মঙ্গলবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
তিন সংসদীয় এলাকা

বরিশালে জটিল সমীকরণ

শেষ হাসি কারা হাসবে ওয়ার্কার্স পার্টি নাকি জাপা

রাহাত খান, বরিশাল

দলীয় মনোনয়ন পেয়েও দুশ্চিন্তা কাটছে না বরিশালের তিনটি সংসদীয় আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের। এসব আসনে ভাগ বসাতে দরকষাকষি চলছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিক জাতীয় পার্টি ওয়ার্কার্স পার্টির। এর মধ্যে একাদশ জাতীয় সংসদে দুটি আসন সমঝোতায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল জোট-মহাজোটের শরিকদের। এবার জেলার আরও একটি আসন ক্ষমতাসীনদের কাছে চাইছে তারা। এতে প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার আগে প্রার্থিতা নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না আওয়ামী লীগের তিন প্রার্থী। গত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল-৬ (বাকেরগঞ্জ) আসনে জাতীয় পার্টিকে ছাড় দিতে কোনো প্রার্থী দেয়নি আওয়ামী লীগ। এ আসনে ২০০৮ সালে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার এবং ২০১৪ ও ২০১৮ সালে এমপি নির্বাচিত হন রুহুল আমিন হাওলাদারের সহধর্মিণী জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য নাসরিন জাহান রত্না। কিন্তু এবার মহাজোটভুক্ত নির্বাচন না হওয়ায় এ আসনে প্রার্থী আওয়ামী লীগ দলের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল হাফিজ মল্লিককে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। জাতীয় পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগের বনিবনা হলে এবারও এ আসনে কপাল পুড়তে পারে আবদুল হাফিজ মল্লিকের। বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনটি ২০০৮ সালে জাতীয় পার্টিকে এবং সব শেষ দুটি নির্বাচনে ১৪ দলের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টিকে ছেড়ে দেয় আওয়ামী লীগ। জোটের মনোনয়নে ২০১৪ সালে ওয়ার্কার্স পার্টির টিপু সুলতান এমপি নির্বাচিত হলেও ২০১৮ সালে তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে হেরে যান জাতীয় পার্টির কাছে। এবার এ আসনে বাবুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সরদার খালিদ হোসেন স্বপনকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। এদিকে এ আসনে ওয়ার্কার্স পার্টি এবার টিপু সুলতানকে প্রার্থী ঘোষণা করলেও শেষ সময়ে একই আসনে মনোনয়ন জমা দেন দলটির প্রধান রাশেদ খান মেনন। অপরদিকে জাতীয় পার্টির গোলাম কিবরিয়া টিপুও মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। এখন এ আসনে শেষ পর্যন্ত ১৪ দলের প্রার্থী কে হবেন রাশেদ খান মেনন না কি তার দলের টিপু সুলতান, না কি শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সরদার খালেদ হোসেনের হাতে উঠবে নৌকা প্রতীক তা নিয়ে আলোচনা চলছে এলাকায়। আবার দরকষাকষিতে জাতীয় পার্টি প্রার্থী গোলাম কিবরিয়া টিপুকেও ক্ষমতাসীনরা ছাড় দিতে পারে বলে গুঞ্জন রয়েছে। এবার আগে থেকেই বরিশাল-২ আসনটি ১৪ দলের কাছে চাইছে ওয়ার্কার্স পার্টি। এ আসনে মো. জহিরুল ইসলামকে মনোনয়ন দিয়েছে ওয়ার্কার্স পার্টি। আবার রাশেদ খান মেননও এ আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। অপরদিকে এ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুসকে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে বরিশাল-৫ আসনের পাশাপাশি বরিশাল-২ আসনেও মনোনয়ন জমা দিয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) ইকবাল হোসেন। শেষ পর্যন্ত রাশেদ খান মেনন  বেঁকে বসলে কপাল পুড়তে পারে আওয়ামী লীগ প্রার্থী তালুকদার মো. ইউনুসের। অন্যদিকে এবার নতুন করে এ আসনে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে ছাড় পেতে দেনদরবার চালাচ্ছেন জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতারা। শেষ পর্যন্ত কি আওয়ামী লীগ, না কি ওয়ার্কার্স পার্টি এ আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তা দেখার বিষয়। এবার আসনটি জাতীয় পার্টিকেও ছাড় দেওয়া হতে পারে গুঞ্জন চলছে রাজনীতির মাঠে। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক টিপু সুলতান বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনায় ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন তার নিজের পছন্দমতো বরিশালের দুটি আসনে প্রার্থী হয়েছেন। জোটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যে কোনো একটি আসনে নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তিনি।

মহানগর জাপার আহ্বায়ক অধ্যাপক মহসিন-উল ইসলাম হাবুল বলেন, জেলার তিনটি আসনে (বরিশাল-২, ৩ ও ৬) এবার আওয়ামী লীগের কাছে ছাড় চাইছে জাতীয় পার্টি। তিনটি আসনই জাতীয় পার্টিকে ছাড় দেওয়া হবে বলে তারা আশাবাদী।

এ বিষয়ে বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস বলেন, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত দেবেন, সেটাই চূড়ান্ত।

 

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর