বৃহস্পতিবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

কক্সবাজারে গেল পর্যটক এক্সপ্রেস

মেরিন ড্রাইভে চালু ছাদখোলা বাস

কক্সবাজার প্রতিনিধি

যাত্রীদের নিয়ে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বিরতিহীন আন্তনগর ট্রেন ‘পর্যটক এক্সপ্রেস’ কক্সবাজারে পৌঁছেছে। গতকাল বিকাল ৩টা ২৮ মিনিটে ট্রেনটি কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছায়। এই নতুন ট্রেনের প্রথম যাত্রায় ঢাকা থেকে কক্সবাজার পৌঁছেছে ৭৮৫ জন যাত্রী। কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার গোলাম রাব্বানী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ৭৮৫ যাত্রী নিয়ে বিকাল ৩টা ২৮ মিনিটে পৌঁছায় পর্যটক এক্সপ্রেস। এই ট্রেনের মোট আসন ৭৮৫টি। এই ট্রেনের ৭ দিনের আগাম টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা থেকে কক্সবাজারের নন-এসি শ্রেণির ‘শোভন চেয়ার’ আসনের ভাড়া ৬৯৫ টাকা এবং এসি শ্রেণির ‘স্নিগ্ধা’ আসনের ভ্যাটসহ ভাড়া ১ হাজার ৩২৫ টাকা। বিমানবন্দর স্টেশন থেকেও একই ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম স্টেশনের নন-এসি শ্রেণির ‘শোভন চেয়ার’ আসনের ভাড়া ৪৫০ টাকা এবং এসি শ্রেণির ‘স্নিগ্ধা’ আসনের ভ্যাটসহ ভাড়া ৮৫৫ টাকা। বিমানবন্দর স্টেশন থেকেও একই ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার স্টেশন পর্যন্ত নন-এসি শ্রেণির ‘শোভন চেয়ার’ আসনের ভাড়া ২৫০ টাকা এবং এসি শ্রেণির ‘স্নিগ্ধা’ আসনের ভ্যাটসহ ভাড়া ৪৭০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। কক্সবাজার থেকে ফিরতি পথেও একই ভাড়ার হার কার্যকর করা হয়েছে। পর্যটক এক্সপ্রেসের ঢাকাগামী ট্রেনের নম্বর ৮১৫ এবং কক্সবাজারগামী ট্রেনের নম্বর ৮১৬। ট্রেনের রেকে রয়েছে মোট ১৬টি কোচ। মোট আসন ৭৮৫টি। কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশনকে ট্রেনের রেক বেইজ ধরা হয়েছে। সেখানেই ট্রেনের ওয়াটারিং, সাভির্সিং ও ক্লিনিং করা হবে। ট্রেনটির সাপ্তাহিক বন্ধ রবিবার।

সময়সূচি : কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশন থেকে ৮১৫ নম্বর ট্রেনটি রাত ৮টায় ছেড়ে চট্টগ্রাম স্টেশনে পৌঁছাবে রাত ১০টা ৫০ মিনিটে। ২৫ মিনিট বিরতি দিয়ে ট্রেনটি চট্টগ্রাম স্টেশন ছাড়বে রাত ১১টা ১৫ মিনিটে। এরপর বিরতিহীনভাবে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছাবে ভোর সাড়ে ৪টায়। অন্যদিকে ৮১৬ নম্বর ট্রেনটি ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন থেকে ভোর ৬টা ১৫ মিনিটে ছেড়ে বিমানবন্দর স্টেশনে পৌঁছাবে ভোর ৬টা ৩৮ মিনিটে। সেখানে ৫ মিনিট বিরতি দিয়ে ভোর ৬টা ৪৩ মিনিটে বিমানবন্দর স্টেশন ছাড়বে। এরপর বিরতিহীনভাবে চট্টগ্রাম পৌঁছাবে বেলা ১১টা ২০ মিনিটে। সেখানে ২০ মিনিট বিরতি দিয়ে বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে চট্টগ্রাম স্টেশন ছাড়বে। কক্সবাজার স্টেশনে পৌঁছাবে বিকাল ৩টায়। এক্ষেত্রে ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাত্রাপথে ট্রেনে মোট সময় লাগবে ৯ ঘণ্টা ১৫ মিনিট। কক্সবাজার থেকে ঢাকা যাত্রাপথে ট্রেনে মোট সময় লাগবে ৮ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। এদিকে, পর্যটকদের জন্যে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কে প্রথমবারের মতো যাত্রা শুরু হয়েছে ছাদখোলা ট্যুরিস্ট বাসের। এই বাসে চড়ে ভ্রমণপিপাসুরা উপভোগ করবেন পাহাড়, সাগর ও প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য। গতকাল সকাল ১০টায় লাবণী পয়েন্ট থেকে শুরু হয় ছাদখোলা ট্যুরিস্ট বাসের যাত্রা। যা গিয়ে থামে রেজুখাল পয়েন্টে। এরপর বিরতি দিয়ে আবার শুরু হয় যাত্রা। মেরিন ড্রাইভের বেশ কয়েকটি পয়েন্ট ভ্রমণের পর থামবে টেকনাফের সাবরাংয়ে। এরপর পুরো দিন মেরিন ড্রাইভে কাটিয়ে সন্ধ্যায় আবারও ছাদখোলা ট্যুরিস্ট বাসে চড়ে ফিরবেন ভ্রমণপিপাসুরা।

ভ্রমণপিপাসুরা বলছেন, ছাদখোলা ট্যুরিস্ট বাস কক্সবাজার ভ্রমণকে অন্যমাত্রায় নিয়ে যাবে। সারি সারি ঝাউগাছ, মাঝে দীর্ঘ ৮০ কিলোমিটার মেরিন ড্রাইভ।

যার দুই পাশে রয়েছে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য। যা মুগ্ধ করে ভ্রমণপিপাসুদের। যার কারণে প্রতিদিনই এই মেরিন ড্রাইভে ভ্রমণে যাবেন হাজারো ভ্রমণপিপাসু। ছাদখোলা বাসে এক দিনের প্যাকেজে জনপ্রতি খরচ হবে আপার ডেকে ৭০০ টাকা আর লোয়ার ডেকে ৬০০ টাকা। যার টিকিট মিলবে লাবণী, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টে।

পর্যটক মিনার চৌধুরী বলেন, অনেক আনন্দের এই যাত্রা। ছাদখোলা বাসে চড়ে একদিকে সাগরের গর্জন অন্যদিকে পাহাড়ে পাখির কলরব মুগ্ধ করছে। প্রথমবার ছাদখোলা বাসে চড়ে দরিয়ানগর, হিমছড়ি, ইনানী, পাতুয়ারটেক ও সাবরাং ভ্রমণ করছি।

আরেক পর্যটক দিদারুল আলম বলেন, ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে কক্সবাজার ভ্রমণে এসে ছাদখোলা ট্যুরিস্ট বাসে চড়ে কক্সবাজারের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করছি। প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই দীর্ঘ ৮০ কিলোমিটার মেরিন ড্রাইভে একটি নতুন যাত্রা করে দেওয়ার জন্য। বেশ ভালো উপভোগ করছি।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, যাত্রী চাহিদা বাড়লে আরও বাড়ানো হবে ছাদখোলা ট্যুরিস্ট বাস। প্রথমদিকে দুটি বাস দিয়ে যাত্রা শুরু হলো। আশা করি, আরও দুটি ট্যুরিস্ট বাস খুব শিগগিরই যুক্ত হবে। এই ছাদখোলা ট্যুরিস্ট বাসের যাত্রার মাধ্যমে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।

সর্বশেষ খবর