রবিবার, ১২ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

আজ ভয়াল ১২ নভেম্বর

ভোলা প্রতিনিধি

আজ ভয়াল ১২ নভেম্বর। ১৯৭০ সালের এই দিনে প্রলয়ঙ্করি ঘূর্ণিঝড় গোর্কির আঘাতে দক্ষিণাঞ্চলের ৪ লাখেরও বেশি ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৩৬ লাখ মানুষ। শুধু ভোলাতেই মারা যায় লক্ষাধিক  মানুষ। ঘটনার ৫৩ বছর পরও সেই দুঃসহ স্মৃতি ভুলতে পারছেন না দক্ষিণ জনপদের ক্ষতিগ্রস্তরা। সেই স্মৃতি মনে পড়লে আজও আঁতকে ওঠেন তারা। সেই সময়ের চিত্র তুলে ধরেছিলেন তৎকালীন পূর্বদেশ পত্রিকার ভোলা সংবাদদাতা বর্তমানে ভোলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর রাতে ভয়াল ঘূর্ণিঝড় গোর্কির ছোবলে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিল ভোলার বিস্তীর্ণ জনপদ। জেলার মনপুরা, চরফ্যাশন, চরনিজাম, ঢালচর, কুকরি-মুকরিসহ গোটা এলাকা মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়।

স্থানীয়দের মতে, কয়েক লাখ মানুষ মারা গিয়েছিল ভোলায়। তিনি বলেন, এই ঘটনার চার দিন পর তার পাঠানো প্রতিবেদন ‘কাঁদো বাঙালি কাঁদো, ভোলার গাছে গাছে ঝুলছে লাশ’ এই শিরোনামে দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদটি ব্যাপক আলোচিত হয়েছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সেই দিন ভোলার এমন কোনো গ্রাম ছিল না, যেখানে কেউ না কেউ মারা যায়নি। আশ্রয়কেন্দ্র না থাকায় গাছে উঠে প্রাণ বাঁচায় অনেকে। ঘরবাড়ি, ফসল আর প্রিয়জন হারিয়ে শোকে কাতর হয়ে পড়েন মানুষ।

১৯৭০ সালের জলোচ্ছ্বাসের পরপরই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের দুর্দশা নিজ চোখে দেখার জন্য ভোলায় আসেন।  মনপুরা ও কুকরি-মুকরিসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশেই ভোলার মানুষের জানমাল এবং গবাদিপশু রক্ষায় বনায়ন ও কিল্লা নির্মাণের কাজ শুরু হয়। গত পাঁচ দশকে ভোলার বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলে এবং উপকূলীয় এলাকায় নির্মাণ করা হয়েছে অসংখ্য আশ্রয় কেন্দ্র। এ ছাড়াও উপকূলের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে নির্মাণ করা হচ্ছে। যাতে ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনা যায়।

ভোলার জেলা প্রশাসক মো. আরিফুজ্জামান জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরে উপকূলবাসীকে ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষার জন্য সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিগত যে কোনো সময়ের তুলনায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিশেষ করে ঝড়-জলোচ্ছ্বাস মোকাবিলায় সর্বোচ্চ সক্ষমতা রয়েছে। বর্তমানে জেলায় ৮৬৯টি আশ্রয় কেন্দ্র এবং ১২টি মুজিব কিল্লা রয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে ১৩ হাজার ৮০০ সিপিপি স্বেচ্ছাসেবী। তাছাড়া দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সহায়তা সব সময় মজুদ থাকে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর