মঙ্গলবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

অভিজ্ঞতা ও কৌশলে হার নতুনদের

সিলেট

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

অভিজ্ঞতা ও কৌশলে হার নতুনদের

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুরনোদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভোটের মাঠ বেশ জমিয়ে রেখেছিলেন নতুন প্রার্থীরা। ভোটের হিসাবেও নতুনরা চমক দেখাবেন এমনটা ধারণা করেছিলেন ভোটাররা। নতুনদের দাপটে ভোটের মাঠে বেশ পেরেশানিতে পড়েছিলেন পুরনারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নতুনদের তরী তীরে ভেড়েনি। নৌকার পুরনো মাঝিদের অভিজ্ঞতা ও কৌশলের কাছে হার মানতে হয়েছে তাদের। সিলেট জেলার ছয়টি আসনের মধ্যে পাঁচটিতেই বিজয়ী হয়েছেন বর্তমান ও সাবেক সংসদ সদস্যরা। আর একটিতে বিজয়ী হয়েছেন নতুন মুখ। ওই আসনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সবাই প্রথমবারের মতো প্রার্থী হয়েছিলেন। সিলেট জেলার ছয়টি সংসদীয় আসনের দুটিতে শুরু থেকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল না। শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় সিলেট-১ আসনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন ও সিলেট-৪ আসনে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদের জয়লাভ ছিল কেবল সময়ের ব্যাপার মাত্র। বাকি চারটি আসনে পুরনো প্রার্থীদের সঙ্গে নতুনদের তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্ভাবনা ছিল। অনেক ক্ষেত্রে পুরনোদের পেছনে ফেলে এগিয়ে ছিলেন নতুনরা। সিলেট-২ আসনে সাতজন প্রার্থীর মধ্যে তিনজনই ছিলেন নতুন। আর বাকি চারজন এর আগেও সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। এর মধ্যে বর্তমান ও সাবেক তিন সংসদ সদস্য ও একজন পৌর মেয়র ছিলেন প্রার্থী। নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হন সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী। তার সঙ্গে ধরাশায়ী হন বর্তমান সংসদ সদস্য গণফোরামের মোকাব্বির খান ও সাবেক সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির ইয়াহিয়া চৌধুরী। সাবেক ও বর্তমান এই দুই সংসদ সদস্যের মনোনয়ন বাজেয়াপ্ত হয়েছে। সিলেট-৩ আসনে প্রথমবারের মতো প্রার্থী হয়ে আলোচনায় চলে আসেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন-বিএমএর কেন্দ্রীয় মহাসচিব ও আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্য ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী। বর্তমান সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিবকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মাঠে নেমে ডা. ইহতেশাম ভোটের মাঠ জমিয়ে তোলেন। তার পক্ষে মাঠে নামেন আওয়ামী লীগের একাংশ। নির্বাচনে ইহতেশামুলের ট্রাকের কাছে হাবিবের নৌকার ধরাশায়ী হওয়ার আশঙ্কা প্রবল হয়ে ওঠে। কিন্তু ভোটের দিন হাবিবের কৌশলের কাছে বন্দি হয়ে পড়েন ডা. ইহতেশাম। সিলেট-৫ আসনের সাতজন প্রার্থীর মধ্যে ছয়জনই ছিলেন নতুন। তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী কুতুব উদ্দিন সিকদার এর আগে একই আসন থেকে জাতীয় পার্টির প্রতীক নিয়ে প্রার্থী হয়ে পরাজিত হয়েছিলেন। এবারও তিনি জামানত হারিয়েছেন। এ আসনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন- আওয়ামী লীগের মাসুক উদ্দিন আহমদ, স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ড. আহমদ আল কবীর এবং অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী ফুলতলী পীরের ছেলে মাওলানা হুছাম উদ্দিন চৌধুরী। তিন প্রার্থীই প্রথমবারের মতো প্রার্থী হন। সিলেট-৬ আসনে প্রথমবারের মতো প্রার্থী হয়ে জেলাজুড়ে আলোচনায় ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও কানাডা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সরওয়ার হোসেন। আওয়ামী লীগের বড় একটি অংশ তার পক্ষে প্রকাশ্যে মাঠে নামে। তার জনসমর্থন দেখে অনেকে আগেভাগে ধরে নিয়েছিলেন এবার সরওয়ারের ঈগল প্রতীকই বাজিমাত করবে। কিন্তু ভোটের দিন কাক্সিক্ষত ভোটারদের কেন্দ্রে টানতে পারেননি তিনি। ভোটের মাঠের হিসেবে অনেক পিছিয়ে থাকা আওয়ামী লীগের নুরুল ইসলাম নাহিদ নিজের অভিজ্ঞতা ও কৌশল কাজে লাগিয়ে বাজিমাত করেন।

 

 

সর্বশেষ খবর