শিরোনাম
বুধবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

দক্ষিণাঞ্চলে সড়ক পরিবহনে বিপ্লব

► বরিশাল রুটে প্রবেশ করছে নতুন অর্ধশতাধিক বাস কোম্পানি ► পণ্য পরিবহনেও বেড়েছে গতি

রাহাত খান, বরিশাল

পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর বরিশাল অঞ্চলে সড়ক পরিবহনে বিপ্লব হয়েছে। গত প্রায় দেড় বছরে দক্ষিণের বিভিন্ন রুটে নতুন করে যাত্রী পরিবহন শুরু করেছে অর্ধশতাধিক বাস কোম্পানি। মাওয়া ফেরিঘাটের ভোগান্তি না থাকায় সহজেই      এখন গন্তব্যে যেতে পারছে সড়ক পরিবহনগুলো। তবে ভাঙ্গা থেকে বরিশাল পর্যন্ত ৯৭ কিলোমিটার সরু মহাসড়ক এখন সড়ক যোগাযোগে প্রধান অন্তরায়।

পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগে বরিশাল থেকে ঢাকা রুটে চলাচল করত সাকুরা, হানিফ, ঈগলসহ হাতেগোনা কয়েকটি পরিবহন কোম্পানি। পূর্ব নির্ধারিত সময়ে বাসগুলো ছেড়ে যেত গন্তব্যে। বরিশাল থেকে ঢাকায় যেতে সময় লাগত ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা। এ কারণে যাত্রীরা ছিলেন নৌপথমুখী। ২০২২ সালের ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর দক্ষিণের সড়ক যোগাযোগে বিপ্লব শুরু হয়েছে। ফেরির বিড়ম্বনা না থাকায় গত প্রায় দেড় বছরে বরিশাল রুটে প্রবেশ করেছে সোহাগ, শ্যামলী, শ্যামলী এনআর, এনা, ইউরো, যুমনা লাইন, সৌদিয়া সিল্কি, সৌদিয়া, মিজান, লাবিব, গোল্ডেন লাইন, প্রচেষ্টা, টিআর ট্রাভেলস, চেয়ারম্যান, গ্রীন লাইন, গুনগুনসহ অর্ধশতাধিক নতুন পরিবহন কোম্পানি। মাত্র ৩ থেকে ৪ ঘণ্টায় ঢাকা-বরিশাল রুটে যাতায়াত করতে পারছেন যাত্রীরা। এ কারণে নৌপথ ছেড়ে সড়ক পথে ভিড় করছেন তারা। ভাড়াও কম। শীতাতপ (এসি) বিহীন বাসে সাড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় ঢাকা-বরিশাল রুটে যাতায়াত করতে পারছেন যাত্রীরা। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাসে ১ হাজার ২০০ টাকায় গন্তব্যে যাচ্ছেন তারা। তবে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাসে গন্তব্যে যেতে পারছেন মাত্র ৬০০ টাকায়।

ঢাকা রুটের হানিফ এন্টারপ্রাইজের বরিশাল অফিস ম্যানেজার মো. ইদ্রিস তালুকদার রানা বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগে প্রতিদিন উভয় প্রান্ত থেকে ৬ ট্রিপ করে মোট ১২ ট্রিপ বাস চালাতেন তারা। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর এখন সকাল সাড়ে ৬টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত অর্ধ ঘণ্টা পর পর গন্তব্যের উদ্দেশ্যে বাস      ছাড়ছেন। দিনে সর্বোচ্চ ৩৫ থেকে ৩৬টি সিঙ্গেল ট্রিপও দিয়েছেন।

এ রুটে নতুন আসা সোহাগ পরিবহনের বরিশাল অফিস ম্যানেজার শাহিন আলম বলেন, আমাদের সব বাস শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। ১ হাজার ২০০ টাকা সিট ভাড়ায় প্রতিদিন উভয়প্রান্ত থেকে ৯ ট্রিপ করে ১৮ ট্রিপ বাস চালাচ্ছেন। আলহামদুলিল্লাহ, যাত্রী আছে, অনেক যাত্রী।

বিআরটিসি বরিশাল ডিপো ইনচার্জ মো. জামশেদ আলী বলেন, আগে বরিশাল থেকে বিআরটিসি বাস চলত মাওয়াঘাট পর্যন্ত। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর এখন বরিশাল থেকে সরাসরি গুলিস্তান যাচ্ছে বিআরটিসি বাস। এতে যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্য হচ্ছে। লঞ্চের চেয়ে এখন বাসে যাত্রী চলাচল করছে বেশি।

বরিশাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মো. সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, সড়কপথে যাত্রী পরিবহন বাড়ার পাশাপাশি পণ্য পরিবহনও বেড়েছে। স্বল্প সময়ে যে কোনো পণ্য গন্তব্যে পাঠানো যাচ্ছে। তবে ভাঙ্গা থেকে বরিশাল পর্যন্ত মহাসড়ক অপ্রশস্ত থাকায় চরম দুর্ভোগ হচ্ছে। ঝুঁকি নিয়ে চলতে হচ্ছে। পদ্মা সেতুর সফল কাজে লাগাতে ভাঙ্গা থেকে বরিশাল হয়ে কুয়াকাটা পর্যন্ত ফোরলেন নির্মাণ কাজ ত্বরান্বিত করার দাবি জানান তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর