বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

চলতি বছরে ৪৪৯ শিশু হত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি বছরে ৪৪৯ শিশু হত্যা

চলতি বছরের ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত ৪৪৯ শিশু হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে। একই সময়ে ৯৭১ জন শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৩৯২ শিশু। গতকাল বাংলাদেশের শিশু অধিকার পরিস্থিতি ও করণীয় নিয়ে আয়োজিত সংলাপে এসব তথ্য জানানো হয়। আসন্ন নির্বাচন কেন্দ্র করে রাজনৈতিক কর্মকান্ডে শিশুদের ব্যবহার না করার পাশাপাশি যে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে শিশুরা যাতে ঝুঁকিতে না পড়ে সেটি নিশ্চিত করার জন্য কোয়ালিশনের পক্ষ থেকে সব রাজনৈতিক দল ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহকে আহ্বান জানিয়েছেন বক্তারা। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘সাংবাদিকদের সাথে সংলাপ : বাংলাদেশের শিশু অধিকার পরিস্থিতি ও করণীয়’ শিরোনামে সংলাপের আয়োজন করে কয়েকটি সংস্থা। সেভ দ্য চিলড্রেনের চাইল্ড রাইটস গভর্ন্যান্স অ্যান্ড চাইল্ড প্রটেকশন বিভাগের পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুনের পরিচালনায় সাংবাদিকদের সঙ্গে সংলাপে সাংবাদিকরা তাদের কাজের অভিজ্ঞতার পরিপ্রেক্ষিতে শিশু অধিকার সংক্রান্ত বিভিন্ন দিক তুলে আনেন। সংলাপে গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের কো-অর্ডিনেটর তামান্না হক রীতি। তিনি জানান, সারা দেশে ২০২০ সালে ১ হাজার ৭১৮ জন, ২০২১ সালে ১ হাজার ৪২৬ জন, ২০২২ সালে ১ হাজার ৮৮ জন এবং ২০২৩ সালে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত ৯৭১ জন শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। তিনি আরও জানান, ২০২২ সালে ৫১৬ জন শিশু হত্যাকান্ডের শিকার হয়। এ বছর ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত ৪৪৯ শিশু হত্যাকান্ড ঘটে। এ বছর ৮১ জন শিশু শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে বখাটেরা উত্ত্যক্ত করে ৫৬ শিশুকে। গত বছর সেই সংখ্যা ছিল ৬৬টি। শিশু ধর্ষণের ঘটনার কথা তুলে ধরে তিনি জানান, ২০২০ সালে ১ হাজার ১৮ জন, ২০২১ সালে ৭৭৪ জন, ২০২২ সালে ৫৬১ জন এবং ২০২৩ সালের ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত ৩৯২ জন শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ২০২৩ সালে ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হয়েছে ১৯ জন। ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছে তিনজন। ২০২৩ সালের এ পর্যন্ত শিক্ষকের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছে ২৩৯ জন শিক্ষার্থী। শিক্ষকের কাছে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে ২৮ জন শিশু। সংলাপে আরও জানানো হয়, এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে এখনো বাল্যবিয়ের শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ, যা মাতৃস্বাস্থ্য ও শিশুস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। দেশের ৫১ শতাংশ কিশোরী বাল্যবিয়ের শিকার হচ্ছে এবং তাদের ২৭ শতাংশের বিয়ে হচ্ছে ১৫ বছর বয়স হওয়ার আগেই। যোগ্যতাভিত্তিক যে নতুন শিক্ষা কারিকুলাম চালু করা হয়েছে তার সুফল নিশ্চিত করতে শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্টদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ, প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া আবশ্যক বলে অংশগ্রহণকারীরা মনে করেন। একই সঙ্গে রাজনৈতিক সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন নিশ্চিতেরও দাবি তোলা হয় এ সংলাপ থেকে।

বিভিন্ন দৈনিক সংবাদপত্রের পাওয়া তথ্যসহ আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্যানুসন্ধান, আসকের হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার ফোরাম এবং কমিউনিটিভিত্তিক সংগঠনগুলো দ্বারা সংগৃহীত তথ্য ও সমন্বয়কারীদের নিজস্ব পর্যবেক্ষণে এসব তথ্য উঠে আসে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর