শিরোনাম
সোমবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

অচল ফোয়ারায় জনদুর্ভোগ

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

অচল ফোয়ারায় জনদুর্ভোগ

সিলেট নগরীর সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য বিভিন্ন স্থানে ফোয়ারা নির্মাণ করেছিল সিটি করপোরেশন। কিন্তু পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে অচল রয়েছে ফোয়ারাগুলো। ময়লা-আবর্জনা ও পানি জমে ফোয়ারাগুলো এখন ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। এতে নগরীর সৌন্দর্য বাড়ার পরিবর্তে ফোয়ারাগুলো জনদুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সিলেটকে বলা হয় আধ্যাত্মিক রাজধানী। ওলি আউলিয়া ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের টানে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সিলেটে ছুটে আসেন হাজারো পর্যটক। তাই নগরীর সৌন্দর্যবর্ধনের লক্ষ্যে প্রায় এক দশক আগে সিলেট নগরীর নাইওরপুল, শাহী ঈদগাহ, হুমায়ূন রশিদ চত্বর, বন্দরবাজার হকার পয়েন্ট ও সার্কিট হাউসের সামনেসহ কয়েকটি স্থানে দৃষ্টিনন্দন ফোয়ারা নির্মাণ করা হয়। শুরুতে ফোয়ারাগুলো নিয়মিত চালু করা হতো। কিন্তু ধীরে ধীরে সেগুলো বিকল হতে থাকে। কয়েকবার মেরামত করে ফোয়ারাগুলো সচল করা হলেও একপর্যায়ে সিটি করপোরেশন হাল ছেড়ে দেয়। সরেজমিন দেখা গেছে, ফোয়ারাগুলোতে বৃষ্টির পানি জমে মশার প্রজনন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। ময়লা-আবর্জনায়ও ভরে আছে কোনো কোনো ফোয়ারা। আশপাশের লোকজন ডাস্টবিনের মতো ব্যবহার করছেন ফোয়ারাগুলো। ফোয়ারার ভিতর জমে থাকা আবর্জনা থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, কয়েকটি ফোয়ারার মোটর বিকল ও কয়েকটি চুরি হয়ে গেছে।  ফোয়ারাগুলো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যে জনবলের প্রয়োজন সেটি নেই সিটি করপোরেশনের। তাই রাতের আঁধারে চুরি হয়ে যায় ফোয়ারার মোটরসহ আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র। কয়েকবার মেরামতের পর এখন হাল ছেড়ে দিয়েছে সিটি করপোরেশন। প্রতিদিন নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে ময়লা আবর্জনা সংগ্রহ করেন সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা। কিন্তু ফোয়ারার চারপাশে স্টিলের রেলিং থাকায় ভিতর থেকে ময়লা আবর্জনা সংগ্রহ করতে পারেন না তারা। এ ছাড়া ফোয়ারার বেদিতে পানি জমে থাকলেও সেটা নিষ্কাশনের সুযোগ নেই। যে কারণে মশার প্রজনন ও ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে ফোয়ারাগুলো। কোনো কোনো ফোয়ারার স্টিলের রেলিংও চুরি হয়ে গেছে বলে জানা গেছে। সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল শাখা সূত্রে জানা গেছে, ২০০৩ সালের ২৩ জুন হুমায়ূন রশীদ চত্বরের ফোয়ারাটি উদ্বোধন করেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান। এরপর ফোয়ারাটি নষ্ট হলে দুই দফা মেরামত করা হয়। এখন অন্তত ১০ বছর ধরে ফোয়ারাটি বিকল। একইভাবে ২০০৪ সালে নির্মিত সার্কিট হাউসের সামনের ফোয়ারাটিও কয়েক দফা সংস্কার করা হলেও গত আট বছর ধরে এটি বিকল হয়ে পড়ে আছে। ২০১৭ সালের ৮ জুলাই তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত নাইওরপুল ফোয়ারাটির উদ্বোধন করেন। এটিও গত কয়েক বছর ধরে বিকল হয়ে আছে। সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান জানান, ফোয়ারাগুলো বিকল হওয়ার পর কয়েক দফা সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ সংস্কার করে চালু করেছে। কিন্তু কিছুদিন পর দেখা যায়, চোরেরা রাতের অন্ধকারে ফোয়ারার অনেক যন্ত্রাংশ খুলে নিয়ে যাচ্ছে। তাই ফোয়ারাগুলো সংস্কার করা হচ্ছে না। এ বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের কোষাধ্যক্ষ ছামির মাহমুদ বলেন, ফোয়ারাগুলো সচল থাকলে নগরের সৌন্দর্য অনেকটাই বেড়ে যেত। তাই নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করে ফোয়ারাগুলো পুনরায় চালু করা যায় কি না, সেটা সিটি করপোরেশন ভেবে দেখতে পারে। এ ছাড়া মশার উপদ্রব থেকে স্থানীয় লোকজনের কিছুটা হলেও শান্তি দিতে পরিত্যক্ত ফোয়ারাগুলো সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা উচিত।

 

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর