সোমবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা
সেমিনারে বক্তারা

স্ট্রোক পরবর্তী প্রতি মিনিটে ব্রেনের ১.৯ মিলিয়ন কোষ মারা যায়

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

কেউ স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে এক মুহূর্তও দেরি না করে দ্রুত সরকারি হাসপাতাল কিংবা স্ট্রোক সেন্টারে নিয়ে যেতে হবে। কারণ স্ট্রোক পরবর্তী প্রতি মিনিটে ব্রেনের ১ দশমিক ৯ মিলিয়ন কোষ মারা যায়। এতে মস্তিষ্কের স্থায়ী ক্ষতি হয়। গতকাল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে বিশ্ব স্ট্রোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত বৈজ্ঞানিক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। চমেকের শহীদ শাহ্ আলম বীর উত্তম মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চমেক হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. হাসানুজ্জামান। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ‘এক সাথে আমরা স্ট্রোকের চেয়ে বড়’। পরে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা চমেক হাসপাতালের আশপাশের এলাকা প্রদক্ষিণ করে। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান। হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. আবদুস সাত্তারের সভাপতিত্বে ও সহকারী অধ্যাপক ডা. জাহেদুল ইসলামের সঞ্চালনায় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. অং সুই প্রু মারমা ও নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. শিউলি মজুমদার। অনুষ্ঠানে ‘আজকের সচেতনতা, আগামী দিনের প্রতিরোধ’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডা. রুশমিলা ফেরদৌস। উপস্থিত ছিলেন চমেকের নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. পঞ্চানন দাশ, সহযোগী অধ্যাপক ডা. মুহিতুল ইসলাম, ডা. মাহবুবুল আলম খন্দকার, ডা. মো. সালাউদ্দিন, ডা. মসিহুজ্জামান আলফা, সহকারী অধ্যাপক ডা. জামান আহম্মদ, ডা. আনোয়ারুল কিবরিয়া, ডা. একরামুল আজম শাহেদ, নিউরোলজি বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. সীমান্ত ওয়াদ্দাদার, রেজিস্ট্রার ডা. পীযুষ মজুমদার, আইএমও ডা. অমিত দে, ডা. হামিদ হাসান, ডা. মো. আবদুল্লাহ জোবায়ের, ডা. এস এম শওকত আলী, ডা. অদিতি দাশ, ডা. মো. আবদুল বাসেত হাসান ও ডা. কানিজ ফাতেমা রুদবা।

বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধে অধ্যাপক ডা. মো. হাসানুজ্জামান বলেন, অনেকে মনে করেন, স্ট্রোকের কোনো চিকিৎসা নেই, এটি আসলে ভুল ধারণা। স্ট্রোকের চিকিৎসা যত আগে শুরু করা যায়, রোগীরা তত বেশি উপকৃত হবে। বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলে অদূর ভবিষ্যতে স্ট্রোক রোগী কমবে না, বরং বাড়বে। তিনি বলেন, পুরো বিশ্বে প্রতি দুই সেকেন্ডে একজন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়। প্রতি ছয় সেকেন্ডে একজন রোগী মারা যায়। স্ট্রোক রোগীর পুনর্বাসন প্রক্রিয়া নিয়েও ভাবতে হবে। কারণ স্ট্রোকের চিকিৎসা খুবই দীর্ঘমেয়াদি। বর্তমানে হাসপাতালের নিউরোলজি ওয়ার্ডে আধুনিক চিকিৎসা শুরু হয়েছে। স্ট্রোকের লক্ষণ শুরু হওয়ার তিন ঘণ্টার মধ্যে ওয়ার্ডে আসলে থ্রম্বোলাইটিক থেরাপির মাধ্যমে স্ট্রোক সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব। ইতোমধ্যে আটজন রোগীকে আইভি থ্রম্বোলাইসিস দেওয়া হয়েছে। যা শতভাগ সফল হয়েছে। রোগীরা সুস্থ জীবনযাপন করছেন।

চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান বলেন, চমেক হাসপাতালের নিউরোলজি ওয়ার্ডের চিকিৎসা আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে। এখানে আইভি থ্রম্বোলাইসিস পদ্ধতির জন্য ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়। গরিব রোগীদের পক্ষে এই পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা খুব কঠিন। আমি এক্ষেত্রে রোগী কল্যাণ সমিতির কাছ থেকে গরিব রোগীদের জন্য চিকিৎসা ব্যয়ভার বহনের উদ্যোগ গ্রহণ করব।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর