শুক্রবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভালো নেই পরিবহন শ্রমিকরা

হরতাল অবরোধে দিন কাটছে অনাহারে অর্ধাহারে

ইমরান এমি, চট্টগ্রাম

ভালো নেই পরিবহন শ্রমিকরা

‘যেদিন গাড়ির চাকা ঘুরে, সেদিন টাকা পাই। গাড়ির চাকা বন্ধ তো টাকাও বন্ধ। আমাদের এমন অবস্থা হয়েছে, কাজ করলে ভাত জোটে, না হলে অনাহারে থাকতে হয়। আর হরতাল-অবরোধ চললে তো কথা নেই, যাত্রী না থাকার কারণে গাড়ি চলে না। গাড়ির চাকা না চললে আমাদের পেটেও ভাত জোটে না। ছেলেমেয়ে আর পরিবার নিয়ে না খেয়েই থাকতে হচ্ছে আমাদের’। কথাগুলো বলছিলেন বাসের হেলপার মো. শফি। নগরের কদমতলী শুভপুর বাসস্ট্যান্ডে কথা হয় তার সঙ্গে। এভাবে অবরোধে নিজেদের পেটে ভাত না জোটার কথা অকপটে স্বীকার করছেন এ শ্রমিক। শুধু শফি নয়, এভাবেই অর্ধাহার আর অনাহারে দিন কাটছে চট্টগ্রাম আন্তজেলা সড়কের প্রায় ১০ হাজার শ্রমিকের। যাদের বেশির ভাগেরই সংসার চলে দিন এনে দিন খেয়ে। অবরোধের কারণে আন্তজেলা পরিবহন চলছে না। ফলে বেকার হয়ে পড়ছেন ১০ হাজারের বেশি শ্রমিক। বাঁধন পরিবহনের হেলপার শাহজাহান বলেন, পরিবহন শ্রমিকরা দিনের বেতন দিনেই পান। যেদিন কাজ করবেন না, সেদিন বেতনও পাবেন না। আর হরতাল-অবরোধে অঘোষিতভাবে পরিবহন শ্রমিকদের বেতন বন্ধ থাকে। শুধু খোরাকি বাবদ দিনে ৫০ টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু বর্তমানে হোটেলে দুই বেলা ভাত খেতে ১০০ টাকায় তো কিছুই হয় না। তার ওপর সংসার আছে, বউ বাচ্চা আছে। গাড়ি বন্ধ থাকায় সংসার চালানো খুবই কঠিন হয়ে পড়তেছে। চট্টগ্রাম আন্তজেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, আমরা শ্রমিকদের কল্যাণে কাজ করছি। হরতাল-অবরোধের কারণে গাড়ি বের করা যাচ্ছে না, যাত্রীও নেই। যার কারণে শ্রমিকদের দিনযাপন করতে কষ্ট হচ্ছে। আমরা আমাদের সমিতির পক্ষ থেকে শ্রমিকদের সহযোগিতা করছি। আমাদের কার্ডভুক্ত পরিবহন শ্রমিক আছে ৭ হাজারের মতো। এ ছাড়া কার্ড ছাড়া আরও প্রায় ৩ হাজারের মতো শ্রমিক আছে। এসব শ্রমিকের জীবন গাড়ির চাকার ওপর নির্ভর, গাড়ির চাকা চললে জীবনও ভালো চলে, চাকা না চললে জীবনও চলে না। বাঁধন পরিবহনের সুপারভাইজার হারুনুর রশিদ বলেন, আগে চট্টগ্রাম থেকে নোয়াখালীতে ৪০টির মতো বাস যাত্রী নিয়ে চলাচল করত। হরতাল-অবরোধের কারণে আজ এক সপ্তাহের বেশি গাড়ি যাচ্ছে না। হরতাল-অবরোধে তো ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালানো যাবে না। গাড়ির চাকা ঘুরলে আমাদের পেটে ভাত পড়বে, না ঘুরলে পেটে ভাতও পড়ে না। গাড়ির চাকা ঘুরলে যে টাকা মেলে তা দিয়ে এক দিন চলে, এক দিন না গেলে অবস্থা খারাপ হয়ে যায়।

২৯ অক্টোবর থেকে হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচি চলছে। এসব কর্মসূচিতে যাত্রীবাহী বাসে যাত্রী বেশে উঠে অগ্নিসংযোগ করছে দুর্বৃত্তরা। ফলে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সড়কে নিরাপত্তাহীনতার কারণে আন্তজেলার পাশাপাশি নগরে চলাচল করা পরিবহনও কম চলছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর