শুক্রবার, ৩ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন

আজ ইঞ্জিন ট্রায়াল ১১ নভেম্বর উদ্বোধন

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনে আজ (শুক্রবার) প্রথমবারের মতো চালানো হবে ইঞ্জিন ট্রায়াল। আগামী ৭ নভেম্বর চলবে পরীক্ষামূলক ট্রেন। আগামী ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে দেশের অগ্রাধিকারভিত্তিক এ প্রকল্পটি উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনের আগে আরও একাধিকবার নানাভাবে ট্রায়াল ট্রেন চলাচলের কথা রয়েছে। এ নিয়ে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিচ্ছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল। জানা যায়, আজ দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইনে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলক ইঞ্জিন ট্রায়াল করা হবে। সংস্কার করা কালুরঘাট সেতু দিয়ে এ ইঞ্জিন রেলটি যাবে। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ২০ থেকে ৩০ জনের একটি টিম ইঞ্জিন ট্রায়ালে থাকবেন। তাছাড়া আগামী ৭ নভেম্বর হবে পরীক্ষামূলক ট্রায়াল। এ টিমে থাকবেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, রেল মন্ত্রণালয়ের সচিব, রেলওয়ের মহাপরিচালকসহ পূর্বাঞ্চল রেলের কর্মকর্তারা। এর আগে গত ১৬ অক্টোবর রেলমন্ত্রী দোহাজারী থেকে কক্সবাজার রেললাইন পরিদর্শন করেন। দোহাজারী রেললাইনে চলাচল করবে ৯০ টন ওজনের ইঞ্জিন, এসি বগির ওজন হবে ৩৬ টন ও নন এসি বগির ওজন হবে ৩২ টন। দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ সবুক্তগীন বলেন, শুক্রবার ইঞ্জিন ট্রায়াল, আগামী ৭ নভেম্বর পরীক্ষামূলক রেল চলাচল।

আগামী ১১ নভেম্বর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছি আমরা। এ নিয়ে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণের সামগ্রিক কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। সব স্টেশনের মূল কাজ ও রেললাইন নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ। তবে বাণিজ্যিকভাবে রেল চলবে আরও পরে।

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনটি ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার এবং রামু-ঘুনধুম পর্যন্ত মিটারগেজ রেলপথ নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দোহাজারী থেকে রামু পর্যন্ত ৮৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হয়। প্রকল্পের অধীনে কক্সবাজারে নির্মিত হয়েছে ঝিনুকের আদলে দেশের প্রথম আইকনিক রেলওয়ে স্টেশন। এর মাধ্যমে দেশের পর্যটন খাত এগিয়ে যাবে আরেক ধাপ। রেললাইন চালু হলে পর্যটক ও স্থানীয় জনগণের জন্য নিরাপদ, আরামদায়ক, সাশ্রয়ী যোগাযোগব্যবস্থা তৈরি হবে। তাছাড়া সহজ ও কম খরচে মাছ, লবণ, কাগজের কাঁচামাল, বনজ ও কৃষিজ দ্রব্যাদি পরিবহন করা যাবে। একই সঙ্গে প্রকল্প নির্মাণে হাতি ও অন্যান্য বন্যপ্রাণীর নির্বিঘ্নে চলাচল করার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের ৪৫তম জেলায় যুক্ত হবে রেল। ঢাকা থেকে সাড়ে ৭ ঘণ্টায় এবং চট্টগ্রাম থেকে আড়াই ঘণ্টায় রেল পৌঁছাবে কক্সাবাজার। মাছ, লবণ, শুঁটকিসহ নানা পণ্য কক্সবাজার থেকে দেশের অন্যান্য স্থানে পরিবহনের জন্য থাকবে বিশেষ রেফ্রিজারেটেড ওয়াগন সার্ভিস।

চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারের দূরত্ব ১৫০ কিলোমিটার। দোহাজারী থেকে কক্সবাজারের দূরত্ব ১০০ কিলোমিটার। বর্তমানে দোহাজারী পর্যন্ত রেললাইন আছে। এ কারণে দোহাজারী থেকে রামু হয়ে রেলপথটি যাচ্ছে কক্সবাজারে। দোহাজারী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, হারবাং, চকরিয়া, ডুলাহাজরা, ইসলামাবাদ, রামু ও কক্সবাজারে হচ্ছে নয়টি স্টেশন। এসব স্টেশনে থাকবে কম্পিউটার বেইজড ইন্টারলক সিগন্যাল সিস্টেম এবং ডিজিটাল টেলিকমিউনিকেশন সিস্টেম। সাঙ্গু, মাতামুহুরী ও বাঁকখালী নদীর ওপর নির্মাণ হয়েছে তিনটি বড় সেতু। এ ছাড়াও পুরো রেলপথে নির্মিত হয়েছে ৪৩টি ছোট সেতু, ২০১টি কালভার্ট এবং ১৪৪টি লেভেল ক্রসিং।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর