রবিবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

একই আঙিনায় মসজিদ ও মন্দির

রেজাউল করিম মানিক, লালমনিরহাট

একই আঙিনায় মসজিদ ও মন্দির

আঙিনার এ পাশে জ্বলে ধূপকাঠি, ও পাশে আতরের মিষ্টি ঘ্রাণ। একদিকে উলুধ্বনি, অন্যদিকে জিকিরের আওয়াজ। এভাবে ধর্মীয় সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত হয়ে লালমনিরহাট জেলা শহরে ১৮৭ বছর ধরে দাঁড়িয়ে আছে পৃথক দুটি উপাসনালয়। লালমনিরহাট শহরের কালীবাড়ী এলাকার পুরান বাজার জামে মসজিদ ও কালীবাড়ী কেন্দ্রীয় মন্দিরটি একই আঙিনায় চালু রয়েছে ১৮৩৬ সাল থেকে। স্থানীয়রা জানান, ১৮৩৬ সালে কালীমন্দির স্থাপিত হওয়ার কিছুদিন পর বিভিন্ন দেশ থেকে লালমনিরহাট শহরে আসা মুসলমানরা নামাজ আদায়ের সুবিধার্থে কালীবাড়ী এলাকায় মন্দিরের পাশে একটি ছোট ঘর তোলেন। দিনে দিনে ঘরটির পরিচিতি হয় ‘পুরান বাজার জামে মসজিদ’। পূজা শুরুর আগে মসজিদ ও মন্দির কমিটি বসে সিদ্ধান্ত নেয়। এ পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। ‘লালমনিরহাট শহরের গৌরব’ খ্যাত দুই প্রার্থনালয় দেখতে বহু মানুষ প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসছে। কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতও এ মন্দির ও মসজিদ পরিদর্শন করেছেন। আজানের সময় থেকে নামাজের জামাত শেষ না হওয়া পর্যন্ত মন্দিরের মাইক, ঢাকঢোলসহ যাবতীয় শব্দ বন্ধ থাকে। নামাজের জামাত শেষ হলে মন্দিরের কার্যক্রম চলে। কোনো বিশৃঙ্খলা নেই। কারণ একে অন্যের ধর্মীয় পবিত্রতা রক্ষায় বদ্ধপরিকর। মসজিদের ইমাম মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, ‘মসজিদের আগে মন্দিরটি হয়েছে। তবু এখানে জাতিধর্মনির্বিশেষে সব শ্রেণির মানুষ স্বাধীনভাবে ঘুরতে আসেন। আমরা তাদের সব কাজে সহযোগিতা করি। তারাও আমাদের সহযোগিতা করেন।’

মন্দিরের প্রধান পুরোহিত শংকর চক্রবর্তী জানান, কালীবাড়ী এলাকায় বাজার গড়ে উঠলে বাজারের ব্যবসায়ী ও শহরের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মন্দিরের পাশেই প্রতিষ্ঠা করেন মসজিদ। নির্বিঘ্নে চলছে দুই ধর্মের উপাসনা। বিন্দুমাত্র বিশৃঙ্খলা হয় না এখানে। নিজের জন্মের পর থেকে তিনি এ পরিবেশ দেখছেন।

লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, সত্যিই এটা গর্বের বিষয়। গোটা দেশে এক দৃষ্টান্তমূলক ধর্মীয় বাতাবরণ।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর