শনিবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

শেখ হাসিনা আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় পান না : ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

শেখ হাসিনা আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় পান না : ওবায়দুল কাদের

একমাত্র আল্লাহ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা আর কাউকে ভয় করেন না উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জনগণ আমাদের শক্তি, কারও হুমকি-ধমকিতে শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা মাথানত করেন না। গতকাল বিকালে বরিশালের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু উদ্যানে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিশাল নির্বাচনি জনসভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, বাংলাদেশে এমন নেতা, যে নেতা নির্বাচনি ইশতেহারে বলেন, অতীতে যদি ভুল করে থাকি সামনে সেই ভুল সংশোধন করব। এমন সৎসাহস বাংলাদেশের রাজনীতিকদের মধ্যে আর কেউই দেখাতে পারেননি। ভুল থেকে শিক্ষা নেবে ক্ষমতার দাপটে নেতারা এটা স্বীকার করেন না। কিন্তু শেখ হাসিনা সেটা স্বীকার করেছেন। বিএনপি পালিয়ে গেছে, কার সঙ্গে খেলবেন? এমন মন্তব্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি ফাউল করে লাল কার্ড খেয়ে বিদায় নিয়েছে। ওরা পালিয়ে গেছে, পল্টনের খাদে পড়ে গেছে এক দফা। তাদের এক দফা, ৩২ দল ও বিএনপিও ভুয়া। আর বিএনপি যে ডাক দিয়েছে, তাদের আগুনসন্ত্রাস ভুয়া। খেলা হবে জোরদার খেলা হবে। ৭ জানুয়ারি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা বিজয়ের বন্দরে পৌঁছাব। এই বরিশাল ছিল বঙ্গবন্ধুর আন্দোলনের দুর্জয় ঘাঁটি। আজকের বরিশাল শেখ হাসিনার দুর্জয় ঘাঁটি।

উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু বলেন, নির্বাচন বানচাল করতে বিএনপি যে আন্দোলন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে শুরু করেছিল, আজ সেই আন্দোলন সন্ত্রাস ও মানুষ হত্যায় রূপান্তরিত হয়েছে। তারা যখন দেখে তাদের হরতালে জনগণ সাড়া দেয় না তখন প্রতিহিংসায় জনগণকে হত্যা করছে। তারা হত্যাকারী হিসেবে সারা দুনিয়ার মানুষের কাছে চিহ্নিত। তিনি বিএনপি-জামায়াতের হাত থেকে দেশকে রক্ষার জন্য নৌকায় ভোট দিয়ে শেখ হাসিনার হাত শক্তিশালী করার আহ্বান জানান।

১৪ দলের নৌকা মার্কার প্রার্থী ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, এবারের নির্বাচন সহজ কোনো নির্বাচন নয়, এটি জটিল নির্বাচন। কারণ এ নির্বাচন যাত্রার শুরু থেকেই বিএনপি-জামায়াত জোট ও তাদের সহযোগীরা আটকে দেওয়ার জন্য একের পর এক ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমারা। তারা কখনো স্যাংশন, কখনো ভিসানীতি আবার হুকুম জারি করে এই নির্বাচনকে তাদের মতো করে সাজিয়ে এগোতে। আমরা তখনই বলেছিলাম, তাদের লক্ষ্য সুষ্ঠু নির্বাচন নয়। তাদের লক্ষ্য ছিল শেখ হাসিনাকে হটিয়ে একটা অসাংবিধানিক ও অস্থিতিশীল সরকার বসানো। যাতে তারা বঙ্গোপসাগরে ঘাঁটি নির্মাণসহ এ অঞ্চলে তাদের লক্ষ্য কায়েম করতে পারে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে বরিশাল থেকে ঢাকায় তুলে নিয়ে মনোনয়ন দিয়েছিলেন। এবার জীবনসায়াহ্নে আমার নিজ এলাকায় মনোনয়ন দিয়েছেন। আমি কথা দিচ্ছি এ এলাকার বিজয় উপহার দেব। নৌকার জয় হবেই হবে। আমাকে নয় আপনাকে এবং শেখ হাসিনাকে বিজয়ী করুন।

