রবিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

রাজধানীতে জমে উঠেছে শীতবস্ত্রের বেচাকেনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীতে জমে উঠেছে শীতবস্ত্রের বেচাকেনা। অন্যান্য বছরের  চেয়ে এবার দেরিতে হলেও নির্বাচনের কারণে শীতের পোশাকসহ বিভিন্ন শীতবস্ত্র ভালো বিক্রি হচ্ছে। অনেকেই পরিবারের জন্য পোশাক কিনছেন আবার কেউ কেউ ত্রাণ হিসেবে বিতরণ করতে এখন গরম কাপড় কিনছেন। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বেসরকারি দাতা সংস্থা ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো কম্বলসহ গরম কাপড়ের অর্ডার দিচ্ছেন। আর নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় রাজনৈতিক  নেতা-কর্মীরা বেশি কম্বল কিনছেন। রাজধানী ঘেঁষা কেরানীগঞ্জ এবং বঙ্গবাজার, ফুলবাড়িয়া, গুলিস্তান ও নিউমার্কেটের পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মৌসুমের শুরুতে হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচির কারণে পাইকারি বেচাকেনায় খুব একটা সুবিধা হয়নি। তবে শীত জেঁকে বসায় বেচাকেনা বেড়েছে। শীতের শুরুতে ত্রাণের কম্বলেরও চাহিদা কম ছিল। কিন্তু নির্বাচনি হাওয়া বইতে শুরু করায় এখন কম্বলের চাহিদা বাড়ছে। ঢাকার বিভিন্ন এলাকার খুচরা বিক্রেতারা জানান, প্রথম দিকে কেনাবেচা কম হলেও এখন ভালো হচ্ছে। পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, ত্রাণের জন্য কম দামি কম্বলই বেশি বিক্রি হয়। সাধারণত বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি দাতা সংস্থা (এনজিও), সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো ত্রাণের কম্বলের বড় ক্রেতা। রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরাও কিনতেন। কিন্তু এবার নির্বাচনের মৌসুম হওয়ায় তারা বেশি ক্রয়াদেশ দিচ্ছেন। রাজধানীর বঙ্গবাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী শহিদ উদ্দীন বলেন, পাইকারি বেচাকেনার বড় অংশ শীতের শুরুতে হয়ে থাকে। এবার তা হয়নি। তবে শীত বাড়ার সঙ্গে বেচাকেনা বেড়েছে। এখন ত্রাণের কম্বলেরও ভালো চাহিদা আসছে। ত্রাণের জন্য অনেকে হাজার         পাঁচেক কম্বলের ক্রয়াদেশ দিয়ে থাকেন। কেউ কেউ ২০ থেকে ৫০ হাজার কম্বলও নেন। বিভিন্ন সংগঠন         কম্বল নিলেও এখন বড় আকারের চাহিদা আসছে রাজনৈতিক নেতাদের কাছ থেকে। ব্যবসায়ীদের দাবি, কাপড় ও মজুরি  খরচ বেড়ে যাওয়ায় এবার শীত বস্ত্রের দাম কিছুটা বেড়েছে। নারী, পুরুষ ও বাচ্চাদের শীতের পোশাকের মান ও আকারভেদে ২০০ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এবার প্রতিটি দেশি কম্বলের দাম বেড়েছে ২০ থেকে ৫০ টাকা। আর ডলারের কারণে আমদানি কম্বলের দাম আরেকটু বেশি বেড়েছে। বিদেশি একেকটা কম্বলে দাম বেড়েছে ১০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। ঢাকায় একটি দেশি কম্বল বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ৭৫০ টাকায়। আর বিদেশি কম্বলের সর্বনিম্ন দাম ৮০০ টাকা। আমদানি করা এসব কম্বলের মানভেদে দাম ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বঙ্গবাজার-গুলিস্তানের বাইরে শীতের গরম কাপড়ের পাইকারি বাজারের মধ্যে অন্যতম কেরানীগঞ্জ। কেরানীগঞ্জের পোশাকপল্লীতে ৩ শতাধিক মার্কেট রয়েছে। সেখানে ছোট ও মাঝারি আকারের পোশাক কারখানাসহ রয়েছে ১০ হাজারের বেশি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। শীত মৌসুমে এই এলাকার বেশির ভাগ দোকানে শীত বস্ত্র তোলা হয়। এ ছাড়া কামরাঙ্গীরচরের তৈরি পোশাকের কারখানাগুলোর মধ্যে সহস্রাধিক প্রতিষ্ঠান শীতকাপড়ের মৌসুমি ব্যবসা করে থাকেন। কেরানীগঞ্জ গার্মেন্ট ব্যবসায়ী ও দোকান মালিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুসলিম ঢালী বলেন, আমাদের মূলত ঈদ কেন্দ্রিক ব্যবসা হয়ে থাকে। ঈদের ব্যবসার পর এখানে শীতকালীন পোশাক ভালো বিক্রি হয়। অন্যান্য বছরের মতো এবারও শীতকালীন  পোশাকের ভালো অর্ডার আসছে। এখানে খুচরা ও পাইকারি দুই ধরনের শীতকালীন পোশাক বিক্রি হয়ে থাকে। শীত আরেকটু বাড়লে বেচাকেনা আরও বৃদ্ধি পাবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর