মঙ্গলবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

ক্ষোভ- বিস্ফোরণে জয়ী স্বতন্ত্ররা

চট্টগ্রাম

আজহার মাহমুদ, চট্টগ্রাম

ক্ষোভ- বিস্ফোরণে জয়ী স্বতন্ত্ররা

চট্টগ্রামের ১৬ আসনের মধ্যে পাঁচটিতে চমক দেখিয়েছেন আওয়ামী লীগের অপেক্ষাকৃত তরুণ প্রার্থীরা। এর মধ্যে একজন প্রথমবারের মতো নারী হিসেবে সংসদে যাচ্ছেন। তিনটি আসনে তৃণমূল আওয়ামী লীগের বিস্ফোরণের ফলে আওয়ামী ঘরানার স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কাছে পরাজিত হয়েছেন নৌকার মাঝিরা। একই কারণে আরেকটি আসনে এসেছে আওয়ামী লীগের নতুন মুখ। ১৬টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে ৭টিতে এসেছে নতুন মুখ। বাকি ৮টি আসনে আওয়ামী লীগের পুরনোরা এবং একটিতে জাতীয় পার্টির এমপি পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন। চট্টগ্রাম-১ আসনে প্রথমবারের মতো দলীয় মনোনয়ন নিয়ে চমক দেখিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের ছেলে অপেক্ষাকৃত তরুণ আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুব উর রহমান রুহেল। চট্টগ্রাম-২ আসনে প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা রফিকুল আনোয়ারের কন্যা অপেক্ষাকৃত তরুণ খাদিজাতুল আনোয়ার স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু তৈয়বকে ৬৩ হাজারের বেশি ভোটে পরাজিত করে চট্টগ্রাম থেকে প্রথম কোনো নারী হিসেবে সংসদে যাওয়ার টিকিট জিতেছেন। চট্টগ্রাম-৪ আসনে সাবেক এমপি আবুল কাশেম মাস্টারের ছেলে এস এম আল মামুন প্রায় ১ লাখ ৩৮ হাজার ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। চট্টগ্রাম-৯ আসনে মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল প্রায় ১ লাখ ২৯ হাজার ভোটে লাঙ্গল প্রতীকের সানজীদ রশীদ চৌধুরীকে পরাজিত করেছেন। মাত্র ছয় মাস আগে উপনির্বাচনে প্রথমবার এমপি হওয়া অপেক্ষাকৃত তরুণ মহিউদ্দিন বাচ্চুকে লড়তে হয়েছে হেভিওয়েট স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক মেয়র মনজুর আলমের সঙ্গে। তবে শেষ পর্যন্ত বাচ্চু প্রায় ২০ হাজার ভোটে মনজুকে পরাজিত করে চমক দেখিয়েছেন। এদিকে চট্টগ্রাম-১৫ ও ১৬ আসনের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের ক্ষোভের বিস্ফোরণে বিপুল ভোটে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের হারিয়েছেন ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। এর মধ্যে চট্টগ্রাম-১৫ আসনের নৌকার প্রার্থী আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীকে ৪৫ হাজারের বেশি ভোটে হারিয়েছেন ঈগল প্রতীকের আবদুল মোতালেব। চট্টগ্রাম-১৬ আসনে আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় নৌকার প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমানের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে। এই আসনে প্রথমবারের মতো নির্বাচনে এসে ঈগল প্রতীকের মুজিবুর রহমান ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল্লাহ কবিরকে ২৫ হাজার ভোটে পরাজিত করেছেন। অন্যদিকে চট্টগ্রাম-৮ আসনে নির্বাচনি হিসাব-নিকাশের কারণে জাতীয় পার্টির সোলায়মান আলম শেঠকে আসনটি ছেড়ে দেওয়া হলেও তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আসেননি। তৃণমূল আওয়ামী লীগের বেশিরভাগ অংশ ছিল আওয়ামী ঘরানার দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীর সঙ্গে। এই আসনে কেটলি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুচ ছালাম প্রায় ৩৮ হাজার ভোটে ফুলকপি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয় কুমার চৌধুরীকে হারিয়েছেন।

এ আসনের চেয়েও তৃণমূলের ক্ষোভের বিস্ফোরণ বেশি হয়েছে চট্টগ্রাম-১২ আসনে। এখানে দীর্ঘ সময় ধরে সামশুল হক চৌধুরী ও তার অনুসারীদের দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, অত্যাচার, নির্যাতনের জবাবে নৌকার নয়া কান্ডারি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করেছেন ভোটাররা। তিনি ঈগল প্রতীকের সামশুলকে হারিয়েছেন ৮৫ হাজার ভোটে।

এ ছাড়াও চট্টগ্রাম-৩, ৬, ৭, ১১, ১৩, ১৪ আসনে আওয়ামী লীগের আগের এমপিরা যথাক্রমে মাহফুজুর রহমান মিতা, এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, ড. হাছান মাহমুদ, এম এ লতিফ, সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও নজরুল ইসলাম পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন। এর বাইরে চট্টগ্রাম-৫ আসনে জাতীয় পার্টির এমপি আনিসুল ইসলাম মাহমুদ আবারও নির্বাচিত হয়েছেন।

সর্বশেষ খবর