রবিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

সড়কে সমন্বয়হীনতা, যানজটে বাড়ছে ভোগান্তি

খুলনায় ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণ ও ডিজিটাল ট্রাফিক সিগন্যালসহ পাঁচ দাবি

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

সড়কে সমন্বয়হীনতা ও নিয়ন্ত্রণহীন ইজিবাইকের চাপে খুলনায় যানজটে ভোগান্তি বাড়ছে। বেদখল হওয়া ফুটপাথ দিয়ে চলাচলের সুযোগ নেই। সেই সঙ্গে অধিকাংশ বহুতল ভবনে নিজস্ব কার পার্কিং না থাকায় সড়কেই ব্যক্তিগত গাড়ি, মাইক্রোবাস, অ্যাম্বুলেন্স, রিকশাভ্যান অবস্থান নেয়। ফলে বাধ্য হয়ে সড়ক দিয়ে পথচারীদের চলতে হয়। এতে যানজটের পাশাপাশি দুর্ঘটনাও বাড়ছে।

জানা যায়, খুলনা নগরীতে সড়কে চলাচলের ক্ষেত্রে আধুনিক ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা নেই। ট্রাফিক পুলিশকে হাতের ইশারায় যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। এ ছাড়া গতি নিয়ন্ত্রণে শহরজুড়ে অপরিকল্পিভাবে ‘স্পিড ব্রেকার’ তৈরি করা হচ্ছে। এতে বাড়ছে নাগরিক ভোগান্তি। জানা যায়, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ডাকবাংলা মোড় থেকে পিকচার প্যালেস হয়ে থানার মোড় পর্যন্ত ইজিবাইক চলাচল নিষিদ্ধ করেছে পুলিশ। এ কারণে শিববাড়ী মোড় থেকে নতুন রেলস্টেশন হয়ে বার্মাসিল রোড বাজারের মধ্য দিয়ে কেডি ঘোষ রোড হয়ে কোর্ট এলাকা পর্যন্ত ইজিবাইকের রুট তৈরি হয়েছে। বাজার এলাকায় মালামাল নিতে অনেক সময় সড়কে ট্রাক পিকআপ দাঁড়িয়ে থাকে। তখন ট্রাক, পিকআপ, ইজিবাইক, রিকশাভ্যান পথচারী সব মিলিয়ে যানজটে ভোগান্তি তৈরি হয়। একইভাবে ময়লাপোতা থেকে নিরালা পর্যন্ত চার লেনের সড়কে সুবিধামতো রোড ডিভাইডারে ক্রসিং না থাকায় কেসিসি সান্ধ্যবাজার ও বসুপাড়া চিরুনি ফ্যাক্টরির মোড় থেকে গাড়ি বের হয়ে উল্টোপথে দীর্ঘ পথ ঘুরতে হয়। সরেজমিন দেখা যায়, ট্রাফিক পুলিশের মনিটরিং না থাকায় সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড থেকে বিভিন্ন রুটের বাসগুলো বের হয়ে যাত্রী উঠানোর জন্য দীর্ঘক্ষণ মূল সড়কে অবস্থান নেয়। এতে মজিদ সরণি, সোনাডাঙ্গা থানার সামনে এমএ বারী রোড, গল্লামারী ও বাইপাস মোড় এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। গল্লামারী থেকে বটিয়াঘাটা রোড, ডাকবাংলা, ময়লাপোতা সাতরাস্তা মোড়ে ফুটপাত দখল ও সড়কের পাশে অস্থায়ী বাজার, দোকানঘর থাকায় যানজট তৈরি হচ্ছে। এ ছাড়া কেডিএ এভিনিউ, খানজাহান আলী রোডসহ আরও কয়েকটি সড়কে গড়ে ওঠা হাসপাতাল-ক্লিনিকে নিজস্ব গ্যারেজ না থাকায় প্রতিষ্ঠানের সামনেই অ্যাম্বুলেন্স, প্রাইভেটকার, রিকশাভ্যান রাখা হয়। এতে যান চলাচলে ভোগান্তি বাড়ছে। কেসিসি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, নগরীতে গুরুত্বপূর্ণ সড়কের ২২টি মোড় প্রশস্ত ও আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। ক্লে রোড ও কেডি ঘোষ রোডের ড্রেন ফুটপাত ছোট করে দুই পাশের সড়ক চওড়া করা হয়েছে। কিন্তু ফুটপাতের অবৈধ দখল ও সড়কে যানবাহনের আধিক্যের কারণে সুফল মেলেনি। যানজট নিরসনে পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে নিরাপদ সড়ক চাই, খুলনা নগর সম্পাদক মাহবুবুর রহমান মুন্না। তিনি বলেন, নগরীর সব সড়কে ডিজিটাল ট্রাফিক সাইন সিগন্যাল স্থাপন, ফুটপাত দখলমুক্ত, সড়কে ইট-বালুর ব্যবসা বন্ধ, রিকশা-ইজিবাইক চালকদের চলাচলের প্রশিক্ষণ ও অবৈধ ইজিবাইক, মাহেন্দা, ইঞ্জিনচালিত রিকশা বন্ধ করা।

বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ-উজ্জামান বলেন, যানজটের মূল কারণ সড়কে নিয়ন্ত্রহীন ইজিবাইক। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ইজিবাইক চলাচল বেড়ে যাওয়ায় সড়কে বিশৃঙ্খলা বাড়ছে।

তবে যানজটের জন্য অবৈধ ইজিবাইকের দিকেই আঙুল তুলছে কেএমপির ট্রাফিক বিভাগ। ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, কেসিসি ৮ হাজার ইজিবাইকের লাইসেন্স দিলেও শহরে ১৫-২০ হাজার ইজিবাইক চলাচল করে। অনেক সময় ফটোস্ট্যাট কপি বা ভুয়া লাইসেন্স দিয়ে ইজিবাইক চলছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর