শুক্রবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

মাতারবাড়ী হবে দক্ষিণ এশিয়ার সিঙ্গাপুর : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী

সোহেল সানি, মাতারবাড়ী (কক্সবাজার) থেকে

মাতারবাড়ী হবে দক্ষিণ এশিয়ার সিঙ্গাপুর : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী

আগামীকাল (শনিবার) দৃশ্যমান হচ্ছে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর। বহুল আলোচিত এ বন্দরের উদ্বোধন কেন্দ্র করে সংশ্লিষ্ট এলাকাজুড়ে চলছে সাজসাজ রব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বন্দর চ্যানেলের উদ্বোধন করবেন। তাই চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। প্রস্তুতি পর্যবেক্ষণ করতে মাতারবাড়ীতে ব্যস্ত সময় পার করেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন তিনি। বন্দর এলাকায় তৈরি করা হয়েছে বিশালাকৃতির সভামঞ্চ। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী চট্টগ্রাম থেকে আসা গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। তিনি বলেন, মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দর হবে দক্ষিণ এশিয়ার সিঙ্গাপুর। সিঙ্গাপুর-কলম্বো থেকে যে লাইটারিং করা হচ্ছে তা কমে যাবে। চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা বন্দরের চাঞ্চল্যও বেড়ে যাবে মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দরের কারণে। শেখ হাসিনার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, যে কোনো দেশে একজন শেখ হাসিনা থাকলে সেই দেশ কখনোই পেছাবে না। বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল বলেন, এ বন্দর অর্থনীতিতে নতুন দিগন্তের সূচনা করবে।

তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী প্রথম টার্মিনালেরও উদ্বোধন করবেন।

উল্লেখ্য, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের কারণে সিঙ্গাপুর ও কলম্বো বন্দর থেকে পণ্য পরিবহন খরচ ১০ থেকে ২০ ভাগ কমে আসবে। দেশের অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকা রাখবে। মাতারবাড়ীতে নতুন করে চাঞ্চল্য ফিরে আসবে। অর্থনীতিতে নতুন দিগন্ত সূচিত হবে। মাতারবাড়ী শহর হবে। এখানে শিল্পায়ন হবে। বিপুল সংখ্যক শিল্পপ্রতিষ্ঠান হবে। ব্যাপক কর্মসংস্থান হবে।

কক্সবাজার জেলার মাতারবাড়ীতে শুরু হয়েছে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর টার্মিনালের নির্মাণকাজ। দেশের প্রথম ও একমাত্র গভীর সমুদ্রবন্দর স্থাপনের জন্য ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি ২০ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। মাতারবাড়ী টার্মিনাল বাস্তবায়িত হলে ১৬ মিটার বা ততোধিক গভীরতাসম্পন্ন বাণিজ্যিক জাহাজ গমনাগমন করতে পারবে, যা দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে মাইলস্টোন হিসেবে কাজ করবে। এখানে বড় ধরনের ফিডার ভেসেল আসবে। অর্থ ও সময় বাঁচবে। অর্থনীতিতে সুপ্রভাব ফেলবে। গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের লক্ষ্যে ৩৫০ মিটার প্রশস্ত ও ১৬ মিটার গভীরতাসম্পন্ন ১৪ দশমিক ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ অ্যাপ্রোচ চ্যানেলের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। এ ছাড়া অ্যাপ্রোচ চ্যানেলের উত্তর পাশে ২ হাজার ১৫০ মিটার দীর্ঘ ও দক্ষিণ পাশে ৬৭০ মিটার দীর্ঘ ব্রেক ওয়াটার (ঢেউ নিরোধক বাঁধ) নির্মাণকাজ সমাপ্ত হয়েছে। বর্তমানে ৪৬০ মিটার দীর্ঘ কনটেইনার জেটি ও ৩০০ মিটার দীর্ঘ মাল্টিপারপাস জেটি নির্মাণ এবং কনটেইনার ইয়ার্ডসহ বন্দর সুবিধাদি নির্মাণের কাজ চলমান। ২০২৬ সালের মধ্যে আনুমানিক ০.৬ থেকে ১.১ মিলিয়ন টিইইউস (২০ ফুট দৈর্ঘ্যরে কনটেইনার) এবং ২০৪১ সালের মধ্যে আনুমানিক ২.২ থেকে ২.৬ মিলিয়ন টিইইউস কনটেইনার কার্গো হ্যান্ডেল করা সম্ভব হবে। প্রকল্পের সড়ক ও জনপথ অংশে ২৭.৭ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের মাধ্যমে মাতারবাড়ী বন্দরের সঙ্গে ন্যাশনাল হাইওয়ের সংযোগ স্থাপন করার কাজ চলমান।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর