বৃহস্পতিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে বৈদেশিক বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে গতকাল সংসদে বলেছেন, অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহারের পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য অনেক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সরকারি দলের সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন খানের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। অধিবেশেনের শুরুতে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী দিনের কার্যক্রমের শুরুতে প্রধানমন্ত্রীর নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্ব টেবিলে উপস্থাপন করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে দেশে পাঁচটি বিনিয়োগ উন্নয়ন সংস্থা গঠন করা হয়েছে। এগুলো হলো- বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা), বাংলাদেশ ইকোনমিক জোন অথরিটি (বেজা), বাংলাদেশ ইকোনমিক প্রসেসিং জোন অথরিটি (বেপজা), বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথরিটি (এইচটিপিএ) এবং পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ অথরিটি (পিপিপিএ)। তিনি বলেন, বিনিয়োগের সুবিধার্থে বিনিয়োগ উন্নয়ন সংস্থাগুলোয় ওয়ান স্টপ পরিষেবা চালু করা হয়েছে, বিনিয়োগ পরিষেবা প্রদানকারী সব অফিস সম্পূর্ণ অনলাইন এবং ডিজিটালাইজড করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, অনুমোদন প্রক্রিয়া, পরিষেবা সরবরাহের সময়কাল এবং সব বিনিয়োগ পরিষেবা প্রদানকারীদের লাইসেন্স, রেয়াত ও পারমিটের জন্য প্রয়োজনীয় নথিপত্রের সংখ্যা যুক্তিসঙ্গত হারে হ্রাস করার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া সরকার বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন আর্থিক ও অ-আর্থিক প্রণোদনা দিচ্ছে বলেও তিনি জানান।

প্রধানমন্ত্রী আরও উল্লেখ করেছেন, বিডায় নিবন্ধিত শিল্প প্রকল্পগুলো আমদানি শুল্ক ছাড় এবং প্রণোদনা ভোগ করে। অন্যদিকে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে বিডা মেলা, সেমিনার, রোড শো ও সামিটের আয়োজন করে। এগুলোর মধ্যে কমনওয়েলথ বিজনেস সামিট ২০২৩, বিডা-এফবিসিসিআই বিজনেস সামিট ২০২৩, বিটিটিবি বিজনেস সামিট ২০২২, উইমেন বিজনেস সামিট ২০২২ এবং ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২১ উল্লেখযোগ্য।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতীয় শিল্পনীতি-২০২২-এ ১৫টি শিল্পকে রপ্তানি বহুমুখীকরণ শিল্প হিসেবে, ১৮টি বিশেষ উন্নয়ন শিল্প হিসেবে এবং ১৭টি শিল্পকে অগ্রাধিকার শিল্প হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, অগ্রাধিকার খাতে বিশেষ প্রণোদনা এবং আর্থিক সহায়তা যেমন শুল্ক/কর অব্যাহতি, দ্বৈত কর থেকে অব্যাহতি, বিদ্যমান আয়কর আইন, শুল্ক আইন ও মূল্য সংযোজন কর আইন অনুসারে হ্রাসকৃত হারে কর আরোপ বিবেচনা করা হবে। একই ধরনের সুযোগের ক্ষেত্রে তিনি বলেন, রপ্তানি বহুমুখীকরণ শিল্প খাতকে বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, সরকার আমদানি বিকল্প পণ্য উৎপাদনে বিশেষ প্রণোদনা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের লক্ষ্যে জাতীয় শিল্পনীতি ২০২২-এ সরবরাহ খাত, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব সংশ্লিষ্ট খাত এবং পর্যটন শিল্পকে শিল্প হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ব্লু-ইকোনমি খাতে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হচ্ছে। এ ছাড়া লজিস্টিক শিল্পে বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং এ খাতের উন্নয়নের মাধ্যমে অন্যান্য শিল্প খাতের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে জাতীয় লজিস্টিকস ডেভেলপমেন্ট পলিসি প্রণয়ন করা হচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের ইজ অব ডুয়িং বিজনেস কর্মসূচি স্থগিত করার পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা বলেন, বিনিয়োগ ও ব্যবসায় সুগম কার্যক্রম চালু রাখতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১১০টি সংস্কার বাস্তবায়িত হচ্ছে এবং বিডা কর্মসূচি বাস্তবায়ন কার্যক্রম সমন্বয় করছে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে বিনিয়োগ উন্নয়ন সংস্থাগুলো একক ও যৌথভাবে দেশ-বিদেশে সেমিনার ও কর্মশালার আয়োজন করছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর