শুক্রবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
রাজশাহীর রাজনীতি

উজ্জীবিত আওয়ামী লীগ, নিখোঁজ বিএনপি

শান্তি সমাবেশ করে শক্ত অবস্থানে ক্ষমতাসীনরা, গ্রেফতারের ভয়ে আতঙ্কিত বিরোধীরা

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

আগে থেকেই এক দফার আন্দোলনে আছে বিএনপি। পুলিশের ধরপাকড় শুরু হওয়ার পর দলটির মহানগর থেকে ওয়ার্ড, জেলা থেকে ইউনিয়ন সকল পর্যায়ের নেতা এখন ঘরছাড়া। গ্রেফতার হয়ে দেশের বিভিন্ন কারাগারে অনেক নেতা-কর্মী। ঠিক তার বিপরীত চিত্র আওয়ামী লীগে। বিএনপির অবরোধ-হরতাল কর্মসূচি দেওয়ার পর থেকে মাঠ দখলে রেখেছেন দলটির নেতা-কর্মীরা। শান্তিসমাবেশের নামে নগর ও জেলা জুড়ে অবস্থান দলটির নেতা-কর্মীদের। তফসিল ঘোষণার পর এখন আরও উজ্জীবিত আওয়ামী লীগ। যদিও নানা গ্রুপে বিভক্ত স্থানীয় আওয়ামী লীগ।

এক মাসের বেশি সময় ধরে বিএনপির রাজশাহী মহানগরী কার্যালয় তালাবদ্ধ। একাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী এবং এবারের নির্বাচনে আগ্রহীর বেশির ভাগই আত্মগোপনে। কারাগারে আছেন গত নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে অংশ নেওয়া এক প্রার্থী। বিএনপি নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশের দুই দিন আগে রাজশাহীতে পুলিশের ধরপাকড় শুরু হয়। গত ২০ দিনে মহানগরী বিএনপির প্রায় ২০০ এবং জেলা বিএনপির প্রায় ৩০০ নেতা-কর্মী গ্রেফতার হয়েছেন। এর বাইরে জামায়াতের শতাধিক নেতা-কর্মী গ্রেফতার হয়েছেন। অভিযান চলছে প্রতি রাতেই। দলটির থানা ও ওয়ার্ড কমিটির নেতারাও এখন বাড়িতে থাকতে পারছেন না। বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা জানান, গত ২০ দিনে রাজশাহী নগরী ও জেলার থানাগুলোয় দলটির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ৭০টি মামলা হয়েছে। এতে আসামি করা হয়েছে ৩ হাজারের বেশি নেতা-কর্মীকে। নিম্ন আদালতে গ্রেফতার নেতা-কর্মীদের জামিন মিলছে না। নগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ঈশা জানান, একাদশ সংসদ নির্বাচনে রাজশাহীর ছয়টি আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপি নেতারা অংশ নেন। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে বিভিন্ন সময় বিএনপি প্রার্থীরা এলাকায় তৎপরতা চালিয়েছেন। ২৮ অক্টোবরের পর থেকে তাদের প্রায় সবাই আত্মগোপনে। সব প্রার্থীর বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগে নতুন করে মামলা হয়েছে। রাজশাহী-৩ আসনের গত নির্বাচনের প্রার্থী নগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন। তাঁর বিরুদ্ধে নতুন তিনটি মামলা হয়েছে। রাজশাহী-৬ আসনের প্রার্থী ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাইদ চাঁদ গ্রেফতার হয়ে চার মাসের বেশি কারাগারে। রাজশাহী-২ আসনে গত নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন সাবেক এমপি মিজানুর রহমান মিনু। ধরপাকড় শুরুর পর থেকে তিনি আত্মগোপনে।

নির্বাচন ও তফসিল নিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন শওকত বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা জেলে, কর্মীরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এটা কোনো নির্বাচনের পরিবেশ হলো? বিএনপি এ তফসিল প্রত্যাখ্যান করেছে।

বিএনপি নেতারা যখন আত্মগোপনে, তখন উজ্জীবিত আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, তফসিল ঘোষণার পর নেতা-কর্মীরা নতুন উদ্যমে জেগে উঠেছেন। নির্বাচন সফল এবং বিএনপির আন্দোলন প্রতিহত করতে কর্মীরা এখন ঐক্যবদ্ধ। নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার বলেন, তফসিল ঘোষণার পর সব কর্মী নতুন করে উজ্জীবিত। যে কোনো মূল্যে নৌকাকে আবার বিজয়ী করতে সবাই ঐক্যবদ্ধ।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে নেতা-কর্মীরা এখন উজ্জীবিত এবং সক্রিয়। প্রতিটি আসনে একাধিক প্রার্থী সক্রিয়। দল যাকে মনোনয়ন দেবে, সবাই তার পক্ষে কাজ করার বিষয়ে একমত।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর