শুক্রবার, ৩ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

সংসদের মেয়াদ দুই বছর বাড়ানোর প্রস্তাব

সংসদে আলোচনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনাভাইরাসের কারণে প্রায় তিন বছর সংসদ সদস্যদের কাজ করতে না পারার কথা তুলে ধরে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ একাদশ জাতীয় সংসদের মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন।

গতকাল জাতীয় সংসদে ‘পরিত্যক্ত বাড়ি (সম্পূরক বিধানবলি) বিল, ২০২৩’ এর ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে জাপার অপর এমপি রওশন আরা মান্নানের বক্তব্যের সূত্র ধরে তিনি এ প্রস্তাব করেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে জাপার অপর এমপি রওশন আরা মান্নান বলেন, আমাদের দুই বছর এমনি নষ্ট হয়ে গেছে করোনাভাইরাসের কারণে। অনেক সময় নষ্ট হয়ে গেছে আমরা কাজ করতে পারিনি। এ সময় পাশ থেকে কয়েকজন সংসদ সদস্যকে বলতে শোনা যায় দুই বছরের বেশি। পরে রওশন আরা মান্নান বলেন, ‘প্রায় তিন বছর।’ তিনি বলেন, আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর যখন সবাই পরিচিতি পাচ্ছিলাম, মালাটালা নিয়ে এক বছর, কাজকর্ম ধরতে ধরতে এক বছর চলে গেল। পরের বছরই করোনা আরম্ভ হলো। তার পরের বছর করোনার কারণে ঘরে বসা। করোনা শেষে ধকল সামলাতে সামলাতে আরও এক বছর। তিন বছর আমরা কোনো কাজ করতে পারিনি। তিনি আরও বলেন, আমরা যারা এখানে আছি, তাদের এ সময়টা নষ্ট হয়ে গেছে, কাজকর্ম করতে পারিনি। আমাদের কথাটা যেন মনে থাকে, প্রধানমন্ত্রীকে আমরা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। তিনি বলেন, আবার আসব কি না জানি না। আজকে শেষ সংসদ। তবে এত বড় জায়গায় আল্লাহর হুকুম ছাড়া এখানে কেউ আসতে পারে না।  হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, আমাদের সংসদ সদস্য রওশন আরা মান্নান বললেন দুই-তিন বছর নষ্ট হয়ে গেছে। উনি পরোক্ষভাবে সংসদের মেয়াদ দুই বছর বাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলতে চাচ্ছেন। আমি যেটা বুঝেছি। উনি পরোক্ষভাবে বলেছেন, আমি সোজা মানুষ তো তাই সোজাভাবে বললাম। একটু বিবেচনা করে দেখতে পারেন।

সহিংসতা ছেড়ে নির্বাচনে আসুন : সহিংসতা ছেড়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে একটি অংশগ্রহণমূলক, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ। তিনি বলেন, আমরা এখন একটি সাংবিধানিক ট্র্যাকে এসেছি যে, নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতার পরিবর্তন হবে। সেই নির্বাচনকে অবশ্যই সুষ্ঠু হতে হবে। অবশ্যই গ্রহণযোগ্য হতে হবে। এটা আমরা সবাই চাই। সেটা আমাদের সবার লক্ষ্য।  গতকাল রাতে একাদশ সংসদের শেষ কার্যদিবসে সমাপনী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

রওশন এরশাদ বলেন, সংসদীয় গণতন্ত্রে সংসদ সব রাষ্ট্রীয় কর্মকাে র কেন্দ্রবিন্দু। সংসদকে প্রাণবন্ত অংশগ্রহণমূলক ও কার্যকর করতে জাতীয় পার্টি সংসদীয় দল সবসময় আন্তরিক এবং দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছে। জনস্বাথের্র বিভিন্ন দিক এই সংসদে তুলে ধরেছে। বর্তমান সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি শুধু বিরোধিতার জন্য সরকারের বিরোধিতা করে না, তারা সরকারের ভালো কাজের প্রশংসা এবং খারাপ কাজের সমালোচনা করে প্রকৃত বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করছে।

রওশন এরশাদ বলেন, গণতন্ত্রের সূতিকাগার হলো জাতীয় সংসদ। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় আইনসভা বা পার্লামেন্টের অভ্যন্তরে বিরোধী দলের অস্তিত্ব অপরিহার্য। জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা, চাওয়া-পাওয়া ও প্রয়োজন-প্রত্যাশা সংসদে তুলে ধরা ও সরকারের কাজের ত্রুটি-বিচ্যুতি তুলে ধরার জন্য বিরোধী দল আবশ্যক। অতীতের যে কোনো সংসদের তুলনায় দশম ও একাদশ সংসদ অনেক কার্যকর। বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, ভূ-রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার নিয়ে বিশ্বব্যাপী ঠান্ডালড়াই চলছে। আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনৈতিক খেলায় খেলতে যাওয়ার সক্ষমতা আমাদের নেই। এই বড় খেলাতে অংশ না নেওয়াই আমাদের জন্য বুদ্ধিমানের কাজ হবে। তা না হলে আমাদের তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ক্রমাগতভাবে ক্ষয় হচ্ছে। চাহিদা অনুযায়ী ব্যবসায়ীরা আমদানির এলসি খুলতে পারছেন না। ডলার সংকটের কারণে ব্যাংকগুলোরও আমদানির সক্ষমতা কমে গেছে। বাজার ব্যবস্থাপনা ঠিক না করলে এটা দিয়ে মূল্যস্ফীতি কমানো সম্ভব হবে না।

তিনি আরও বলেন, বাজারে নিত্যপণ্যের লাগামছাড়া দামে ক্রেতারা প্রতিনিয়ত নাজেহাল হচ্ছেন।

 ব্যয় বাড়লেও আয় বাড়েনি। ফলে মানুষ টিকে থাকার জন্য সঞ্চয় ভেঙে অথবা ঋণ করে খাচ্ছে। কিন্তু যারা দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে, তাদের সঞ্চয়ও নেই, কেউ ধারও দেয় না। এ অবস্থায় তারা সন্তানদের পড়ালেখা, চিকিৎসা খরচ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। তাতেও না কুলালে খাবার খরচ কমিয়ে তিন বেলার পরিবর্তে এক বেলা খেয়ে দিন পার করছেন। যদিও এ ক্ষেত্রেও বাস্তবতা নিষ্ঠুর! কারণ সিন্ডিকেটের থাবা এখন গরিবের খাবারেও পড়েছে।

সর্বশেষ খবর