বুধবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে যোগাযোগ খাতে বিপ্লব

বিদেশি বিনিয়োগের হাতছানি, স্থাপন হবে নতুন নতুন শিল্পকারখানা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের যোগাযোগ খাতে সৃষ্টি হয়েছে বিপ্লব। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ অন্যান্য মেগা প্রকল্প পর্যটন ও শিল্পায়নে নতুন মাত্রা যুক্ত করবে। স্থাপন হবে নতুন নতুন শিল্প-কারখানা। আসবে বিদেশি বিনিয়োগ। সব মিলিয়ে অর্থনীতিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা। অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. মইনুল ইসলাম বলেন, টানেলসহ যোগাযোগ খাতে যে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা হয়েছে তা দূরদর্শী। এগুলোর কারণে বিদেশি বিনিয়োগের বিশাল সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে।

চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি ওমর হাজ্জাজ বলেন, উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা দেশের উন্নয়নের চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে। চট্টগ্রামের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ সরকারের নেওয়া যোগাযোগ খাতের প্রকল্পগুলো যুগান্তকারীই বলা যায়। এ প্রকল্পগুলোর কারণে চট্টগ্রাম তথা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আকৃষ্ট করবে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের।’ চীনের সাংহাই শহরের আদলে চট্টগ্রাম নগরী ও আনোয়ারা উপজেলাকে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ পরিণত করতে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে তৈরি করা হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’। এ টানেলকে দেশের অর্থনীতির জন্য গেমচেঞ্জার হিসেবে মনে করা হচ্ছে। দেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হবে শূন্য দশমিক ১৬৬ শতাংশ। টানেলকে কেন্দ্র করে কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পার আনোয়ারা উপজেলায় গড়ে উঠছে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল। নদীর অপর প্রান্তে শিল্পায়নের ফলে এ অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হবে। পূর্বপ্রান্তে শিল্পকারখানার কাঁচামাল ও প্রস্তুতকৃত পণ্য চট্টগ্রাম বন্দর, বিমানবন্দর এবং দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে পরিবহন প্রক্রিয়া সহজ হবে। সারা দেশের সঙ্গে পর্যটন নগরী কক্সবাজারের রেল যোগাযোগ স্থাপন করতে তৈরি করা হয়েছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন। ১ ডিসেম্বর রেললাইন সাধারণ জনগণের জন্য উন্মুক্ত হলে দেশের পর্যটন খাত এগিয়ে যাবে আরেক ধাপ। এ ছাড়া পর্যটক ও স্থানীয় জনগণের জন্য নিরাপদ, আরামদায়ক, সাশ্রয়ী যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি হবে। রেলে করে সহজ ও কম খরচে মাছ, লবণ, কাগজের কাঁচামাল, বনজ ও কৃষিজ দ্রব্যাদি পরিবহন করা যাবে। পর্যটকদের কক্সবাজার ভ্রমণ আরামদায়ক ও যানজট মুক্ত হবে। এ ছাড়া প্রকল্পটি পুরোদমে চালু হলে মিয়ানমার, চীনসহ ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের করিডরে যুক্ত হবে বাংলাদেশ। চট্টগ্রাম নগরীর যানজট নিরসনে উদ্বোধন হয়েছে বহুল কাক্সিক্ষত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। জানুয়ারির মধ্যে তা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। এ মেগা প্রকল্প চালু হলে চট্টগ্রাম নগরীর প্রাণকেন্দ্র খ্যাত জিইসি মোড় থেকে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর, পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত, কর্ণফুলী টানেল এলাকায় পৌঁছা যাবে ২০ মিনিটের মধ্যে। এতে অন্তত দুই ঘণ্টা সাশ্রয় হবে যাত্রীদের। এক্সপ্রেসওয়ের কারণে পর্যটন, ব্যবসা-বাণিজ্য ও স্থানীয় যোগাযোগে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসবে। কর্ণফুলী টানেলের সঙ্গে দক্ষিণ চট্টগ্রাম, বান্দরবান ও কক্সবাজারগামী যানবাহন চলাচলেও গতি আসবে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম নগরীর যানজট নিরসনে সম্প্রতি উদ্বোধন করা হয়েছে বায়েজিদ-ফৌজদার হাট লিংক রোড, বাকলিয়া এক্সে রোড। এ প্রকল্পগুলো চট্টগ্রামের যোগাযোগ ক্ষেত্রে অন্য মাত্রা যোগ করেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর