বুধবার, ৩ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

পটিয়ায় সামশুর রাহু থেকে মুক্তি চায় সাধারণ মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে সামশুল হক চৌধুরী সামশুর রাহু থেকে মুক্তি চায় সাধারণ মানুষ। বিগত সময়ে এ আসন থেকে সামশু এমপি নির্বাচিত হয়েই গঠন করেন ‘সামশু লীগ’। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসা, ভূমি দখল-বেদখলের নেতৃত্বে রয়েছেন ‘অন্ধকার এ রাজ্যের রাজপুত্র’ খ্যাত সামশুপুত্র নাজমুল হক চৌধুরী শারুন। তার সারথী হিসেবে রয়েছেন সামশুর দুই ভাই নবাব, মহব্বত এবং বোন রেখা। ১৫ বছর ধরে সামশুর রাহুগ্রাস করে খেয়েছে পটিয়াকে। বারবার বিতর্কে জড়িয়ে পড়া সামশু দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাই বঞ্চিত হয়েছেন দলীয় মনোনয়ন থেকে। এরই মধ্যে তার দুঃশাসন থেকে মুক্তি পেতে সাধারণ লোকজন মাঠে নেমেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীর পক্ষে। পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম শামসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, সামশুর বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। চাঁদাবাজি, টেন্ডার, সংখ্যালঘুদের জায়গা দখলসহ সবই করেছে সামশু ও তার পরিবারের লোকজন। তার ইন্ধনে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার ও মিথ্যা মামলা এ এলাকার জন্য নিত্য ঘটনা। জানা যায়, বিগত ১৫ বছরে নিজের অবৈধ আয়ের পথ একে একে প্রসারিত করেছেন সামশু ও তার পরিবারের লোকজন। সরকারি প্রকল্পের নয়ছয়ে তারা ছিল সিদ্ধহস্ত। বিশেষ করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুই প্রকল্পের কয়েক হাজার কোটি টাকার খাল খনন, বেড়িবাঁধ নির্মাণ, পটিয়া বাইপাস সড়ক, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কের পটিয়া অংশের সম্প্রসারণ, চট্টগ্রাম ওয়াসার ওয়াটার রিজার্ভার, কৈয়গ্রাম-উজিরপুর বঙ্গবন্ধু সড়ক প্রকল্পসহ অসংখ্য প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণের টাকা আত্মসাৎ করে পথে বসিয়েছে পটিয়ার হাজার হাজার মানুষকে। মানুষের জমির মাটি কেটে বিক্রির টাকা নিজেদের পকেটে ঢুকিয়েছে। এসবের ক্ষতিপূরণ চাইতে গিয়ে তার লাঠিয়াল বাহিনীর হাতে লাঞ্ছিত হতে হয়েছে।

 সামশুপুত্র নাজমুল হক চৌধুরী শারুনের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। এলাকায় টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ, মাদক ব্যবসা, বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প থেকে কমিশন গ্রহণ, কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ এবং অন্যান্য অপরাধী চক্রকে লালন-পালনের অভিযোগ রয়েছে শারুনের বিরুদ্ধে। পটিয়ার ইন্দ্রপুল, মেলিটারিপুল এবং ভেল্লাপাড়া এলাকায় বড় বড় তিনটি বালুমহালের নিয়ন্ত্রণেও রয়েছেন শারুন। হুইপের ভাই ফজলুল হক চৌধুরী মহব্বত ও নবাবের বিরুদ্ধেও নেই অভিযোগের শেষ। বিরোধপূর্ণ জায়গা-জমি দখল-বেখল, সালিশ-বিচারের নামে অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ, থানা ও উপজেলা প্রশাসনে অবৈধ প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

আচরণবিধি ভঙ্গ করে থানায় সামশুর ব্যানার : চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে বিতর্কিত স্বতন্ত্র প্রার্থী সামশুল হক চৌধুরী এবার নির্বাচনি আচরণবিধি ভঙ্গ করে থানা কম্পাউন্ডে টাঙিয়েছেন নির্বাচনি ব্যানার। সরকারি স্থাপনায় নির্বাচনি ব্যানার টাঙানোর খবর চাউর হলে পটিয়াজুড়ে শুরু হয় তোলপাড়। গতকাল বিকালে তা সরিয়ে ফেলা হয়। পটিয়া থানার ওসি জসিম উদ্দিন বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী সামশুল হক চৌধুরীর লোকজন থানার বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে নির্বাচনি ব্যানার লাগায়। কিন্তু নির্বাচনের দায়িত্ব থাকা রিটার্নিং কর্মকর্তা অভিযান চালানোর আগে তা সরিয়ে ফেলা হয়। জানা যায়, পটিয়া থানা পুলিশের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার অভিযোগ রয়েছে। এনিয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী নির্বাচন কমিশনে অভিযোগও করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে থানার ওসি নেজাম উদ্দিনসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে বদলি করে নির্বাচন কমিশন।

সর্বশেষ খবর