রবিবার, ৭ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

ভোটার উপস্থিতি নিয়ে চ্যালেঞ্জে আওয়ামী লীগ, টেনশনে বিএনপি

খুলনায় প্রস্তুত ৭৯৩ ভোট কেন্দ্র

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

ভোট গ্রহণের জন্য প্রস্তুত খুলনার ছয়টি সংসদীয় আসন। এবার কোন দল সরকার গঠন করছে, কারা হচ্ছেন খুলনার জনপ্রতিনিধি- এই ভাবনা ছাপিয়ে আলোচনায় রয়েছে ভোটার উপস্থিতি। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রেখে ভোটার উপস্থিতিকে চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। আর ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়ে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে টেনশনে রয়েছে বিএনপি।

খুলনা নগর বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু ফেসবুক স্টাটাসে ‘৭ জানুয়ারি সারা দিন পরিবারকে সময় দিন’ লিখে নেতা-কর্মীদের ভোট প্রদানে নিরুৎসাহিত করছেন। একই ভাবে খুলনা নগর ও জেলা বিএনপি নেতারা ভোট বর্জনের দাবিতে লিফলেট বিতরণ করেছেন। মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে ভোট প্রদানে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যদিকে নির্বাচনে খুলনার আসনগুলোতে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ ভোটার উপস্থিতির টার্গেট করে পরিকল্পনা সাজিয়েছে আওয়ামী লীগ। নগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, খুলনার ৭৯৩টি কেন্দ্রের প্রতিটিতে আওয়ামী লীগের দুটি কমিটি করা হয়েছে। একটা পুরুষের ও আরেকটা মহিলা কমিটি। মূল ওয়ার্ড কমিটি মনিটরিংয়ের দায়িত্বে থাকবে। এতে প্রায় দুই লাখ কর্মী বাড়ি বাড়ি টার্গেট করে ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে আনতে কাজ করবেন।

এ ছাড়া সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধাভোগী দারিদ্র্য বিমোচন সমিতির প্রায় ৯৩ হাজার মহিলা সদস্য রয়েছেন। তাদের স্বামী-সন্তানসহ নিজের ভোট নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, ২০২৩ সালের ১২ জুন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৪৮ শতাংশের মতো ভোট পড়েছিল। তখন অভিজাত এলাকার অনেকে ভোট প্রদান করেননি। এই বিষয়টি মাথায় নিয়ে বাড়ি বাড়ি ভোটারদের টার্গেট করা হয়েছে। কেন্দ্রভিত্তিক কর্মীরা ভোটের দিন তাদের কেন্দ্রে আসতে উদ্বুদ্ধ করবেন।

প্রস্তুত ৭৯৩টি ভোট কেন্দ্র : খুলনায় সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট আয়োজনে ৭৯৩টি ভোট কেন্দ্র ও ৪ হাজার ৭২০টি ভোটকক্ষ প্রস্তুত করা হয়েছে। গতকাল দুপুরের পর থেকে ভোটের সরঞ্জামাদি ব্যালটবাক্স নিয়ে কেন্দ্রে পৌঁছান প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসাররা। খুলনার ছয়টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সংখ্যা ৩৯ জন। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা ১৯ লাখ ৯৯ হাজার ৮৮২ জন।

খুলনা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন বলেন, এরই মধ্যে নির্বাচনের সব দাফতরিক প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। এখন শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণের অপেক্ষায় রয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্তরা।

তিন স্তরের নিরাপত্তা ভোট কেন্দ্রে : খুলনা জেলায় ৭৯৩টি কেন্দ্রের মধ্যে পাঁচ শতাধিক কেন্দ্রকে গুরুত্বপূর্ণ বা ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করেছে পুলিশ। ভৌগোলিক অবস্থান বা এর আগে সেখানে কোনো ঘটনা ঘটে থাকলে তাকে গুরুত্বপূর্ণ বলা হচ্ছে। সাধারণ কেন্দ্রের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে একজন করে অস্ত্রধারী পুলিশ বেশি থাকবে।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক বলেন, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠানের জন্য পুলিশ ব্যাপক নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সব রকম সন্ত্রাস নাশকতা এড়াতে তিন স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নগরীর ৩১০টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ২২৬টি গুরুত্বপূর্ণ ও ৮৪টি সাধারণ কেন্দ্র হিসেবে তালিকা করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা। নির্বাচনের পূর্বে ও পরবর্তীতে মহানগরীতে আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব পালন করবেন ৩ হাজার পুলিশ সদস্য। এ ছাড়া ভোট কেন্দ্রে পর্যাপ্ত সংখ্যক সশস্ত্র পুলিশ, আনসারের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিজিবি ও র‌্যাব মোতায়েন থাকবে।

 

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর