সোমবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় বাড়তি নজরদারি

রাজনৈতিক কর্মসূচি তফসিল ও নির্বাচন ঘিরে আগাম উদ্যোগ

ওয়াজেদ হীরা

নভেম্বরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে। এর আগেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি। এ অবস্থায় দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, উন্নয়ন প্রকল্প ঘিরে নিরাপত্তা জোরদার করাসহ নজরদারি বাড়িয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সাদা পোশাকে বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা টহল। কেপিআইভুক্ত (গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় স্থাপনা) এলাকায় প্রবেশাধিকার সংরক্ষণ ও পাহারা নিয়েও থাকছে বাড়তি সতর্কতা। সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। নির্বাচনের আগে এসব স্থাপনায় যেন কোনো চক্র নাশকতা করতে না পারে সে জন্যই নিরাপত্তার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, রাষ্ট্রের জানমাল রক্ষা করা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্ব। সব কর্মকর্তারা নিজ কর্মক্ষেত্রের আওতায় সতর্কতা অবলম্বন করছেন। রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা নিয়ে একটু বেশি সতর্ক হচ্ছেন। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে নাশকতার সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য না থাকলেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশের সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে। সুযোগসন্ধানীরা যাতে কোনো ধরনের অপতৎপরতা চালাতে না পারে সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা গ্রহণ করা হবে। সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় সবসময় এক ধরনের নিরাপত্তা থাকে। নির্বাচনের আগে নিরাপত্তা আরও বাড়ানো হবে বলে জানা গেছে। সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ঘিরে গতকাল সতর্ক অবস্থান ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। গতকাল হরতারের মধ্যেও সে সতকর্তা আরও জোরদার দেখা গেছে। কঠোর নিরাপত্তা ছিল প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয় ঘিরেও। সচিবালয় নিরাপত্তা শাখার উপ-পুলিশ কমিশনার মোমতাজুল এহসান আহম্মেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, সচিবালয় সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, সমাবেশের দিন নিরাপত্তাব্যবস্থা আরও বাড়ানো হয়েছিল। সচিবালয়ের নিরাপত্তায় এপিবিএনসহ ২ শতাধিক সদস্যের একটা নিরাপত্তা বলয় সবসময় থাকে। আমাদের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই, নিরাপত্তাব্যবস্থা ভালো আছে। জানা গেছে, ২৮ অক্টোবর সমাবেশে এসে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ, জ্বালাও-পোড়াও ঘটনার পর সামনের যে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে নতুনভাবে চিন্তা করছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা। ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (অপারেশনস) বিপ্লব কুমার সরকার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, কেপিআইভুক্ত এলাকাসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও ব্যক্তির নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। নজরদারি বাড়ানোসহ নিরাপত্তায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও এলিট ফোর্স র‌্যাব এনিয়ে কাজ করছে বলে জানা গেছে। র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক এএসপি আ ন ম ইমরান খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সরকারি ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা নিয়ে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এসব স্থপনা আমাদের টহল টিমও পর্যবেক্ষণে রেখেছে। গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির নেতা-কর্মী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনার পর রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল, পুলিশ বক্স, বিভিন্ন গাড়িতে আগুন দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটে। এক পুলিশ কনস্টেবল নিহত হন।  এ ধরনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার ও ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ বলেছেন, বিএনপি নেতা-কর্মীরা সরকারি স্থাপনায় হামলা করেছেন। বিএনপি শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অনুমতি নিয়ে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা চালিয়েছে, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে। পুলিশ হাসপাতাল এবং রাষ্ট্রীয় অনেক ভবনে হামলা চালিয়েছে। পুলিশ জনগণের জানমাল রক্ষার জন্য পাল্টা অ্যাকশনে গেছে।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর