শুক্রবার, ৩ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

আবার কিশোর গ্যাং আতঙ্ক

ভয়ংকর রাতের রাজশাহী, হচ্ছে ছিনতাই

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

আবার কিশোর গ্যাং আতঙ্ক

রাজশাহী মহানগরীতে আবারও তৎপর হয়ে উঠেছে কিশোর গ্যাং। হত্যাকাণ্ড, সন্ত্রাসী হামলা, চাঁদাবাজি, মাদক বিক্রি ও মাদক গ্রহণ ছাড়াও তারা চুরি-ছিনতাইয়ের মতো অপরাধে জড়াচ্ছে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের উত্ত্যক্ত ও যৌন হয়রানি করছে। বছরদুয়েক আগে মহানগরীতে ৫ শতাধিক কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যের ডাটাবেজ তৈরি করেছিল মহানগর পুলিশ। কিন্তু পুলিশের নজরদারির অভাবে এলাকাভিত্তিক গড়ে ওঠা বিভিন্ন কিশোর গ্যাং আবারও দাপিয়ে বেড়াচ্ছে নগরী। নতুন নতুন গ্রুপও তৈরি হচ্ছে। ছিনতাই ও ছুরিকাঘাত যেন নিত্যদিনের ঘটনা। কিশোর ছিনতাইকারীদের কারণে ভোর বা গভীর রাতের রাজশাহী আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। এতে নগরবাসীর মধ্যে তৈরি হয়েছে নতুন আতঙ্ক। ভুক্তভোগী নগরবাসীর অভিযোগ, রাজশাহী মহানগরীর পাড়া-মহল্লায় কিশোর গ্যাং ভয়ংকর হয়ে উঠছে। সন্ধ্যা হলেই এসব কিশোর দলবেঁধে মোটরসাইকেল বহর নিয়ে সড়কে নামে। পথচারী নারীদের শাড়ি ওড়না ধরে অহরহ টান দেয়। সুযোগ পেলে ছিনতাইও করে। শুধু তাই নয়, প্রতিটি গ্রুপের হাতে আছে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র। সম্প্রতি নগরীর শাহ মখদুম থানার গাংপাড়া এলাকায় প্রতিপক্ষের আরাফাত নামে এক কিশোরের ওপর হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করে অস্ত্র উঁচিয়ে নৃত্য করে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, বাদ্যের তালে তালে চাইনিজ কুড়াল, ধারালো ছুরি, রামদা ও অন্য দেশি অস্ত্র নিয়ে কিছু কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা নৃত্য করছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে ও পাড়া-মহল্লায় নানা নামে গড়ে উঠেছে কিশোর গ্যাং গ্রুপ। তাদের একটি গ্রুপ টেন স্টার বয় নামে পরিচিত। এ বছরের ২ মে চন্দ্রিমা থানার ছোট বনগ্রাম পশ্চিমপাড়া এলাকায় এ গ্রুপের হামলায় চার যুবক গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় আসাম কলোনি রবের মোড় এলাকার প্রেম (২০), শিশির (১৮), বাবু (১৯) ও ইমনের (২১) বিরুদ্ধে চন্দ্রিমা থানায় অভিযোগ করেন সিয়াম। স্থানীয়রা জানায়, কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা এলাকায় ডাব চুরি থেকে শুরু করে পোলের তার চুরি, চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ে জড়িত। এ ছাড়া স্কুল পড়ুয়া মেয়েদের উত্ত্যক্তসহ এলাকায় ত্রাসের সৃষ্টি করে চলেছে। তাদের হামলার শিকার হয়ে অনেকে ভয়ে মুখ খুলতে চায় না। অভিযোগ আছে, তাদের বেশির ভাগ নিয়ন্ত্রণ করছেন ওয়ার্ড পর্যায়ের আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা। তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় আছেন রাসিকের কয়েকজন ওয়ার্ড কাউন্সিলরও।

তাদের ছত্রছায়ায় নানা অপরাধে জড়িত কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। এসব গ্রুপের সদস্যরা বেশির ভাগ নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের বখে যাওয়া সন্তান।

সম্প্রতি কিশোর গ্যাংয়ের উত্থান ঘটেছে স্বীকার করে রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) বিজয় বসাক বলেন, দেড় বছর আগে কিশোর গ্যাংয়ের প্রায় ৫০০ সদস্যের ডিজিটাল ডেটাবেজ তৈরি করা হয়েছিল। তবে এখন এ সংখ্যা অন্তত ৬৫০। বিভিন্ন এলাকায় নতুন নতুন গ্রুপ তৈরি হচ্ছে। তাদের ওপর পুলিশের কড়া নজরদারিও আছে। কোনো অপরাধ করে কেউই পার পাবে না। এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর