শিরোনাম
সোমবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন

ভোটে নির্ভার নৌকার প্রার্থীরা!

খুলনায় কোণঠাসা স্বতন্ত্র শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী মধু-দারা আকরাম

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিলেও খুলনার অধিকাংশ আসনেই স্বতন্ত্র প্রার্থীরা টেনশনে ফেলেছিলেন নৌকার প্রার্থীদের। মনোনয়ন বঞ্চিতদের ক্ষোভ, বিএনপির নীরব সমর্থন ও নিজেদের কর্মী-সমর্থক নিয়ে অনেকেই ভোটে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস দিচ্ছিলেন। তবে যাচাই-বাছাইয়ে অধিকাংশ স্বতন্ত্র প্রতিদ্বন্দ্বী বাদ পড়ায় অনেকটাই নির্ভার হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। এর মধ্যে খুলনা-৪ আসনে সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তফা রশিদী সুজার ভাই স্বতন্ত্র প্রার্থী মর্তুজা রশিদী দারা, খুলনা-৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সদ্য পদত্যাগ করা উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ আকরাম হোসেন ও খুলনা-৬ আসনে জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি শফিকুল ইসলাম মধুর মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। খুলনা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন জানান, সমর্থনকারী ভোটারের স্বাক্ষর জাল করা, বিদ্যুৎ বিল বকেয়া ও ঋণ খেলাপি হওয়ার কারণে তাদের মনোনয়ন বাতিল করা হয়। জানা যায়, খুলনা-৪ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য আবদুস সালাম মুর্শেদীর আসনে দলীয় মনোনয়ন চেয়ে আবেদন করেছিলেন জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সুজিত অধিকারী, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক সরফুদ্দিন বিশ্বাস বাচ্চু, যুগ্ম সম্পাদক এস এম কামরুজ্জামান জামাল ও নগর যুবলীগের সভাপতি সফিকুর রহমান পলাশ। এর মধ্যে সালাম মুর্শেদী নৌকা পাওয়ায় মনোনয়নপ্রত্যাশী অধিকাংশই ক্ষুব্ধ হয়েছেন। ২৯ নভেম্বর খুলনা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে সালাম মুর্শেদী মনোনয়নপত্র জমা দিতে গেলে মনোনয়নবঞ্চিত অধিকাংশই সেখানে ছিলেন না। এর বাইরে সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেয় এই আসনের সর্বোচ্চ প্রভাবশালী প্রয়াত সংসদ সদস্য এস এম মোর্ত্তজা রশিদী সুজার ভাই মর্তুজা রশিদী দারা। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা দারাকে ঘিরে তৈরি হয় নতুন সমীকরণ। যাচাইয়ে তার মনোনয়নপত্র বাতিল হলে হাফ ছেড়ে বাঁচেন সালাম মুর্শেদীর সমর্থকরা। তবে এস এম মর্তুজা রশিদী দারা বলেন, উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। স্বতন্ত্র হিসেবে ওই আসনে ৩৫৫২ জন ভোটারের সমর্থন প্রয়োজন হয় তিনি সেখানে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে ৩৮০০ জন সমর্থনকারীর স্বাক্ষর জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে পাঁচজন তাকে সমর্থন করেননি বলে উল্লেখ করা হচ্ছে। কিন্তু এর বাইরেও অনেক বেশি সমর্থক তার রয়েছে, তিনি এ বিষয়ে আপিল করবেন। একইভাবে খুলনা-৫ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সাবেক ফুলতলা উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ আকরাম হোসেন। নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে আকরাম হোসেন ২৯ নভেম্বর উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ফুলতলা ও ডুমুরিয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত খুলনা-৫ আসনে ফুলতলা অংশে একক আধিপত্য রয়েছে আকরাম হোসেনের। এ ছাড়া দলীয় কোন্দলে ডুমুরিয়ায় বিগত উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ভরাডুবি হয়। সব মিলিয়ে নারায়ন চন্দ্র চন্দের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ গড়ে তুলতে মাঠে নেমেছিলেন আকরাম হোসেন। কিন্তু প্রায় তিন বছর আগে বিক্রি করা কোম্পানির ঋণ বকেয়া দেখিয়ে তার মনোনয়ন বাতিল করা হয়।  খুলনা-৬ আসনে নৌকার প্রার্থী মো. রশীদুজ্জামানের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগ কোষাধ্যক্ষ জি এম মাহবুবুল আলম ও জাতীয় পার্টির জেলা সভাপতি শফিকুল ইসলাম মধু।

মনোনয়ন যাচাইয়ে তারাও বাদ পড়েছেন। এর মধ্যে মধুর নামে পাইকগাছা উপজেলার গদাইপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবন নির্মাণকাজে ব্যবহৃত মিটারের বিদ্যুৎ বিল ২৬ হাজার টাকা বকেয়া রয়েছে। ওই বিদ্যুৎ মিটার মধুর নামে হলেও ব্যবহার করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। গতকালই বকেয়া বিলের টাকা জমা দিয়েছেন মধু।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর