রবিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
চট্টগ্রাম শাহ আমানত সেতু

লাইন খরচের নামে চাঁদাবাজি

ইমরান এমি, চট্টগ্রাম

চলমান অবরোধ ও হরতাল কর্মসূচিতে এমনিতেই নাকাল পরিবহন শ্রমিকরা। সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। তার ওপর যোগ হয়েছে ‘লাইন খরচ’ নামে সংগঠনের চাঁদাবাজি। নির্দিষ্ট পরিমাণের চাঁদা দিতে না পারলে মারধর করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন শ্রমিকরা। নগরের শাহ আমানত সেতু এলাকায় কথিত শ্রমিক নেতা ও দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের যোগসাজশে প্রতিদিন লাখ টাকা চাঁদাবাজি চলছে। অথচ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃৃপক্ষ এ ব্যাপারে রহস্যজনক নীরবতা পালন করছে। ফলে দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে কথিত শ্রমিক সংগঠনগুলো। সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) প্রকৌশলী আবদুল মান্নান মিয়া বলেন, অভিযোগের বিষয়ে আমি তদন্ত করব। যদি সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নগর ট্রাফিক পুলিশের টিআই (প্রশাসন) দক্ষিণ রফিকুল ইসলাম বলেন, এ ধরনের কোনো অভিযোগ আমাদের কেউ দেয়নি। যদি কোনো অভিযোগ দেয় তাহলে আমরা ব্যবস্থা নেব। নিজেকে শ্রমিক ইউনিয়নের সহসভাপতি দাবি করে অভিযুক্ত সাদ্দাম হোসেন বলেন, আমরা যে টাকা আদায় করি তা দিয়ে লাইনম্যানদের বেতন ও অফিস খরচ চলে। কোনো চালক উচ্ছৃঙ্খলতা করলে তা তো আমাদের দেখতে হবে। লাইনে গাড়ি চললে লাইনের খরচ দিতে হবে। তবে মারধর করার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।

শ্রমিকদের অভিযোগ, নগরের শাহ আমানত সেতুর শহীদ বশরুজ্জামান গোল চত্বর এলাকা থেকে বহদ্দারহাট-ওয়াসা মোড় ৭ নম্বর রুটে চলাচল করছে প্রায় ৭০০-এর মতো মাহিন্দ্রা। যদিও এ রুটে বিআরটিএ অনুমোদিত যানবাহনের সংখ্যা মাত্র ২০০। বাকি প্রায় ৫০০ যানবাহন অবৈধভাবে চলাচল করছে শ্রমিক সংগঠন ও ট্রাফিক পুলিশকে দৈনিক ও মাসিক ভিত্তিতে মাসোহারা দিয়ে। তার মধ্যে নতুনব্রিজ এলাকার ট্রাফিক সার্জেন্ট দৈনিক ৩০০ টাকা ও ট্রাফিক সদস্য ২০০ টাকা করে আদায় করেন। এরপর চালকদের কাছ থেকে লাইন খরচের নামে স্থানীয় সাদ্দাম হোসেন ও মনির নামে দুই কথিত শ্রমিক নেতার নেতৃত্বে আদায় করা হয় প্রতি গাড়ি থেকে দৈনিক ১৫০ টাকা। আর এসব টাকা আদায় করেন লাইনম্যান আবুল কাশেম ও মনির। ৭ নম্বর রুটে গাড়ি চালালেই দৈনিক ১৫০ টাকা করে দিতে হবে। নতুনব্রিজের পর আবার বহদ্দারহাট এলাকায় লাইনের সেক্রেটারি হোসেনের নামে আদায় করা হয় ১০০ টাকা করে। এখন হরতাল ও অবরোধ চলছে। গাড়ি কম চলছে, যাত্রীও কম। তার মধ্যে লাইন খরচ বাবদ এসব টাকা না দিলে মারধর করা হয়। গত বৃহস্পতিবার লাইনের খরচ দিতে না পারায় নতুনব্রিজের লাইনম্যান এক চালককে মারধর করে। সাদ্দামের কাছে অভিযোগ দিলে সে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, টাকা না দিলে লাইনে গাড়ি চলতে দেওয়া হবে না।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর