মঙ্গলবার, ৭ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

সিএইচসিপিদের বেতন চার মাস ধরে বন্ধ

কষ্টে দিনাতিপাত করছেন তারা

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

তৃণমূলে সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারদের (সিএইচসিপি) গত চার মাস ধরে বেতন বন্ধ। বেতন না পাওয়ায় কর্মরতদের মধ্যে নানা সমস্যা-সংকট তৈরি হয়েছে। বেতন না পাওয়ায় সিএইচসিপিরা ক্লিনিকে অনুপস্থিত থাকা, বিনামূল্যের টিকিট টাকা দিয়ে বিক্রি এবং ওষুধ বিক্রির অভিযোগও ওঠেছে। চট্টগ্রামে কমিউনিটি ক্লিনিক আছে ৫৩৮টি, চালুর অপেক্ষায় আছে প্রায় অর্ধশত। সিএইচসিপি আছেন ৫৩১ জন। একাধিক সিএইচসিপির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত জুলাই মাস থেকে বেতন বন্ধ। ফলে কষ্টে দিনাতিপাত করছেন তারা। তাছাড়া, গত ১২ বছর আগে চাকরি শুরু করলেও এখন পর্যন্ত কারও বেতন বাড়েনি। নেই সরকারি সুবিধা। গত ১ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাবে সিএইচসিপিদের সংগঠন সংবাদ সম্মেলন করে সরকারের কাছে বেতন চালু ও সুবিধা প্রদানের দাবি জানিয়েছেন। বাংলাদেশ কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার চট্টগ্রাম শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. নাঈম উদ্দিন বলেন, গত জুলাই মাস থেকে সিএইচসিপিদের বেতন বন্ধ। ফলে অনেক কষ্টে দিন পার করছেন। শুনছি বেতন দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। তবে গত ১২ বছর ধরে কমিউনিটি ক্লিনিকে কাজ করলেও চাকরি রাজস্বকরণ হয়নি। এ ব্যাপারে হাই কোর্ট একটি আদেশ দিয়েছেন। সেটিও পালন হয়নি। পরে জাতীয় সংসদে ট্রাস্ট আইন পাস হয়। তবে, এখনো ট্রাস্টের সুযোগ-সুবিধা কার্যকর করা হয়নি। চট্টগ্রামের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মো. ওয়াজেদ চৌধুরী অভি বলেন, তাদের বেতন বন্ধ। তবে বিষয়টি মন্ত্রণালয় থেকে তদারকি করা হয়। হয়তো শিগগিরই আবার চালু করা হবে।

জানা যায়, কমিউনিটি ক্লিনিকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের ‘কমিউনিটি বেজড হেলথ কেয়ার’ প্রকল্প থেকে। তবে এটি পরিচালিত হয় ট্রাস্টের মাধ্যমে। সপ্তাহে শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত ক্লিনিকগুলো খোলা থাকে। মূলত তিনজন কর্মী কমিউনিটি ক্লিনিকে কাজ করেন। মূল দায়িত্বে থাকেন সিএইচসিপি। তিনি সপ্তাহে ছয় দিন ক্লিনিকে থাকেন। তবে ক্লিনিকে উপস্থিত থেকে সপ্তাহে তিন দিন তাকে সহায়তা করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মাঠকর্মী স্বাস্থ্য সহকারী এবং বাকি তিন দিন সহায়তা দেন পরিবারকল্যাণ সহকারী। ক্লিনিকে চিকিৎসকের কোনো পদ নেই।

উল্লেখ্য, কমিউনিটি ক্লিনিকে বিনামূল্যে দেওয়া হয় ২৭ ধরনের ওষুধ। কমিউনিটি ক্লিনিকের ধারণা নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রকাশ করে ‘কমিউনিটি ক্লিনিক : হেলথ রেভুল্যুশন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক পুস্তিকা। জাতিসংঘের সাধারণ সভার রেজুলেশনে কমিউনিটি ক্লিনিকের সাফল্যে ‘কমিউনিটি ক্লিনিক দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ স্বীকৃতি পেয়েছে। সরকারও কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবা নিয়েই স্বাস্থ্য খাতের সাফল্যের কথা প্রচার করে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর