শুক্রবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

সিলেটে মাঠে কেবল নৌকার প্রার্থী

জাতীয় পার্টি তাকিয়ে আছে আসন ভাগাভাগির দিকে

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সিলেটে মাঠে কেবল নৌকার প্রার্থী

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিএনপি বয়কট করলেও অংশ নিয়েছে ৩০টি রাজনৈতিক দল। এর মধ্যে সিলেট জেলার বিভিন্ন সংসদীয় আসনে প্রার্থী দিয়েছে ১২টি দল। জাতীয় পার্টি ছাড়া অন্য দলগুলোর সাংগঠনিক অবস্থানই নেই সিলেটে। আর জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা চেয়ে আছেন আসন ভাগাভাগির চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের দিকে। তাই সিলেটের ছয়টি সংসদীয় আসনের সবকটিতেই নৌকার প্রার্থী ছাড়া অন্য কোনো দলের প্রার্থীর দেখা মিলছে না। নৌকার কাণ্ডারিরাই কেবল চষে বেড়াচ্ছেন নির্বাচনি মাঠ। তবে কোনো কোনো আসনে নৌকার মাঝিদের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া দলের নেতারা। সিলেট জেলার ছয়টি সংসদীয় আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ সবকটিতে, জাতীয় পার্টি ৪টিতে, তৃণমূল বিএনপি ৪টিতে, ইসলামী ঐক্যজোট ৪টিতে, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি ৩টিতে, বাংলাদেশ কংগ্রেস ৩টিতে, জাকের পার্টি ৩টিতে, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট ২টিতে, গণফোরাম ১টিতে, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ১টিতে, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট ১টিতে ও বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল) ১টিতে প্রার্থী দিয়েছে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি ছাড়া অন্য দলগুলোর সিলেটের সব সংসদীয় আসনে সাংগঠনিক অবস্থান নেই। ফলে প্রার্থী থাকলেও আলোচনায় আসতে পারছেন না এসব দলের প্রার্থীরা। তবে নির্বাচনি হিসাব-নিকাশ এখনো ঝুলে আছে মহাজোটের আসন ভাগাভাগিতে। কেন্দ্র থেকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়ায় জেলার ৬টি আসনের মধ্যে ৪টিতে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা তাকিয়ে আছেন ঢাকার দিকে। তবে কোনো কোনো আসনে অন্য দলের প্রার্থীদের নিয়ে মাথাব্যথা না থাকলেও নৌকার মাঝিদের টেনশনের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন নিজ দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। সিলেটে অনেকটা নির্ভার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী। সিলেট-১ আসনে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফঙ্গ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ইসলামী ঐক্যজোট, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি, বাংলাদেশ কংগ্রেস, জাকের পার্টি ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের প্রার্থী। এ ছাড়া আসনটি থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। তবে দলের নেতা-কর্মীদের ভেড়াতে না পারায় তিনি নির্বাচনি মাঠে সুবিধা করতে পারছেন না। সিলেট-২ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী। তার সঙ্গে রয়েছেন জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াহহিয়া চৌধুরী, বর্তমান সংসদ সদস্য গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোকাব্বির খান এবং ন্যাশনাল পিপলস পার্টি, তৃণমূল বিএনপি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বাংলাদেশ কংগ্রেস ও জাকের পার্টির প্রার্থী। শফিক চৌধুরীর সঙ্গে সাবেক ও বর্তমান দুই সংসদ সদস্য প্রার্থী হলেও এলাকায় তাদের দলের শক্ত সাংগঠনিক অবস্থান না থাকায় মাঠে কেবল ঘুরে বেড়াচ্ছেন শফিক চৌধুরী। জেলার ৬টি আসনের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতি সিলেট-৩, ৫ ও ৬ আসনে। সিলেট-৩ আসনে আপিলে মনোনয়ন ফিরে পাওয়ায় নৌকার মাঝি বর্তমান সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমানের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন-বিএমএ’র মহাসচিব ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী।

এ ছাড়া জাতীয় পার্টির আতিকুর রহমান আতিকও মহাজোটের শরিক হিসেবে আসনটি ছাড়িয়ে আনার চেষ্টায় রয়েছেন।

সিলেট-৫ আসনেও আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাসুক উদ্দিন আহমদকে মুখোমুখি হতে হচ্ছে স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ড. আহমদ আল কবীরের। এ ছাড়া আসনটি থেকে প্রার্থী হয়েছেন ফুলতলী পীরের ছেলে আঞ্জুমানে আল ইসলাহর সভাপতি মাওলানা হুছামুদ্দিন চৌধুরী ও জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক সাব্বির আহমদ। সিলেট-৬ আসনে আবারও নৌকা উঠেছে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের হাতে। কিন্তু স্বতন্ত্র প্রার্থী ঘোষণা দিয়ে মাঠ গরম করে রেখেছেন কানাডা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সরওয়ার হোসেন। এ ছাড়া একই আসনের প্রার্থী তৃণমূল বিএনপির কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরীও প্রার্থী। এলাকার সঙ্গে দীর্ঘদিন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন শমসের মবিন নির্বাচন সামনে রেখে যোগাযোগ বাড়ানোর চেষ্টা করছেন।

সর্বশেষ খবর