বুধবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

খুলনায় ভোট কেন্দ্রে চাই নারীবান্ধব পরিবেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

খুলনায় ভোট কেন্দ্রে চাই নারীবান্ধব পরিবেশ

বাড়ি থেকে পা বাড়ালেই ভোট কেন্দ্র। তার পরও খুলনার অভিজাত নিরালা আবাসিক এলাকার দুটি কেন্দ্রে প্রায় ৮২ শতাংশ নারী পরপর তিনটি নির্বাচনে ভোট দেননি। উচ্চশিক্ষিত পরিবারের এসব ভোটারকে পারিবারিকভাবেই ভোট প্রদানে নিরুৎসাহ করা হয়। ২০০৮ ও ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচন ও চলতি বছরের ১২ জুনের সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণে এমন তথ্য উঠে এসেছে। নির্বাচন কমিশনের গেজেট অনুযায়ী, সিটি নির্বাচনে ২০৭ নম্বর ভোট কেন্দ্র নিরালা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় (তৃতীয় ও চতুর্থ তলা) ও ২০৮ নম্বর ভোট কেন্দ্র একই বিদ্যালয়ে (দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা) মোট নারী ভোটার ছিলেন ৫ হাজার ৪৯৬ জন। এর মধ্যে ৪ হাজার ৫২০ জন ভোট প্রদানে বিরত থাকেন। একইভাবে ২০৬ নম্বর কেন্দ্র সোনাপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৭৯.৬৫, ২০৪ নম্বর কেন্দ্র বাংলাদেশ ব্যাংক স্টাফ কোয়ার্টার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৭৭.৬১, ২৪০ নম্বর কেন্দ্র পিটিআই একাডেমিক ভবনে ৭৬.৩১ এবং ২৩৮ নম্বর কেন্দ্র ডি আলী ইসলামিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৭৬.১৩ শতাংশ নারী ভোট দেননি। জানা যায়, সিটি নির্বাচনে ২৮৯ কেন্দ্রের মধ্যে ১০০ ছিল নারী ভোট কেন্দ্র। এর মধ্যে গড়ে ৪০ শতাংশের নিচে ভোট পড়া ৩৪ কেন্দ্রে নারী ভোটার ছিলেন ৬০ হাজার ৮০২ জন; যার ৭৪.৩১ শতাংশই ভোট দেননি। নির্বাচন বিশ্লেষকদের মতে, বহুদলীয় অংশগ্রহণমূলক সুষ্ঠু নির্বাচন না হওয়া, ভোটে সহিংসতার শঙ্কা, জাল ভোটে মতামতের প্রতিফলন না হওয়া, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও দায়িত্ববোধের অভাবে ভোট দিতে আগ্রহী হন না নারীরা। নিরালা আবাসিক এলাকার বাসিন্দা স্কুলশিক্ষিকা সামছুন্নাহার শিরিন জানান, ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে কেন্দ্রে সহিংসতা ও ২০১৮ সালে কেন্দ্রে যেতে বাধা দেওয়ায় অনেকে ১২ জুনের সিটি নির্বাচনেও ভোট দেওয়ার আগ্রহ হারান। সব দলের অংশগ্রহণ না থাকায় ভোটের গুরুত্বও কমেছে। নারী আন্দোলনের নেত্রী ও উইমেন চেম্বার অব কমার্স, খুলনা বিভাগের প্রেসিডেন্ট শামীমা সুলতানা শিলু বলেন, ‘আগের মতো ভোটে উৎসব নেই, আছে উৎকণ্ঠা। একটা সময় ভোট ঘিরে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেখা হতো। এখন সেই উৎসবমুখর পরিবেশ না থাকার দায় এড়াতে চায় সবাই।’ নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে রাজনৈতিক দলেরই উদাসীনতাকে দায়ী করছেন বিশ্লেষকরা। এ ছাড়া গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ৯০-এর খ (২) ধারা অনুযায়ী রাজনৈতিক দলের সব স্তরের কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী নিশ্চিত করার কথা বলা হলেও খুলনায় সে অনুপাতে নারী প্রতিনিধিত্ব নেই।

অন্যদিকে নারীদের ভোটে উদ্বুদ্ধ করতে কেন্দ্রের পরিবেশ ‘নারীবান্ধব’ করার তাগিদ দেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. তুহিন রায়।

প্রান্তিক নারীরা যাতে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর