রবিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

রংপুরে আওয়ামী লীগ-জাপার কোনো প্রার্থীই নির্ভার নন

আসন রফা না হওয়ার প্রভাব

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

জাতীয় পার্টি বৃহত্তর রংপুরের ২২টি আসনকে নিজেদের ঘাঁটি মনে করছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা মনে করছেন বিগত দিনের উন্নয়নের কারণে তাদের বিজয়ী হওয়া উচিত। বিগত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও জাপার মধ্যে আসন রফা হলেও এবার তার কোনো লক্ষণই নেই। ফলে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীদের মাঝে চলছে নানা ধরনের বিশ্লেষণ। কোনো দলই জয়ের ব্যাপারে একেবারে নির্ভার নয়। মাঠপর্যায়ে খোঁজ নিয়ে এবং দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রংপুর-৬ আসন পীরগঞ্জে সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ও রংপুর-৪ কাউনিয়া-পীরগাছা আসনে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এক প্রকার নির্ভার থাকলেও রংপুরের অন্য ৪টি আসন নিয়ে চলছে আলোচনা। রংপুর-১ আসনের এমপি জাপা থেকে বহিষ্কৃত মসিউর রহমান রাঙ্গা। এ আসনে জাতীয় পার্টির টিকিট পেয়েছেন জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের ভাতিজা আসিফ শাহরিয়ার। রাঙ্গা লড়ছেন স্বতন্ত্র হিসেবে। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রাজু। এখানে আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টির কোনো প্রার্থীই নির্ভার নয়। রংপুর-২ তারাগঞ্জ-বদরগঞ্জ আসনের এমপি ডিউক চৌধুরী এবারও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। এ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাবেক এমপি আনিছুল হক। এ আসনটিও আশা করছেন জাপা নেতা-কর্মীরা। রংপুর-৩ সদর আসনের এমপি (জাপার প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত এইচ এম এরশাদের ছেলে) সাদ এরশাদ। এবার সাদ এরশাদকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। এ আসনে প্রার্থী হয়েছেন জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদের। আওয়ামী লীগের প্রার্থী তুষার কান্তি মণ্ডল। ১৯৯১ সাল থেকে এ আসনটি জাতীয় পার্টির দখলে রয়েছে। জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা এক প্রকার ধরে নিয়েছেন এ আসনটি জাপাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। এ আসন নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। রংপুর-৫ আসন মিঠাপুকুরে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রাশেক রহমান। রাশেকের বাবা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ এইচ এন আশিকুর রহমান। এখানে জাতীয় পার্টির প্রার্থী দলের কো-চেয়ারম্যান রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার ভাই আনিছুর রহমান। অনেকের ধারণা, মেয়রের ভাইয়ের জন্য আওয়ামী লীগের কাছে এ আসনটি ছাড় চাইতে পারে জাতীয় পার্টি। এ ছাড়া মনে করা হয়, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, গাইবান্ধা ও লালমনিরহাটে একাধিক আসনে ‘ছাড়’ চাওয়া হবে। জানা গেছে, একাদশ সংসদ নির্বাচনে বৃহত্তর রংপুরের ২২টি আসনের মধ্যে জাতীয় পার্টির ছিল ৬টি আসন। এবার আসন সংখ্যা বাড়বে না কমবে তা নিয়ে সর্বত্র জল্পনা চলছে। তফসিলের আগে জাপা একক নির্বাচনের ঘোষণা দিলেও তারা এখন আসন রফার জন্য দর কষাকষি করছে। ৯০ দশকে রংপুরের ২২টি আসনই জাতীয় পার্টির ছিল। তাই বৃহত্তর রংপুরে সবচেয়ে বেশি আসন চাইবে জাপা এমনটা ভাবছেন নেতা-কর্মীরা।

রংপুর-৩ আসনে নৌকার প্রার্থী তুষার কান্তি মণ্ডল বলেন, এলাকার উন্নয়নে নৌকা মার্কার বিকল্প নেই। বিগত দিনে সদর আসন এলাকায় তেমন একটা উন্নয়ন হয়নি। তাই উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে এ আসনে নৌকা মার্কার প্রার্থী থাকবে এটাই যুক্তিযুক্ত।

অন্যদিকে জেলা জাপার সদস্যসচিব হাজি আবদুর রাজ্জাক বলেন, আসন রফার বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতারা সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে বৃহত্তর রংপুরের ২২টি আসনেই জাতীয় পার্টি জয়ী হওয়ার ক্ষমতা রাখে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর