শুক্রবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

শব্দ ও বায়ু দূষণে হুমকিতে রংপুর

প্রতিরোধে আইন থাকলেও নেই বাস্তবায়ন

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

শব্দ ও বায়ু দূষণে হুমকিতে রংপুর

নির্বাচনকে ঘিরে রংপুরে প্রতিনিয়তই শব্দদূষণের মাত্রা বাড়ছে। শব্দ ও বায়ু দূষণের কারণে প্রকৃতি ও মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রকৃতি ও মানুষকে বাঁচাতে পরিবেশ অধিদফতর কাজ করলেও এ দূষণ রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না।

পরিবেশ অধিদফতরের তথ্য মতে, মানুষ সাধারণত ৩০-৪০ ডেসিবেল শব্দে কথা বলে। ৭০ ডেসিবেল পর্যন্ত শব্দ মানুষের কান গ্রহণ করতে পারে। ৮০ ডেসিবেলের বেশি গেলেই ক্ষতি শুরু হয়। বর্তমানে নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন প্রার্থীর প্রচারণার শব্দ ৮০ ডেসিবেল ছাড়িয়ে গেছে। তবে পরিবেশ অধিদফতর বলছে, বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হবে। জানা গেছে, বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের ক্ষমতাবলে শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা-২০০৬ প্রণয়ন করা হয়। বিধিমালার আওতায় নীরব, আবাসিক, মিশ্র, বাণিজ্যিক ও শিল্প এলাকা চিহ্নিত করে শব্দের মানমাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। আইন অমান্য করলে প্রথমবার অপরাধের জন্য এক মাস কারাদণ্ড বা অনধিক ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয়দণ্ড এবং পরবর্তী অপরাধের জন্য ছয় মাস কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু এ আইন বাস্তবায়নের কোনো পদক্ষেপ নেই।

এদিকে রংপুরে বায়ুদূষণের উৎসগুলা সম্পর্কে জানা গেছে, জীবাশ্ম জ্বালানি, শিল্পকারখানা, দহন, অপরিকল্পিত নগরায়ণ, ঘন ঘন রাস্তা খনন, ড্রেনের ময়লা রাস্তার পাশে উঠিয়ে রাখা, যানবাহন থেকে নির্গত বিভিন্ন ধরনের প্যার্টিকুলেট ম্যাটার, অ্যাশ, ধূলিকণা, সিসা, কার্বন, কার্বন মনোক্সাইড, সালফার অক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইডগুলো এবং কার্বন ডাই-অক্সাইড প্রতিনিয়তই দূষিত করছে বায়ু। চিকিৎসকদের মতে বায়ুদূষণের ফলে নাকমুখ জ্বালাপোড়া করা, মাথা ঝিমঝিম করা, মাথা ব্যথা, বমি বমি ভাবসহ নানা রোগের দেহে বাসা বাঁধতে পারে।

রংপুর পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক সৈয়দ ফরহাদ হোসেন বলেন, শব্দদূষণ রোধে প্রায় প্রতিদিনই অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। শব্দ ও বায়ুদূষণের বিষয়ে জনগণকে সচেতন করা হচ্ছে। এ ছাড়া শব্দদূষণের বিষয়টিও গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। জানা গেছে, রংপুর সিটি করপোরেশন বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন ১০০ টন বর্জ্য উৎপন্ন হয়। এর মধ্যে ৬০-৭০ টন বর্জ্য অপসারণ করা সম্ভব হয়। বাকি ৩০-৩৫ টন বর্জ্য অপসারণ করা সম্ভব হয় না। ফলে এসব বর্জ্য পচে-গলে দুর্গন্ধ বাতাসে মিশে মারাত্মক বায়ুদূষণ করছে। এসব বর্জ্য হোটেল ও রেস্টুরেন্টের আবর্জনা, শিল্প কারখানা থেকে উৎপাদিত আবর্জনা, রান্নাঘরের পরিত্যক্ত আবর্জনা, হাটবাজারের পচনশীল শাকসবজি, কসাইখানার রক্ত অন্যতম উৎস। যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা উন্মুক্তভাবে ফেলে রাখায় বাতাস ও মাটি দূষিত হচ্ছে। অপরিকল্পিতভাবে বর্জ্যরে ফলে আশপাশে দুর্গন্ধের পাশাপাশি দেখা যায় মশা, মাছি ও পোকামাকড়ের মাত্রাতিরিক্ত উপদ্রব। বর্ষা মৌসুমে বর্জ্যগুলোর অবস্থা হয় আরও ভয়াবহ।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর