শনিবার, ৬ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা
সংসদ নির্বাচন

চমক না নৌকার জয়রথ

সিলেট

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

চমক না নৌকার জয়রথ

রাত পোহালেই ভোটযুদ্ধ। এবার নির্বাচনে সিলেটের ৬টি আসনের মধ্যে ৪টিতে নৌকার সঙ্গে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছেন প্রতিদ্বন্দ্বীরা। কোথাও নৌকার জয়ে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন স্বতন্ত্রের ব্যানারে প্রার্থী হওয়া নিজ দলের নেতারা। আবার কোথাও তৃণমূল বিএনপি ও ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের প্রার্থীরা। অনেকেই মনে করছেন জেলার ৪টি আসনে এবার চমক দেখাতে পারেন নতুন প্রার্থীরা। আবার কেউ মনে করছেন, ৭ জানুয়ারি দিন শেষে নৌকার জয়রথই ছুটবে। সিলেট জেলার ৬টি সংসদীয় আসনের মধ্যে সিলেট-১ ও ৪ আসনে প্রার্থী হয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদ। শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় তাদের জয় কেবল সময়ের ব্যাপার মাত্র। অন্যদিকে বাকি ৪টি আসনের কোথাও দ্বিমুখী আবার কোথাও ত্রিমুখী লড়াইয়ের আভাস পাচ্ছেন ভোটাররা। সিলেট-২ আসনে ১০ বছর পর নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা। এর আগে গত দুই নির্বাচনে আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নৌকার প্রার্থী হয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী। আসনটিতে বর্তমান সংসদ সদস্য গণফোরামের মোকাব্বির খান ও সাবেক সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির ইয়াহিয়া চৌধুরীও প্রার্থী হয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমানের মনোনয়ন বাতিল হওয়ায় শফিকুর রহমান চৌধুরীর জয় অনেকটা সহজ ছিল। কিন্তু শেষ সময়ে উচ্চ আদালতের রায়ে মুহিবুর রহমান প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ায় নৌকার সঙ্গে মুহিবের প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস মিলছে। সিলেট-৩ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আতিকুর রহমান আতিক মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে ছিটকে পড়ায় বর্তমান সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিবের সঙ্গে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে স্বতন্ত্র প্রার্থী বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন-বিএমএ-এর মহাসচিব ও আওয়ামী  লীগ নেতা ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলালের। আসনটির ভোটাররা মনে করছেন, মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর মৃত্যুর পর উপনির্বাচনে অনেকটা সহজে নির্বাচনি বৈতরণী পার হলেও এবার দুলালের ট্রাকের কাছে কঠিন পরীক্ষায় পড়েছে হাবিবের নৌকা। সিলেট-৫ আসনে ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মাসুক উদ্দিন আহমদ, স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ড. আহমদ আল কবীর (ট্রাক প্রতীক) ও ফুলতলী পীরের ছেলে আঞ্জুমানে আল ইসলাহর সভাপতি মাওলানা হুছাম উদ্দীন চৌধুরী (কেটলি প্রতীক)। দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী কঠিন করে তুলেছেন নৌকার জয়। এ আসনে তিন প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সিলেট-৫ এর মতো একই অবস্থা সিলেট-৬ আসনে। আসনটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী, কানাডা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সরওয়ার হোসেন ও তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপারসন শমসের মবিনকে শক্তভাবে মোকাবিলা করতে হচ্ছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও চারবারের সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদকে। শুরুতে শমসের মবিন চৌধুরী অনেকটা মাঠছাড়া থাকলেও শেষের দিকে এসে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছেন। আওয়ামী লীগের একাংশের নেতা-কর্মী তার পক্ষে মাঠে নামায় মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চলে এসেছেন তিনি। এ ছাড়া শুরু থেকে নৌকাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সরওয়ার হোসেন। তার সঙ্গে আওয়ামী লীগের বড় একটি অংশ রয়েছে ভোটের মাঠে। সব মিলিয়ে এ আসনে টানা চতুর্থবারের মতো নৌকা বিজয়ী হবে, না পরিবর্তন হচ্ছে- তা নিশ্চিত হতে ভোটারদের অপেক্ষা করতে হবে শেষ ব্যালট বাক্সের ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত।

 

 

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর