শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৭ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

বন ধ্বংস করে মাছ চাষ

চট্টগ্রাম

ইমরান এমি, চট্টগ্রাম

বন ধ্বংস করে মাছ চাষ

চট্টগ্রামের আনোয়ারার উপকূলীয় এলাকা রায়পুরে উজাড় হয়েছে ৯৫ একর ম্যানগ্রোভ বন। কিন্তু পর্যাপ্ত জনবল না থাকার কারণে তার কোনো তথ্যই নেই বনবিভাগের কর্মকর্তাদের কাছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বিস্তৃত বন ধ্বংস করে তৈরি হয়েছে মাছের ঘের। যার কারণে ধীরে ধীরে ম্যানগ্রোভ বনটি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে এসেছে। স্থানীয়দের শঙ্কা দখলের মহোৎসব বন্ধ করতে না পারলে ভবিষ্যতে ২৫০ একর ম্যানগ্রোভটি হারিয়ে যাবে দখলদারদের থাবায়। আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইশতিয়াক ইমন বলেন, বনের জায়গা দখল করে রাখার মতো কোনো অভিযোগ পাইনি। বনবিভাগ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে সহযোগিতা করা হবে। এছাড়াও সেখানে জেলা প্রশাসন থেকে বন্দোবস্ত কিছু জমি রয়েছে। জানা যায়, রায়পুর ইউনিয়নের শঙ্খ নদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনায় উপকূলীয় এলাকার প্রবহমান সাগর এবং নদীর দুই পাড়েই রয়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ। সাগর আর নদীর বাঁধ তীরবর্তী এলাকায় বিস্তৃত ম্যানগ্রোভ বন। প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে উপকূলীয় এই এলাকা রক্ষায় চট্টগ্রাম উপকূলীয় বনবিভাগের প্রেমাশিয়া বিটের অধীনে ২৫০ একর গহিরা ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট গঠন করেছিল এফডি। এ প্রকল্পের অধীনে, এফডি ১৯৯১-৯২ সালে বঙ্গোপসাগর এবং শঙ্খ নদীর তীরে কেওড়া, গেওয়া এবং বাইনসহ প্রায় ১০ হাজার গাছ রোপণ করে ম্যানগ্রোভ বন তৈরি করেছিল। এরই মধ্যে গহিরা ম্যানগ্রোভ জঙ্গলের শত শত গাছ কেটে দখলকারীরা বনের ৯৫ একরের বেশি জায়গা মাছের ঘেরে পরিণত করেছে। যার কারণে সাগরের নিচের অংশের বালু হারিয়ে কাদামাটিতে পরিণত হয়েছে, এই বন এখন মৃত্যুঝুঁকিতে।

বনবিভাগের সংরক্ষিত জায়গায় কেন মাছ চাষের নামে বন ধ্বংস করা হচ্ছে জানতে চাইলে জহুর আহমেদ তা অস্বীকার করে বলেন, আমরা আমাদের পৈর্তক জমিতে চাষাবাদ করছি, বনবিভাগের জায়গায় নয়। আমরা ২৫ পরিবার বন্দর থেকে ২১ বছর আগে ১০৫ কানি জমি লিজ নিয়ে মাছের ঘের করছি এবং কিছু অংশে গাছ রোপণ করেছি। আমাদের লিজের জমিতে বনবিভাগ ঢুকে গেছে। এখানে জায়গা দখলের প্রশ্নই আসে না।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আমিন শরীফ বলেন, আমার জানা মতে ওই জায়গাগুলো তারা লিজ নিয়েছে। বনের জায়গা দখল করেনি বরং বনের ভিতরে তাদের জায়গা ঢুকে গেছে। ওদের কাছে এ জায়গার সব কাগজপত্র আছে।

উপকূলীয় বন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও) বেলায়েত হোসেন বলেন, মাঠের কর্মীরা আমাকে এ বিষয়ে কিছু জানায়নি। দখল করে বনে মাছ চাষের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এভাবে মাছের ঘের করে বন ধ্বংস করা একটি অপরাধ। আইন অনুযায়ী দখলকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা এবং প্রাকৃতিক ঢাল থেকে দখলকারীদের উচ্ছেদের জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে চিঠি দেওয়া হবে।

 

 

 

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর