মঙ্গলবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
গবেষণায় তথ্য

বেশির ভাগ অ্যান্টিবায়োটিক ৯০ শতাংশ অকার্যকর

নিজস্ব প্রতিবেদক

বেশির ভাগ অ্যান্টিবায়োটিক ৯০ শতাংশ অকার্যকর

মানবদেহে সংক্রমণ ঘটানো প্রধান জীবাণুগুলোর বিরুদ্ধে বাংলাদেশে ব্যবহৃত প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের বেশির ভাগ অ্যান্টিবায়োটিক প্রায় ৯০ ভাগ অকার্যকর হয়ে পড়েছে। এর প্রথম ও প্রধান কারণ অ্যান্টিবায়োটিকের অযাচিত ব্যবহার। দেড় বছর ধরে রাজধানীসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকা থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) আসা ৭২ হাজার ৬৭০টি রোগীর নমুনা পরীক্ষা করে এ ফলাফল জানা গেছে।

গতকাল বিএসএমএমইউর শহীদ ডা. মিল্টন হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ‘সংক্রামক ব্যাধি চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার ও কার্যকারিতার চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক গবেষণার ফলাফলে এ তথ্য তুলে ধরেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. ফজলে রাব্বি চৌধুরী। গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে অন্তত ৭৫ ভাগ ইনফেকশন হয় টাইফয়েড, ই- কোলাই, স্ট্যাফাউরিয়াস, ক্লিবশিয়েলা ও সিউডোমোনাস ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে। এসব ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে অ্যাকসেস ও ওয়াচ গ্রুপের অ্যান্টিবায়োটিক অকেজো হয়ে গেছে প্রায় ৯০ শতাংশ। এ ছাড়া আইসিইউর রোগীদের যে অ্যান্টিবায়োটিকে চিকিৎসা চলত তা এখন ওয়ার্ডের রোগীদেরও দিতে হচ্ছে। এতে বোঝা যায় পরিস্থিতি কত খারাপের দিকে যাচ্ছে। গবেষণা প্রসঙ্গে ডা. মো. ফজলে রাব্বি চৌধুরী বলেন, কিছু অ্যান্টিবায়োটিক আছে যেগুলোকে একেবারে শেষ ধাপ হিসেবে রিজার্ভ করে রাখা হয়েছে। সে বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, একান্ত বিপদে না পড়লে এই রিজার্ভ গ্রুপের অ্যান্টিবায়োটিকগুলো একেবারেই ব্যবহার করা উচিত নয়। কিন্তু বর্তমানে আমরা দেখছি অহরহ এসব রিজার্ভ গ্রুপের অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হচ্ছে। যেগুলো সাধারণত সর্বোচ্চ মুমূর্ষু অবস্থায় আইসিইউতে থাকা রোগীদের ক্ষেত্রে ব্যবহার হওয়া উচিত, সেগুলো এখন হাসপাতালে সাধারণ ওয়ার্ডেই আমরা ব্যবহার করছি। তিনি বলেন, আমাদের একটা বিষয় মনে রাখতে হবে, আমরা রিজার্ভের যে অ্যান্টিবায়োটিকগুলো এখনই ব্যবহার করে ফেলছি, এর পরে কিন্তু আমাদের আর যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। সেই সময়ে কিন্তু আমাদের অনেক বড় বিপদে পড়তে হবে। তখন দেখা যাবে অ্যান্টিবায়োটিক সাধারণ সর্দি-জ্বরে কাজ করবে না। তখন কিন্তু সামান্য অসুখ-বিসুখেই আমাদের প্রাণ হারাতে হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।

সর্বশেষ খবর