শনিবার, ৪ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

পুরনো চেহারায় বাস টার্মিনাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি-জামায়াত ঘোষিত তিন দিনের অবরোধ শেষ হয়েছে গত বৃহস্পতিবার। গতকাল থেকে পুরনো চেহারায় ফিরতে দেখা গেছে রাজধানীর গাবতলী, সায়েদাবাদ ও মহাখালী বাস টার্মিনাল। কর্মীদের হাঁকডাক ও যাত্রীদের আনাগোনায় মুখরিত ছিল টার্মিনালগুলো। ভোর থেকেই ছেড়ে গেছে দূরপাল্লার বাস। সায়েদাবাদ, মহাখালী ও গাবতলী বাসটার্মিনালে সরেজমিন দেখা যায়, টানা তিন দিন অবরোধের পর গতকাল সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন স্থানে পরিবহনের সংখ্যা ছিল বেশি। রাজধানীর গাবতলী, মহাখালী, সায়েদাবাদ বাসটার্মিনালসহ ঢাকার প্রবেশপথগুলোতে ছিল মানুষের ভিড়। এসব জায়গা থেকে মানুষকে বিভিন্ন গন্তব্যে যেতে দেখা যায়। সায়েদাবাদ টার্মিনালে কথা হয় ইসমাইল মিয়া নামে এক যাত্রীর সঙ্গে। তিনি বলেন, আমার বাড়ি চাঁদপুরের কচুয়ায়। বাড়ি যাওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার টার্মিনালে এসেছি। কিন্তু কোনো গাড়ি চলাচল না করায় যেতে পারিনি। তাই আজ সকাল সকাল এসেছি। টিকিট কাটলাম। বাস এলে উঠে যাব। ঢাকা-চাঁদপুর রুটে চলাচলকারী পদ্মা বাসের টিকিট কাউন্টার ম্যানেজার মাসুদ আলম বলেন, অবরোধের কারণে গত তিন দিন বাস চলাচল করেনি। কাল অবরোধ শেষ হয়েছে তাই আজ থেকে চলাচল শুরু হলো। গত তিন দিন বন্ধ থাকার পর আজ কাউন্টারে মানুষের উপস্থিতি একটু বেশি। গাবতলী বাসটার্মিনালে কথা হয় শেখ নাসের নামে এক যাত্রীর সঙ্গে। তিনি কমফোর্ট লাইন বাসে পিরোজপুর যাবেন। শেখ নাসের বলেন, বাড়িতে যাওয়ার দরকার ছিল অবরোধের আগেই। কিন্তু মাঝখানে অবরোধ পড়ে যাওয়ায় আর যেতে পারিনি। তাই আজ যাচ্ছি। সোহাগ পরিবহনে মাগুরা যাবেন শাহাদাত হোসেইন। তিনি বলেন, দুই দিন ধরেই বাড়িতে যাওয়ার প্রয়োজন ছিল। গতকাল এসেও বাস পাইনি। অবরোধ কাটতেই আজ এলাম। টিকিট কেটেছি, আশা করছি ভালোভাবে পৌঁছাব।

অবরোধ শেষ হতেই যাত্রীর সংখ্যা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন বাস সংশ্লিষ্টরা।

গোল্ডেন লাইন পরিবহনের ম্যানেজার সাদ্দাম বলেন, তিন দিন তো কোনো ট্রিপই ছিল না। অনেক যাত্রী চাইলেও যেতে পারেনি। তাই আজ সবাই যাত্রা করছেন। রয়েল এক্সপ্রেসের কর্মী মিন্টু বলেন, অবরোধের কারণে ট্রিপ বন্ধ ছিল। অবরোধ শেষ, ট্রিপ আবার শুরু হয়েছে। যাত্রীও অনেক আসছেন। একই সঙ্গে মহাখালী বাসটার্মিনাল থেকে ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পরিবহন চলাচল করতে দেখা গেছে।

এদিকে গাবতলী এলাকাজুড়ে যেন কোনো অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি না ঘটে, সে জন্য পুলিশের সরব উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। কর্মরত এক ট্রাফিক পুলিশ বলেন, অবরোধ কাটলেও কিন্তু নাশকতার একটা শঙ্কা থেকে যায়। তাই আমরা লক্ষ্য রাখছি যেন সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকে।

উল্লেখ্য, বিএনপি এর আগে তিন দিনের যে অবরোধ ডেকেছিল সেটা শেষ হয়েছে বৃহস্পতিবার। এরপর শুক্রবার ও শনিবার বিরতি দিয়ে রবিবার থেকে ফের ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ ডেকেছে দলটি। গতকাল বিকালে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, রবিবার ভোর ৬টা থেকে মঙ্গলবার ভোর ৬টা পর্যন্ত সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে। বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা অন্য দলগুলোও এই কর্মসূচি পালন করবে বলে জানান তিনি।

সর্বশেষ খবর