শিরোনাম
শুক্রবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

সিলেটে প্রভাব নেই অবরোধের

রংপুরে কম চলছে পরিবহন, অর্থকষ্টে ৫ হাজার শ্রমিক

নিজস্ব প্রতিবেদক সিলেট ও রংপুর

সিলেটে প্রভাব নেই অবরোধের

সর্বাত্মক অবরোধের দ্বিতীয় দিনে গতকাল সিলেটের ব্যস্ততম পয়েন্টগুলোতে ছিল যানজট। অন্যদিকে রংপুরে অবরোধ নিয়ে পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে বিষাদের ছায়া। বিশেষ করে পরিবহন বন্ধ থাকায় চরম অর্থকষ্টে পড়েছেন অন্তত পাঁচ হাজার শ্রমিক। সরেজমিনে দেখা গেছে, সিলেটে প্রায় ‘প্রভাবহীন’ ছিল বিএনপি ঘোষিত তৃতীয় দফা সর্বাত্মক অবরোধের দ্বিতীয় দিন। গতকাল সিলেটে সাপ্তাহিক ছুটির আগের দিন সকাল থেকে নগরজুড়ে সব ধরনের যানবাহন নির্বিঘ্নে চলাচল করেছে। ব্যস্ততম পয়েন্টগুলোতে ছিল যানজট। যদিও অবরোধের কর্মসূচি হিসেবে দিনভর নগরীর বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্ন মিছিল করে বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। সকালে নগরীর শাহী ঈদগাহ এলাকায় একটি পিকআপও ভাঙচুর করে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। অন্যদিকে নগরীর উপশহর পয়েন্টে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ করে জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার আজবাহার আলী শেখ জানিয়েছেন, ২৮ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন জায়গায় সহিংসতা ও পুলিশ আক্রান্তের ঘটনায় ১৭টি মামলায় আসামি করা হয়েছে ৩৮৬ জনকে। অজ্ঞাতনামা আট শতাধিক জনকে আসামি করা হয়েছে। অন্যদিকে রংপুর নগরীর কামারপাড়া ঢাকা কোচ স্ট্যান্ডে কথা হয় হানিফ পরিবহনের হেলপার জাহাঙ্গীর হোসেনের সঙ্গে। তার তিন ছেলে, স্ত্রীসহ পাঁচজনের সংসার। বাসের হেলপারি করে যা আয় হতো তা দিয়ে কোনো রকমে সংসার চলে যেত। পরপর তিন দফা অবরোধে তার সংসারে নেমে এসেছে বিষাদের ছায়া। আয় না থাকায় ধারদেনা করে সংসার চালাতে হচ্ছে। তবে অবরোধের সময়টুকুতে মালিক পক্ষ ১০০ টাকা করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। আরেক পরিবহন শ্রমিক জিল্লুর রহমান বলেন, ‘চারজনের সংসার। কামাই না থাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে খুব কষ্টে রয়েছি।’ একই চিত্র দেখা গেছে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে। সেখানে হাতে গোনা কয়েকজন শ্রমিক রয়েছেন। তারাও কাজ না থাকায় দুঃখ-কষ্টের কথা তুলে ধরেন। তাদের মতো রংপুরে পাঁচ হাজার পরিবহন শ্রমিক অবরোধের কারণে কাজ থাকায় চরম অর্থ কষ্টে রয়েছেন। দুপুরে ঢাকা কোচ স্ট্যান্ড ও কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে এমন দৃশ্য। শ্রমিক নেতারা বলছেন, কাজ না থাকায় শ্রমিকদের দুঃখ-কষ্টের কথা কেউ শুনছে না। বিএনপির ডাকা তৃতীয় দফার অবরোধের কারণে দূরপাল্লার কোনো বাস চলাচল করছে না। সবমিলিয়ে দেখা গেছে, সরকারবিরোধীদের ডাকা অবরোধ কর্মসূচিতে বাসে আগুন লাগার ঘটনায় আতঙ্কে রয়েছে বাস-ট্রাক মালিক শ্রমিক ও যাত্রীরা। পরিবহন মালিকদের দাবি, হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচিতে রংপুরে দিনে ১০ লাখ টাকা ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। যদি একের পর এক এ ধরনের কর্মসূচি অব্যাহত থাকে তাহলে পথে বসতে হবে বাস মালিকদের। রংপুর জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মজিদ বলেন, অবরোধে শ্রমিকদের পাশে কেউ নেই। তাদের আয় পথ বন্ধ।

কীভাবে সংসার চলছে এটা কেউ দেখে নাই। নিরাপত্তা নিয়ে শ্রকিরা উদ্বিগ্ন। তিনি আরও বলেন, নিরাপত্তার বিষয়ে মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কাছে বলা হয়েছে। তিনি বিএনপির প্রতি হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি পরিহার করে অন্য কর্মসূচি দেওয়ার আহ্বান জানান।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর