শুক্রবার, ৩ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

যার বিরুদ্ধে যে তথ্য সে অনুযায়ী গ্রেফতার : আইজিপি

নিজস্ব প্রতিবেদক

যার বিরুদ্ধে যে তথ্য সে মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। গতকাল রাজধানীর গুলিস্তানে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ ইনডোর স্টেডিয়ামে ‘বঙ্গবন্ধু দ্বিতীয় দক্ষিণ এশিয়া স্যাম্বো চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৩’ উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে এ কথা বলেন তিনি।  বিএনপির শীর্ষ তিন নেতার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা থাকার পরও নাশকতার মামলায় গ্রেফতার করার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, হত্যা ও নাশকতার মামলার বিষয়গুলো তদন্তনাধীন রয়েছে। তদন্তে যে তথ্য আসবে, যার বিরুদ্ধে যে তথ্য পাওয়া গেছে সেই মামলা আমরা দিচ্ছি। তাদের নাশকতার মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ স্যাম্বো অ্যান্ড কোরাশ অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডিএমপির কল্যাণ ও ফোর্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার ও সভাপতি, বাংলাদেশ স্যাম্বো ও কোরাশ অ্যাসোসিয়েশন আর এম ফয়জুর রহমান।

তাদের বিরুদ্ধে যদি হত্যা মামলার তথ্য পাওয়া যায় তাহলে ওই মামলায়ও গ্রেফতার দেখানো হবে।

হামলা ও নাশকতায় পুলিশ সদস্য নিহত-আহত হওয়ার ফলে আগামীতে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং এতে পুলিশের মনোবলে কোনো প্রভাব পড়বে কি না এমন এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশপ্রধান বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী দেড় শ বছরের একটি পুরনো প্রতিষ্ঠান। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় আমরা গর্বের সঙ্গে সাহসিকতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে এ দেশের মানুষের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করে আসছি। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই আগামী দিনেও আমরা আমাদের দায়িত্ব থেকে পিছপা হব না। যে কোনো উসকানির মুখে আমরা আমাদের দায়িত্ব আন্তরিকতার সঙ্গে পালন করব। আমাদের যে প্রশিক্ষণ ও সামর্থ্য আছে তা দিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্যের মনোবল অটুট এবং চাঙা আছে। আমরা যখন এ ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হই, আমাদের কেউ আক্রান্ত হয় তাদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করে থাকি সেটা দেশে কিংবা বিদেশে যেখানেই হোক। আমাদের যারা আহত হয়েছে তাদের চিকিৎসা নিশ্চিত করা হয়েছে এবং আমাদের মনোবলও অটুট আছে।

আইজিপি আরও বলেন, আমরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পেশাদারিত্বের সঙ্গে যেভাবে দায়িত্ব পালন করি, গত ২৮ অক্টোবরও আমরা সেভাবেই দায়িত্ব পালনে প্রস্তুত ছিলাম। আমরা নিরাপত্তা দিচ্ছিলাম। হঠাৎ করেই দেখি কিছু বাসে আগুন দেওয়া শুরু হলো। পথচারীদের ওপর আক্রমণ, কিছু রাজনৈতিক কর্মীর ওপর আক্রমণ শুরু হয়। এটা যখন শুরু হয় মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া পুলিশের কর্তব্য। এ জন্যই আমরা দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে দেখেছি, আক্রমণকারী দুষ্কৃতকারীরা প্রধান বিচারপতির বাসভবনে ঢুকে পড়েছে। বিচারপতিদের বাসভবনে আক্রমণ করেছে। এসব জায়গায় যখন আক্রমণ শুরু করে তখন আমাদের কী করা উচিত ছিল, আমাদের পেশাদারিত্বের সঙ্গে যেটুকু শক্তি প্রয়োগ করার প্রয়োজন ছিল সেটুকুই আমরা করেছি এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি।

তিনি বলেন, অনেকেই বলতে চেষ্টা করেছেন আমরা নাকি ‘প্রেস’ লাগানো পোশাক লাগিয়ে রাজনৈতিক কর্মীদের পুলিশের সঙ্গে সংযুক্ত করেছি। এরা নাকি অগ্নিসংযোগ করেছে। কারা এই অগ্নিকান্ড করেছে এটা আপনারা জানেন এবং আপনারা দেখেছেন এবং বুঝতে পেরেছেন। আমি আশা করি দেশবাসীও বুঝতে পেরেছে।

কথিত জো বাইডেনের উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির নীতিনির্ধারণীর দেশে ও বিদেশের কেউ জড়িত কি না এমন এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, একটা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার জন্য যে ধরনের পরিবেশ রাখা প্রয়োজন সেটা যখন আমরা নিশ্চিত করেছিলাম তখন বিতর্কিতভাবে মানুষের জানমালের ও পুলিশ সদস্যদের ওপর আক্রমণ হয়েছে। আমরা সেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছিলাম। সে সময় আমরা বিএনপির নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম কিন্তু কেউ উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। আমরা তদন্ত করে দেখছি এবং সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে আমরা তাদের গ্রেফতার করছি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইজিপি বলেন, খেলাধুলা মানুষের মনকে যেমন প্রফুল্ল রাখে তেমনি পারস্পরিক বন্ধন তৈরি করে। স্যাম্বো একটি নতুন খেলা যার মাধ্যমে বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের খেলোয়াড়দের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন তৈরি করতে পারবেন। এ খেলায় অংশগ্রহণ করে আন্তর্জাতিকভাবেও বাংলাদেশের জন্য সুনাম বয়ে আনা সম্ভব। এটি বাংলাদেশের জন্য একটি সম্ভাবনাময় খেলা। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, আমাদের খেলোয়াড়রা আগামীতে এই খেলার মাধ্যমে অলিম্পিকে দেশের পতাকা মেলে ধরবেন এবং জয়ের মুকুট ছিনিয়ে আনবেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ স্যাম্বো অ্যান্ড কোরাশ অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডিএমপির কল্যাণ ও ফোর্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার ও সভাপতি, বাংলাদেশ স্যাম্বো ও কোরাশ অ্যাসোসিয়েশন আর এম ফয়জুর রহমান। বাংলাদেশ স্যাম্বো অ্যান্ড কোরাশ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবিরও বক্তব্য রাখেন। এ চ্যাম্পিয়নশিপে ৫৬টি ওজন ক্যাটাগরিতে ৬টি দেশের ১৭২ জন অ্যাথলেট অংশগ্রহণ করবেন।

সর্বশেষ খবর