শিরোনাম
বুধবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

সিলেটে পরিত্যক্ত কূপে গ্যাসের সন্ধান

দৈনিক মিলবে ৭০ লাখ ঘনফুট গ্যাস, আগামী সপ্তাহ থেকে উত্তোলন

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সিলেটে পরিত্যক্ত কূপে গ্যাসের সন্ধান

সিলেটে পরিত্যক্ত কূপে গ্যাস মজুদের সন্ধান মিলেছে। আগামী সপ্তাহ থেকে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের (এসজিএফএল) মালিকানাধীন কৈলাশনটিলা গ্যাসক্ষেত্রের ২ নম্বর কূপের নতুন লেয়ার (স্তর) থেকে গ্যাস উত্তোলন করে জাতীয় সঞ্চালন লাইনে সরবরাহ করার কথা রয়েছে। প্রতিদিন ওই কূপ থেকে ৭০ লাখ ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন ও ৭০ ব্যারেল কনডেনসেট উৎপাদন সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। ওই কূপে উত্তোলনযোগ্য ৫৩ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুদ রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এসজিএফএল কর্মকর্তারা গ্যাস মজুদ ও উত্তোলনের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এসজিএফএল সূত্র জানায়, জ্বালানি সংকট নিরসনে গ্যাস উৎপাদন বাড়াতে সরকার দেশের বিভিন্ন গ্যাসক্ষেত্রে ৪৬টি কূপ অনুসন্ধান, খনন ও পুনঃখননের উদ্যোগ নেয়। ২০২৫ সালের মধ্যে কূপগুলোর খনন কাজ শেষ হওয়ার কথা। অনুসন্ধান ও খনন কাজ শেষে কূপগুলো থেকে ৬১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস প্রাপ্তির সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এসজিএফএলের মালিকানাধীন ১৪টি কূপ খনন ও পুনঃখননের কাজ শুরু হয়। এর মধ্যে তিনটি কূপের কাজ শেষ করে গত বছর থেকে উৎপাদন শুরু হয়। এবার আরেকটি কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলনের চূড়ান্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন হলো। উৎপাদনে যাওয়া কূপগুলোর মধ্যে রয়েছে সিলেট-৮, কৈলাশনটিলা-৭ ও বিয়ানীবাজার-১। এ তিনটি কূপ থেকে দৈনিক ১৬ থেকে ১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করে জাতীয় সঞ্চালন লাইনে সরবরাহ করা হচ্ছে। এই তিনটি মিলে বর্তমানে এসজিএফএলের আওতাধীন ১৩টি কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন হচ্ছে। এগুলো থেকে দৈনিক প্রায় ৯৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে। গ্যাস পাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করে এসজিএফএলের মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) প্রকৌশলী আবদুল জলিল প্রামাণিক জানান, কূপটি থেকে বাণিজ্যিকভাবে উত্তোলন করে জাতীয় সঞ্চালন লাইনে গ্যাস সরবরাহ করতে আরও এক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। এই কূপ থেকে প্রতিদিন ৭০ লাখ ঘনফুট গ্যাস উত্তোলনের সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া উপজাত হিসেবে দৈনিক ৭০ ব্যারেল কনডেনসেট উৎপাদনেরও সম্ভাবনা রয়েছে। কূপটির একাধিক লেয়ারে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেছে। তিনি জানান, কূপটির ওয়ার্কওভারে প্রায় ৭১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয় হচ্ছে। পুরো ব্যয় নির্বাহ করছে এসজিএফএল।

জানা গেছে, বর্তমান বাজার বিবেচনায় ওই কূপে উত্তোলনযোগ্য ৫৩ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের মূল্য ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। আর এলএনজির বাজার বিবেচনায় উক্ত গ্যাসের মূল্য ৯ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। প্রসঙ্গত, ১৯৫৫ সালে সিলেটের হরিপুরে প্রথম গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর আবিষ্কৃত হতে থাকে একের পর এক গ্যাসক্ষেত্র। বর্তমানে এসজিএফএলের আওতায় পাঁচটি গ্যাসক্ষেত্র আছে। সেগুলো হলো- হরিপুর গ্যাস ফিল্ড, রশিদপুর গ্যাস ফিল্ড, ছাতক গ্যাস ফিল্ড, কৈলাশনটিলা গ্যাস ফিল্ড ও বিয়ানীবাজার গ্যাস ফিল্ড। এর মধ্যে ছাতক গ্যাস ফিল্ড পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে। বাকিগুলোর মধ্যে ১৩টি কূপ থেকে বর্তমানে প্রতিদিন ৯৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর