বুধবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

আকর্ষণীয় ট্যুর প্যাকেজের প্রলোভনে ২ কোটি টাকা আত্মসাৎ

নিজস্ব প্রতিবেদক

সোশ্যাল মিডিয়ায় পেজ খুলে দুবাই, কাতার ও মালদ্বীপসহ বিভিন্ন দেশে আকর্ষণীয় ট্যুর প্যাকেজ ঘোষণা করে ‘ট্রিপকার্ড’ (Tripkard) নামের একটি প্রতিষ্ঠান। সুলভ মূল্যের এমন প্যাকেজে রীতিমতো হুমড়ি খেয়ে পড়তেন ভ্রমণপিপাসু সাধারণ মানুষ। ট্রিপকার্ডের কথামতো অন্ধের মতো টাকা জমা দেন ভ্রমণপিপাসুরা। প্রথমে কিছু বুঝতে না পারলেও কিছুদিন পরই হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যায় ট্রিপকার্ডের চোখ ধাঁধানো সেই অফিস। সবকিছু নিয়ে চম্পট দেয় প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারেরা। তবে ভুক্তভোগীদের অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে এর সত্যতা পায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগ। সোমবার থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করে চক্রের মূলহোতা সাইফুল আলম ওরফে অপু, আহাদ আলম ওরফে তালহা ও মো. আমিনুল ইসলামকে। জানা গেছে, ভুক্তভোগীদের একজন গুলশানের বাসিন্দা জুঁই আক্তার।

 পড়াশোনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত একটি কলেজে। সম্প্রতি ভ্রমণের উদ্দেশে মালদ্বীপে যাওয়ার জন্য ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠান ‘ট্রিপকার্ড’-এর ফেসবুকের সূত্র ধরে যোগাযোগ করেন। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তুলনায় কম মূল্যের কারণে আকৃষ্ট হন জুঁই। এরপর ভিসা ও অন্যান্য খরচ বাবদ দেন ৫৫ হাজার টাকা। কিন্তু টাকা দেওয়ার কিছু দিন পরই জুঁই দেখতে পান, ‘ট্রিপকার্ড’-এর অফিস বন্ধ।

ট্রিপকার্ডের লোভনীয় বিজ্ঞাপন দেখে তাদের ফাঁদে পা দেন ইন্টেরিয়র আর্কিটেক্ট নাহিদ হাজারিকা ইতি। দুজনের জন্য বুকিং মানির অগ্রিম ১ লাখ টাকা জমা দেন। এরপর থেকে এজেন্সিটি তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। প্রতারণার বিষয়টি আঁচ করতে পেরে বনানী থানায় মামলা করেন ইতি। জুঁই ও ইতির মতো দেলোয়ার হোসেন ৫৮ হাজার ৯০০ টাকা, শামীম আল মামুন ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা এবং রায়হান দম্পতি ৩ লাখ ২৭ হাজার টাকা দিয়েছিলেন ট্রিপকার্ডকে। 

রাজধানীর মিন্টু রোডের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, ‘ট্রিপকার্ড’র নামের কথিত এই ট্যুর অপারেটর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন পেজে বিজ্ঞাপন দিত। তারা বিভিন্ন প্যাকেজের আওতায় দিন ও রাত থাকা, হোটেলে বুকিং, এয়ারপোর্ট পিকআপ, ড্রপআপ, গাইডের মাধ্যমে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে ভ্রমণের ট্যুর প্যাকেজ ঘোষণা করত। একসঙ্গে ৪০ জনের ভিসা ও বিমানের টিকিট কাটাসহ সব দায়িত্ব নিজেরাই পালন করার আশ্বাস দিত। এ ছাড়া প্যাকেজে আরও সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার ঘোষণাও থাকত। এত কম টাকায় এমন অফার পেয়ে সাধারণ মানুষ তাদের ফাঁদে পা দিত।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর