সোমবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

চট্টগ্রাম-বরিশালে কপাল পুড়ল যাদের

জোটের আসন ভাগাভাগি

আজহার মাহমুদ, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম-বরিশালে কপাল পুড়ল যাদের

জোটের সঙ্গে হিসাব-নিকাশে শেষ পর্যন্ত কপাল পুড়েছে চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগের দুই প্রার্থীর। চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে জোটের প্রার্থী হিসেবে জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) আসনে একই দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সোলায়মান আলম শেঠ নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে লড়বেন। গতকাল আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে দেখা গেছে, ২৫টি আসনে জোটভুক্ত প্রার্থী থাকায় দলটির মনোনীত প্রার্থীদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামের এই দুই আসনও উল্লেখ ছিল। দুই আসনের মধ্যে চট্টগ্রাম-৫ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুস সালাম। আর চট্টগ্রাম-৮ আসনে মনোনয়ন পেয়েছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ। দুজনের মধ্যে নোমান আল মাহমুদ মাত্র চার মাস আগে অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে প্রথমবারের মতো দলের মনোনয়ন পেয়ে এমপি হয়েছিলেন। অন্যদিকে সালাম এর আগেও একাধিকবার মনোনয়ন পেয়ে জোটের স্বার্থে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন।

এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে মোহাম্মদ আবদুস সালামকে ফোন করলে তিনি রিসিভ করেননি। তবে নোমান আল মাহমুদ বলেন, ‘নেত্রী (আওয়ামী লীগ সভানেত্রী) যা ভালো মনে করেছেন তাই করেছেন। আমি দলের জন্য রাজনীতি করি। দলের ভালোর জন্য সবকিছু করতে প্রস্তুত।’ জোটের হিসেবে কপাল খুলে যাওয়া ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম এর আগেও এই আসন থেকে একাধিকবার এমপি হয়েছেন। এবারও শেষ পর্যন্ত তিনিই জোটের হয়ে লড়বেন বলে রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন ছিল। এ কারণে সালামের মনোনয়ন বহাল রাখার দাবিতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনগুলো নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে দলের সিনিয়র নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছেন। তবে শেষ পর্যন্ত সালামের কপাল পুড়ে আনিসের ভাগ্য খুলেছে। চট্টগ্রাম-৮ আসনে জোটে মনোনয়ন পাওয়া সোলায়মান আলম শেঠ এর আগে খাগড়াছড়ি থেকে নির্বাচনে লড়লেও নগরের কোনো আসনে প্রার্থী হননি। এবারই প্রথম তিনি এ আসন থেকে প্রার্থী হন এবং শেষ পর্যন্ত জোটের সঙ্গে দেন দরবারে মনোনয়ন পেয়ে চমক সৃষ্টি করেছেন।

বরিশালে কপাল পুড়ল আওয়ামী লীগের তিন প্রার্থীর : নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল জানান, ১৪ দলীয় জোটের আসন ভাগাভাগিতে বরিশাল-২ আসন পেয়েছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। অন্যদিকে ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে সমঝোতায় জেলার দুটি আসনে বরিশাল-৩ ও ৬ আসনে ছাড় পেয়েছে জাতীয় পার্টি। এ জন্য কপাল পুড়েছে আওয়ামী লীগ মনোনীত তিন প্রার্থীর। তারা হলেন- তালুকদার মো. ইউনুস, সরদার খালেদ হোসেন স্বপন এবং আবদুল হাফিজ মল্লিক।

বরিশাল-২ আসনে ১৪ দলের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টিকে মনোনয়ন দেওয়ায় এবং বরিশাল-৩ ও ৬ আসনে জাতীয় পার্টিকে ছাড় দেওয়ায় তারা বাদ পড়েছেন। তবে এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস জানান, ১৪ দলীয় জোটের স্বার্থে তিনজনই দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন। জানা গেছে, শেষ মুহূর্তে আসন ভাগাভাগিতে বরিশাল-২ আসনে ১৪ দলের প্রার্থী হয়েছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। নৌকা প্রতীক নিয়ে এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তিনি।

এই আসনে ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী জহিরুল হক টুটুল মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। অন্যদিকে ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে সমঝোতার পরিপ্রেক্ষিতে বরিশাল-৩ ও ৬ আসনে ছাড় পাচ্ছে সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। সমঝোতার ভিত্তিতে দুটি আসনে ছাড় পেলেও এই নির্বাচনকে ‘প্রহসন’ বলছেন মহানগর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক অধ্যাপক মহসিন উল ইসলাম হাবুল। বরিশাল-৩ আসনে ক্ষমতাসীনরা জাতীয় পার্টিকে ছাড় দিলেও এই আসনে ১৪ দলের প্রার্থী না থাকায় হাতুড়ি প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী সাধারণ সম্পাদক টিপু সুলতান।

সর্বশেষ খবর