বুধবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

কলেজছাত্রকে তুলে নিয়ে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীতে আওয়ামী লীগ নেতা আবু সামার বিরুদ্ধে পরীক্ষার্থীকে তুলে এনে জোর করে এক তরুণীর সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে পুলিশের হস্তক্ষেপে ওই নেতার হাত থেকে ছাড়া পেয়ে ছাত্রটি পরীক্ষা দিতে পেরেছেন। সোমবার রাজশাহীর পবা উপজেলার কাটাখালী পৌর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আবু সামা কাটাখালী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি। অভিযোগ আছে, আবু সামা তার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে ওই পরীক্ষার্থীকে আটকে রেখেছিলেন। এ ঘটনায় পরীক্ষার্থীর বাবা সোমবার সন্ধ্যায় চারঘাট থানায় মামলা করার জন্য যান। তবে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামলা নেননি। ভুক্তভোগী কলেজছাত্রের নাম তাইজুল ইসলাম (২১)। তিনি রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার ইউসুফপুর গ্রামের আবদুল হালিমের ছেলে। তাইজুল রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্র। তার প্রথম বর্ষের চূড়ান্ত পর্বের পরীক্ষা চলছে।

তাইজুলের বাবা আবদুল হালিম বলেন, সোমবার দুপুরে পরীক্ষা দিতে অটোরিকশায় চড়ে কলেজে যাচ্ছিলেন তাইজুল। কাটাখালী বাজারে আবু সামা লোকজন দিয়ে অটোরিকশা থেকে জোর করে নামিয়ে তাইজুলকে তার কার্যালয়ে নিয়ে যান। সেখানে তাকে আটকে রাখা হয়। আবু সামা ওই সময় তাইজুলকে বলেন, এক মেয়ের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক আছে। মেয়েটিকে এখনই বিয়ে করতে হবে। তা না হলে তাকে ছাড়া হবে না। ছেলেকে উদ্ধার করতে গেলে তাকেও আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ করেন আবদুল হালিম।

আবদুল হালিমের দাবি, ওই মেয়ে চারঘাটের একটি কলেজে পড়ে। দুই বছর ধরে তার সঙ্গে তাইজুলের কোনো যোগাযোগ নেই। এখন ফাঁদে ফেলে টাকা আদায় করতেই তার ছেলেকে আটক করা হয়েছিল। পরে এক পুলিশ কর্মকর্তার ফোন পেয়ে তাকে ছেড়ে দেন আবু সামা। তাইজুলকে মারধর করা হয়েছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাকে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।

রাজশাহীর মতিহার জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) একরামুল হক বলেন, যখন খবর পান, তখন তিনি ও মতিহার জোনের উপকমিশনার টহলে ছিলেন। সেখান থেকে তিনি ফোন করে ওই ছেলেকে ছেড়ে দিতে বলেন। কারও সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক থাকতেই পারে, এজন্য কেউ তুলে নিয়ে যেতে পারে না। জোর করে বিয়ে দেওয়া যায় না। তিনি ছেলেকে ছেড়ে দিতে বলেছেন। ছেড়ে দিয়েছেন। টাকা চাওয়ার কোনো ঘটনা ছিল কি না, তিনি জানেন না।

আওয়ামী লীগ নেতা আবু সামা বলেন, ছেলে ও মেয়ের মধ্যে দুই বছরের প্রেমের সম্পর্ক। তাই মেয়ের বাবা তাকে ধরেছিলেন। তিনি সেজন্য তার কার্যালয়ে বসে ছিলেন। এর মধ্যে মতিহার জোনের এডিসি ফোন করে তরুণের পরীক্ষার কথা জানিয়ে ছেড়ে দিতে বলেন। তাই তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এর বেশি আর কিছু ঘটেনি। তিনি ওই তরুণকে মারধরের কথা অস্বীকার করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর