নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে কেটলি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাহান ভূঁইয়ার নির্বাচনি ক্যাম্প সন্ত্রাসী লেলিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান ও কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে। গত সোমবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নাওড়া গ্রামে সাবেক ইউপি সদস্য মোশাররফ হোসেনের বাড়িতে অবস্থিত ভোট ক্যাম্পে এ ঘটনা ঘটে। আগুন ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের কয়েকটি বাড়িতেও। একই রাতে ভুলতা ইউনিয়নের পোনাবো এলাকায় শাহজাহান ভূঁইয়ার আরেকটি ক্যাম্পে অগ্নিসংযোগ ও গুতুলিয়া এলাকায় নৌকার প্রার্থী গাজীর পক্ষে ভোট চাইতে গিয়ে লুটপাটের খবর পাওয়া গেছে। ভুলতা ইউনিয়নের পোনাবো এলাকার কেটলি সমর্থক মো. শাহীন জানান, সোমবার দিবাগত রাতে কেটলি প্রতীকের একটি ক্যাম্প দুর্বৃত্তরা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। গুতুলিয়া এলাকার কাশেম জানান, সোমবার দিবাগত রাতে মুখোশধারী একদল দুর্বৃত্ত কেটলি সমর্থক আবুল সরকারের বাড়িতে হানা দেয়। এ সময় আবুল সরকার বাড়িতে না থাকায় তার স্ত্রীকে হুমকি-ধমকি দিয়ে গাজীকে ভোট দেওয়ার জন্য শাসিয়ে যায়। যাওয়ার সময় ঘরে থাকা ৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও তিন লক্ষাধিক টাকা নিয়ে যায়। নাওড়ার ভোট ক্যাম্পে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে অভিযোগ নিয়ে গতকাল রাত ৮টায় এ রিপোর্ট লেখার সময় রূপগঞ্জ থানায় অবস্থান করছিলেন কায়েতপাড়া ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য মোশারফ হোসেনসহ কেটলি প্রতীকের সমর্থকরা। মোশারফ হোসেন বলেন, ঘটনার দিন রাতেই আমরা পুলিশকে জানিয়েছিলাম। পুলিশ ব্যবস্থা না নেওয়ায় অভিযোগ নিয়ে এসেছি। তিনি বলেন, সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে আমরা ঘুমিয়ে পড়ি। দেড়টার দিকে নারীদের চিৎকার শুনে ঘুম থেকে জেগে দেখি পুরো এলাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। সবাইকে নিয়ে আগুন নেভাতে ছুটে যাই। তবুও শাহজাহান ভূঁইয়ার ভোট ক্যাম্প পুরোপুরি পুড়ে গেছে। আশপাশের বাড়িঘরগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি বলেন, এর আগে গত ২৯ ডিসেম্বর রফিকুল ইসলামের সন্ত্রাসীরা ক্যাম্পটি স্থাপনে বাধা দেয়। বাধা উপেক্ষা করে ক্যাম্প স্থাপন করায় ওইদিন রাতেই তারা জোরপূর্বক ১৯টি চেয়ার নিয়ে যায় এবং গোলাম দস্তগীর গাজীর বিরুদ্ধে ভোট করলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। সোমবার রাতে তারা ক্যাম্পটি পুড়িয়ে দিয়েছে। এ বিষয়ে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মোশারফ হোসেনের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান নীরব বলেন, আগুন দিয়ে যাওয়ার সময় নাওড়া গ্রামের ওমর ফারুক, মোহাম্মদ শাহীন, রুবেল হোসেন, কানা মোজাম্মেল, জাহিদুল ইসলাম, আলাউদ্দিন, লিটন হোসেন, রফিকুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, অপু, আউয়াল, জসীম উদ্দীন জসু, তরিকুল ইসলাম, এমদাদুল দুলাল এবং মোহাম্মদ রাকিবকে আমি দেখতে পেয়েছি। তাদের হাতে অস্ত্র ছিল। আমার চিৎকার শুনে অনেকে বের হলে তারা দ্রুত সটকে পড়ে। বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার ও রূপগঞ্জ থানার ওসিকে জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন।
নীরব বলেন, আমরা রংধনুর চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের ভয়ে গেল ছয় মাস ধরে পালিয়ে ছিলাম। নির্বাচন উপলক্ষে গত ২৯ ডিসেম্বর এলাকায় আসি। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী শাজাহান ভূঁইয়ার পক্ষে প্রচারণা শুরু করি। এটা সহ্য করতে না পেরে রফিকের সন্ত্রাসীরা আমাদের বাড়িতে আগুন দিয়েছে। এ ছাড়া আগামী ৭ জানুয়ারি ভোটের পর কেটলির পক্ষে কাজ করা সবাইকে এলাকাছাড়া করবে বলে প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছে রফিকের লোকজন।