১৪ দলীয় জোটের নৌকা মার্কার আরেক প্রার্থী ও জাতীয় পার্টি-জেপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে, উৎসাহে ও পৃষ্ঠপোষকতায় আমরা একসময় রাজপথে ছিলাম। বর্তমানের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও রাজপথে ছিলেন। আমি নিজের বিষয়ে গর্ববোধ করতাম যে আমি অনেক পরিশ্রমী। কিন্তু শেখ হাসিনার সঙ্গে দীর্ঘ ১০ বছর কাজ করার যে অভিজ্ঞতা হয়েছে তাতে আমরা দেখেছি তিনি আমার চেয়েও অনেক বেশি পরিশ্রমী। তিনি দেশের জন্য অনেক ভাবেন। তিনি এই দক্ষিণবঙ্গবাসীর জন্য অনেক কিছু করেছেন। তাই জনগণের উচিত আরও পাঁচ বছরের জন্য শেখ হাসিনাকে বিজয়ী করা।

আমি আওয়ামী লীগের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য- ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর : নিজেকে আওয়ামী লীগের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য বলে দাবি করেছেন বিএনপি ছেড়ে সদ্য আওয়ামী লীগে যোগদানকারী সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও ঝালকাঠি-১ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীরউত্তম। নির্বাচনি জনসভায় শাহজাহান ওমর বলেন, ‘আমি আপনাদের দলের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য। আশা করি আপনারা আমাকে সর্বকনিষ্ঠ সদস্য হিসেবে গ্রহণ করবেন। আমি সর্বকনিষ্ঠ হলেও চেতনায়, জয় বাংলা স্লোগানের ক্ষেত্রে কিন্তু সর্বকনিষ্ঠ নই। অনেক পুরাতন।’

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি মিলিটারি ত্যাগ করে আমি কাশ্মীর হয়ে ভারতে আসি। সেখান থেকে ওসমানীর (জেনারেল এম এ জি ওসমানী) সঙ্গে দেখা করে, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে আমি বাংলাদেশে আসি। তারপর বরিশাল বিভাগে ৩৪টি থানায় ৩৪টি সংগঠন করি। ভয়াবহ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করি।

এ বীর মুক্তিযোদ্ধা বলেন, আমার সৌভাগ্য হয়েছিল এ দেশের জন্য তিনবার গুলিবিদ্ধ হওয়া। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু এই বিভাগের মধ্য থেকে একমাত্র আমাকে বীরউত্তম খেতাব প্রদান করেছিলেন। আমি বঙ্গবন্ধুর ডাকে সেদিন যুদ্ধ করেছি। আমার চেতনা ছিল জয় বাংলা। জয় বাংলা বলে চাষ করতাম, শত্রুবাহিনীর ওপর অ্যাটাক (আক্রমণ) করতাম। কাজেই আমার চেতনা নতুন কিছু না।

শাহজাহান ওমর বলেন, ‘ভাই ও বোনেরা, আপনাদের জানাতে চাই, যেটা আপনারা অনেকে ভুলে গেছেন। বঙ্গবন্ধু শুধু দেশ স্বাধীন করেন নাই, বঙ্গবন্ধুর মতো দৃঢ় নেতৃত্ব না থাকলে এ দেশ থেকে মার্চ মাসে মিত্রবাহিনী যেত কি না, আমার সন্দেহ। ইতিহাস বলে, না। ৪৫ সালে (১৯৪৫) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়। এখনো জাপানে আমেরিকান আর্মি, কোরিয়ায় আমেরিকান আর্মি, জার্মানিতে আমেরিকান আর্মি, কিউবাতে আমেরিকান আর্মি বহাল রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর এটা বিশেষ অবদান, তাই স্বাধীনতা ছাড়া আর কোনো কারণে যদি বঙ্গবন্ধুকে আমাদের সম্মান করতে হয় তাহলে বলব বঙ্গবন্ধু এই জাতিকে একটি নিরলস, নির্ভেজাল জাতি উপহার দিয়েছেন।’

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর