শিরোনাম
সোমবার, ৬ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ব্রিধান-৭৬ চাষে আশার আলো

আমিনুল হাসান শাহীন, গোপালগঞ্জ

ব্রিধান-৭৬ চাষে আশার আলো

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) উদ্ভাবিত লবণ- জোয়ারভাটা সহিষ্ণু উচ্চ ফলনশীল ব্রিধান-৭৬ চাষে আশার আলো দেখছেন কৃষক। নিচু জমিতে এ ধান চাষ করে কৃষক বিঘাপ্রতি ১২ থেকে ১৪ মণ পর্যন্ত ফলন পেয়েছেন। গোপালগঞ্জ  জেলার স্থানীয় জাবরা, জৈনা, ময়নামতী ধান ও বাগেরহাট  জেলার স্থানীয় জাত মন্ডেশ্বরের পরিবর্তে কৃষক ব্রিধান-৭৬ আবাদ করে তিন গুণেরও বেশি ফলন পেয়েছেন। তাই এ জাত ছড়িয়ে দিতে পারলে আমন মৌসুমে দক্ষিণাঞ্চলের নিচু জমিতে ধানের উৎপাদন অন্তত তিন গুণ বৃদ্ধি পাবে। এ অঞ্চল খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।  ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয় গোপালগঞ্জ, বাগেরহাট ও নড়াইল জেলার ধানের উৎপাদন বৃদ্ধিতে কাজ করছে। প্রতিষ্ঠানটি সূত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে গোপালগঞ্জ ও বাগেরহাট জেলায় বিনামূল্যে ১ হাজার ২৭০ কেজি ব্রিধান-৭৬ বীজ বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। বীজ দিয়ে গোপালগঞ্জ সদর, টুঙ্গিপাড়া, বাগেরহাট জেলার মোংলা, রামপাল, মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলার কৃষক ২৫৪টি প্রদর্শনী প্লটে ব্রিধান-৭৬ এর আবাদ করেন। ৩৩ শতাংশের বিঘায় এ ধান ১২ থেকে ১৪ মণ পর্যন্ত ফলন দিয়েছে। স্থানীয় জাত জাবরা, জৈনা, ময়নামতী ও মন্ডেশ্বর বিঘায় ৪ থেকে ৫ মণ ফলন দিয়ে থাকে। গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ডুমরিয়া গ্রামের কৃষক আহমেদ আলী (৬৫) বলেন, নিচু জমিতে স্থানীয় জাত জাবরা, জৈনা, ময়নামতী চাষ করতাম।

এতে বিঘাপ্রতি ৪/৫ মণ ফলন পেতাম। কিন্তু এ বছর ব্রিধান-৭৬ আবাদ করে বিঘাপ্রতি ১৩ মণ ফলন পেয়েছি। লবণ-জোয়ারভাটা সহিষ্ণু উচ্চ ফলনশীল ব্রিধান-৭৬ চাষে আশার আলো দেখছি। আমাদের এলাকার চাষিরা এত ফলন দেখে আগামী বছর ব্রিধান-৭৬ চাষ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের  বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সৃজন চন্দ্র দাস বলেন, বীজ তলায় ব্রিধান-৭৬ এর চারা ৩০ দিনেই ৬০ সেন্টিমিটারের চেয়েও বড় হয়। লবণাক্ত নিচু জমিতে এ ধানের চারা রোপণ করে দিতে হয়। জোয়ারভাটা সহিষ্ণু এ জাতের ধান ১৪০ দিনেই স্থানীয় জাতের তুলনায় তিন গুণেরও বেশি ফলন দেয়। দক্ষিণাঞ্চলে এ ধানের জাত ছড়িয়ে দিতে আমরা কাজ করছি। দক্ষিণাঞ্চলে এ ধানের জাত ছড়িয়ে দিয়ে আমরা খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করতে সক্ষম হব।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির উপ-পরিচালক আ. কাদের সরদার বলেন, নিচু জমিতে ব্রিধান-৭৬ এর বাম্পার ফলন হয়েছে। এ জাত দক্ষিণাঞ্চলের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের হাতছানি দিচ্ছে। ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) বীজ সরবরাহ করলে আমরা এ জাত কৃষক পর্যায়ে ছড়িয়ে দেব।

ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান ও সিনিয়র সাইন্টিফিক অফিসার ড. মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বলেন, লবণ জোয়ারভাটা সহিষ্ণু উচ্চ ফলনশীল ব্রিধান-৭৬ কৃষক পর্যায়ে জনপ্রিয় করতে আমরা বীজ উৎপাদন বাড়াব। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মাধ্যমে এটি ছড়িয়ে দিয়ে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা আমরা নিশ্চিত করব ইনশাআল্লাহ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর