধে আরও সাত শিক্ষার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ও সতর্ক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, প্রশাসনের এমন পদক্ষেপ প্রশংসনীয়। এতে ক্যাম্পাসে অপরাধ প্রবণতা কমবে এবং অপরাধীরা শাস্তির আওতায় আসবে। তবে কিছু অভিযোগের প্রমাণ পেলেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তি লক্ষ্যণীয় হয়নি। এতে অপরাধ বাড়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। এক্ষেত্রে সুষ্ঠু তদন্ত ও যেকোনো অপরাধের যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত একান্ত কাম্য বলে মনে করেন তিনি।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী হলে কৃষ্ণ রায়কে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাইম আলীর বিরুদ্ধে। এ অভিযোগের তদন্ত করলে প্রমাণ পায় হল প্রশাসন। এ ছাড়া শাখা ছাত্রলীগ নেতা ভাস্কর শাহার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী নির্যাতন ও চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠে। তবে এ নেতাদের লঘু দণ্ডের সিদ্ধান্ত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ে সমালোচনা চলছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির সদস্য সচিব ও প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক জানান, তদন্ত প্রতিবেদন যাচাই-বাছাই করেই শৃঙ্খলা কমিটি এ সুপারিশ করেছে। এ ছাড়া অভিযোগকারী ভাস্কর শাহার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে নিয়েছে। অন্যজনের বিষয়েও সব সদস্যের মতামতের ভিত্তিতেই সুপারিশ করা হয়েছে।

 

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর